ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্ব ভালবাসা দিবস (Valentine day)- পর্ব 2

5
5016

পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩

লেখক: আ.স.ম শোয়াইব আহমাদ (পিএইচ.ডি) | সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

ভালবাসা দিবস কি ও এর ক্ষতিকর প্রভাব

বিশ্ব ভালবাসা দিবস কি: এক নোংরা ও জঘন্য ইতিহাসের স্মৃতিচারণের নাম বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ ইতিহাসটির বয়স সতের শত সাঁইত্রিশ বছর হলেও ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ নামে এর চর্চা শুরু হয় সাম্প্রতিক কালেই। দুই শত সত্তর সালের চৌদ্দই ফেব্রুয়ারির কথা। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন ক্লডিয়াস। সে সময় ভ্যালেন্টাইন নামে একজন সাধু, তরুণ প্রেমিকদেরকে গোপন পরিণয়-মন্ত্রে দীক্ষা দিত। এ অপরাধে সম্রাট ক্লডিয়াস সাধু ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করেন। তার এ ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এ দিনটির নাম করণ করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ যা আজকের ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’।

বাংলাদেশে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয় ১৯৯৩ইং সালে। কিছু ব্যবসায়ীর মদদে এটি প্রথম চালু হয়। অপরিণামদর্শী মিডিয়া কর্মীরা এর ব্যাপক কভারেজ দেয়। আর যায় কোথায় ! লুফে নেয় বাংলার তরুণ-তরুণীরা। এরপর থেকে ঈমানের ঘরে ভালবাসার পরিবর্তে ভুলের বাসা বেঁধে দেয়ার কাজটা যথারীতি চলছে। আর এর ঠিক পিছনেই মানব জাতির আজন্ম শত্রু শয়তান এইডস নামক মরণ-পেয়ালা হাতে নিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। মানুষ যখন বিশ্ব ভালবাসা দিবস সম্পর্কে জানত না, তখন পৃথিবীতে ভালবাসার অভাব ছিলনা। আজ পৃথিবীতে ভালবাসার বড় অভাব। তাই দিবস পালন করে ভালবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হয়! আর হবেই না কেন! অপবিত্রতা নোংরামি আর শঠতার মাঝে তো আর ভালবাসা নামক ভালো বস্তু থাকতে পারে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হৃদয় থেকে ভালবাসা উঠিয়ে নিয়েছেন।

বিশ্ব ভালবাসা দিবসকে চেনার জন্য আরও কিছু বাস্তব নমুনা পেশ করা দরকার। দিনটি যখন আসে তখন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো একেবারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপা-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে। শুধুই কি তাই ! অঙ্কন পটীয়সীরা উল্কি আঁকার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকে রাস্তার ধারে। তাদের সামনে তরুণীরা পিঠ, বাহু আর হস্তদ্বয় মেলে ধরে পছন্দের উল্কিটি এঁকে দেয়ার জন্য। তারপর রাত পর্যন্ত নীরবে-নিবৃতে প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে খোশ গল্প। এ হলো বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কর্মসূচি! বিশ্ব ভালবাসা দিবস না বলে বিশ্ব বেহায়াপনা দিবস বললে অন্তত নামকরণটি যথার্থ হতো।

বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালনের ক্ষতিকর কিছু দিক

১) ভালবাসা নামের এ শব্দটির সাথে এক চরিত্রহীন লম্পটের স্মৃতি জড়িয়ে যারা ভালবাসার জয়গান গেয়ে চলেছেন, পৃথিবীবাসীকে তারা সোনার পেয়ালায় করে নীল বিষ পান করিয়ে বেড়াচ্ছেন।

২) তরুণ-তরুণীদের সস্তা যৌন আবেগকে সুড়সুড়ি দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও ফাসাদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। অথচ আল্লাহ তা‘আলা ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘‘আর তারা তো পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়। আর আল্লাহ ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না।’’ [সূরা আল মায়িদাহ: ৬৪]

৩) নৈতিক অবক্ষয় দাবানলের মত ছড়িয়ে যাচ্ছে।

৪) নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি লাভ করছে। যারা ঈমানদারদের সমাজে এ ধরণের অশ্লীলতার বিস্তার ঘটায়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘‘যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি..।’’ [সূরা আন-নূর :১৯]

বস্তুত যে সমাজেই চরিত্র-হীনতার কাজ ব্যাপক, তথায় আল্লাহর নিকট থেকে কঠিন আযাব সমূহ ক্রমাগত অবতীর্ণ হওয়া অবধারিত,  আব্দুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন: ‘‘যে জনগোষ্ঠীর মধ্যে নির্লজ্জতা প্রকাশমান, পরে তারা তারই ব্যাপক প্রচারেরও ব্যবস্থা করে, যার অনিবার্য পরিণতি স্বরূপ মহামারি, সংক্রামক রোগ এবং ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ এত প্রকট হয়ে দেখা দিবে, যা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে কখনই দেখা যায় নি।’’ [ইবনু মাজাহ, কিতাবুল ফিতান, হাদিস নং-৪০০৯]

৫) তরুণ-তরুণীরা বিবাহ পূর্ব দৈহিক সম্পর্ক গড়তে কোন রকম কুণ্ঠাবোধ করছে না। অথচ তরুণ ইউসুফ আলাইহিস সালামকে যখন মিশরের এক রানী অভিসারে ডেকেছিল, তখন তিনি কারাবরণকেই এহেন অপকর্মের চেয়ে উত্তম জ্ঞান করেছিলেন। রোমান্টিক অথচ যুব-চরিত্রকে পবিত্র রাখার জন্য কী অতুলনীয় দৃষ্টান্ত! আল্লাহ জাল্লা শানুহু সূরা ইউসুফের ২৩-৩৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন এ ভাবে- ‘‘সে যে স্ত্রীলোকের ঘরে ছিল সে তার কাছ থেকে অসৎকাজ কামনা করল ও দরজাগুলো বন্ধ করে দিল এবং বলল, ‘আস।’ সে বলল, ‘আমি আল্লাহ্‌র আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তিনি আমার প্রভু; তিনি আমার থাকার সুন্দর ব্যবস্থা করেছেন। নিশ্চয়ই সীমালঙ্ঘনকারীরা সফলকাম হয় না। সে রমণী তো তার প্রতি আসক্ত হয়েছিল এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ত যদি না সে তার প্রতিপালকের নিদর্শন দেখতে পেত। আমি তাকে মন্দ-কাজ ও অশ্লীলতা হতে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম।

সে তো ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। ওরা উভয়ে দৌড়ে দরজার দিকে গেল এবং স্ত্রীলোকটি পিছন হতে তার জামা ছিঁড়ে ফেলল, তারা স্ত্রীলোকটির স্বামীকে দরজার কাছে পেল। স্ত্রীলোকটি বলল, ‘যে তোমার পরিবারের সাথে কুকর্ম কামনা করে তার জন্য কারাগারে প্রেরণ বা অন্য কোন মর্মন্তুদ শাস্তি ছাড়া আর কি দণ্ড হতে পারে? ইউসুফ বলল, ‘সে-ই আমার কাছ থেকে অসৎকাজ কামনা করছিল।’

স্ত্রীলোকটির পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিল, ‘যদি তার জামার সামনের দিক থেকে ছিঁড়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী, কিন্তু তার জামা যদি পিছন দিক থেকে ছিঁড়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি মিথ্যা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী। গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পিছন দিক থেকে ছেঁড়া হয়েছে তখন সে বলল, ‘নিশ্চয়ই এটা তোমাদের নারীদের ছলনা, তোমাদের ছলনা তো ভীষণ। হে ইউসুফ! তুমি এটা এড়িয়ে যাও এবং হে নারী! তুমি তোমার অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর; তুমিই তো অপরাধী।

নগরের কিছু সংখ্যক নারী বলল, ‘আযীযের স্ত্রী তার যুবক দাস হতে অসৎকাজ কামনা করছে, প্রেম তাকে উন্মত্ত করেছে, আমরা তো তাকে স্পষ্ট ভুলের মধ্যে দেখছি। স্ত্রীলোকটি যখন ওদের কানা-ঘুষার কথা শুনল, তখন সে ওদেরকে ডেকে পাঠাল, ওদের জন্য আসন প্রস্তুত করল, ওদের সবাইকে একটি করে ছুরি দিল এবং ইউসুফকে বলল, ‘ওদের সামনে বের হও।’ তারপর ওরা যখন তাঁকে দেখল তখন ওরা তাঁর সৌন্দর্যে অভিভূত হল এবং নিজেদের হাত কেটে ফেলল। ওরা বলল, ‘অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য! এ তো মানুষ নয়, এ তো এক মহিমান্বিত ফেরেশতা। সে বলল, ‘এ-ই সে যার সম্বন্ধে তোমরা আমার নিন্দা করেছ। আমি তো তার থেকে অসৎকাজ কামনা করেছি।

কিন্তু সে নিজেকে পবিত্র রেখেছে; আমি তাকে যা আদেশ করেছি সে যদি তা না করে, তবে সে কারারুদ্ধ হবেই এবং হীনদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ইউসুফ বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! এ নারীরা আমাকে যার দিকে ডাকছে তার চেয়ে কারাগার আমার কাছে বেশী প্রিয়। আপনি যদি ওদের ছলনা হতে আমাকে রক্ষা না করেন তবে আমি ওদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। তারপর তার প্রতিপালক তার ডাকে সাড়া দিলেন এবং তাকে ওদের ছলনা হতে রক্ষা করলেন। তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” [সূরা ইউসুফ: ২৩-৩৪]

৬) শরীরে উল্কি আঁকাতে যেয়ে নিজের ইয্‌যত-আব্রু পরপুরুষকে দেখানো হয়। যা প্রকাশ্য কবিরা গুনাহ। যে ব্যক্তি উল্কি আঁকে এবং যার গায়ে তা আঁকা হয়, উভয়য়ের উপরই আল্লাহর লা‘নত বর্ষিত হয়। রাসূলুল্লাহ () বলেন: ‘‘যে ব্যক্তি পর-চুলা লাগায় এবং যাকে লাগায়; এবং যে ব্যক্তি উল্কি আঁকে এবং যার গায়ে আঁকে, আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেন।’’ [বুখারী,কিতাবুল লিবাস,হাদিস নং৫৪৭৭] মূলত যার লজ্জা নেই, তার পক্ষে এহেন কাজ নেই যা করা সম্ভব নয়। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘‘যদি তোমার লজ্জা না থাকে তাহলে যা ইচ্ছা তাই করতে পার।’’ [বুখারী, কিতাবু আহাদীসিল আম্বিয়া, হাদিস নং৩২২৫]

৭) ভালবাসা দিবসের নামে নির্লজ্জতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে যিনা-ব্যভিচার, ধর্ষণ ও খুন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।  আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘‘যে জনগোষ্ঠীর-মধ্যেই ব্যভিচার ব্যাপক হবে, তথায় মৃত্যুর আধিক্য ব্যাপক হয়ে দেখা দেবে।’’ [মুয়াত্তা মালিক, কিতাবুল জিহাদ, হাদিস নং-৮৭০]

উপরোক্ত আয়াত ও হাদিসগুলোর ভাষ্য কতটা বাস্তব বর্তমান বিশ্বের বাস্তব চিত্র এর প্রমাণ বহন করে। অবাধ যৌন মিলনের ফলে “AIDS” নামক একটি রোগ বর্তমানে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এটা এমনি মারাত্মক যে, এ রোগে আক্রান্ত হলে এর কোন আরোগ্য নেই। কিছু পরিসংখ্যান দিলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে :

  • বিশ্বের ১৪০ কোটিরও বেশী লোক থেকে ১৯৮৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত এক লক্ষ এগার হাজারেরও বেশী “AIDS”  রোগীর তালিকা পাওয়া গিয়েছে।’’(আব্দুল খালেক, নারী,(ই,ফা,বা.ঢাকা,১৯৮৪ইং) পৃ. ৯৬)
  • ১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২,৪২,০০০ এইডস রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে ১,৬০,০০০ মৃত্যু বরণ করেছিল। ১৯৯২ সালের গবেষণালব্ধ তথ্য মতে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ৫০ লক্ষ্য এইডস রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।(Baron& Byrne, Ibid., P. 329)
  •  ৩০ শে ডিসেম্বর ১৯৯৬ এর Time International’ পত্রিকায় পরিবেশিত তথ্য মতে, ৬৫ লক্ষ জীবন ছিনিয়ে নিয়েছে এই ঘাতক ব্যাধি। আগামী ৫ বৎসরে আরও ৩ কোটি লোক মারা যাবে এই রোগে। (মাসিক পৃথিবী, (ঢাকা, ডিসেম্বর, ১৯৯৯), পৃ. ৫)
  •  বিশ্ব এইডস দিবস ২০০০-এর প্রাক্কালে জাতিসংঘ যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে : ‘‘ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক সেবনকারী এবং সমকামিতা, ইতর রীতির যৌনতার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপ, রাশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ল্যাটিন-আমেরিকা ক্যারিবীয় অঞ্চল ও এশিয়ায় এইডস দেখা দিয়েছে। আফ্রিকার কয়েকটি দেশে প্রতি তিনজনের একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ এইডস আক্রান্ত। শিশুদের ৮০ ভাগ এই রোগের ভাইরাসে আক্রান্ত। আফ্রিকার উপ-সাহারা এলাকায় এ বছর ১০ লাখেরও বেশী লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে নতুন করে এইডস দেখা দিয়েছে। মাত্র একবছরে এইডস রোগীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্য প্রাচ্যেও নতুন করে এইডস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।’’(রয়টার্স, দৈনিক ইনকিলাব, (ঢাকা, ২রা ডিসেম্বর ২০০০ ইং) পৃ .১-২)
  •  জাতিসংঘের দেয়া তথ্য মতে : ‘‘বিশ্বে ৩ কোটি ৬০ লাখ লোক এইডসে আক্রান্ত ২০০০ইং সনে ৫০ লাখ লোক নতুন করে এইডসে আক্রান্ত হয়েছে।’’(প্রাগুক্ত)
  •  ‘‘বিশ্ব এইডস দিবসের আলোচনা সভায় (ঢাকা) বাংলাদেশের তৎকালীন সমাজকল্যাণ, প্রতি মন্ত্রী ড. মোজাম্মেল হোসেনের দেয়া তথ্য মতে, বাংলাদেশে এইডস ভাইরাস বহনকারী রোগীর সংখ্যা একুশ হাজারের বেশী।’’[ দৈনিক ইনকিলাব, (স্টাফ রিপোর্টার, বিশ্ব এইডস দিবসে ঢাকায় আলোচনা সভা, ২রা ডিসেম্বর, ২০০০ ইং) পৃ.১]

সিফিলিস-প্রমেহ: বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আমেরিকার শতকরা ৯০% অধিবাসী রতিজ দুষ্ট ব্যাধিতে আক্রান্ত। সেখানকার সরকারী হাসপাতালগুলিতে প্রতি বৎসর গড়ে দুই লক্ষ সিফিলিস এবং এক লক্ষ ষাট হাজার প্রমেহ রোগীর চিকিৎসা করা হয়। (Encyclopedia Britannica, V. 23, P. 45.) এছাড়াও আমেরিকায় প্রতি বৎসর ত্রিশ-চল্লিশ হাজার শিশু জন্মগত সিফিলিস রোগে মৃত্যুবরণ করে। ( আঃ খালেক, নারী, (ঢাকা : ই.ফা. বা., ১৯৮৪ ইং), পৃ. ৯৬)

Dr. Laredde বলেন— ফ্রান্সে প্রতি বৎসর কেবল সিফিলিস ও তদ-জনিত রোগে ত্রিশ হাজার লোক মারা যায়। (প্রাগুক্ত)

হার্পিস রোগ: ব্যভিচারের কারণে জননেন্দ্রিয়ে সৃষ্ট অত্যন্ত পীড়াদায়ক রোগ হলো Genital Herpes. মার্কিন জনসংখ্যার শতকরা দশ ভাগ (জনসংখ্যা ২৬ কোটি ধরলে তার ১০% হয় ২ কোটি ৬০ লক্ষ) এই রোগে আক্রান্ত। এটাই সব নয়। প্রত্যেক বৎসর প্রায় ৫০০,০০০ মানুষের নাম এই মারাত্মক হার্পিস রোগীদের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। (Baron & Byrne, Social psychology : Understanding Human Interaction, P. 329.)

৮) বিশ্ব ভালবাসা দিবসের এসব ঈমান বিধ্বংসী কর্ম-কাণ্ডের ফলে মুসলিম যুব-মানস ক্রমশ ঈমানি বল ও চেতনা হারিয়ে ফেলছে।

৯) মানুষের হৃদয় থেকে তাকওয়া তথা আল্লাহর ভয় উঠে যাচ্ছে।

প্রিয় মুমিন-মুসলিম ভাই-বোনেরা ! ভালবাসা কোন পর্বীয় বিষয় নয়। এটি মানব জীবনের সুখ-শান্তির জন্য একটি জরুরি সার্বক্ষণিক মানবিক উপাদান। সুতরাং আমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ বৃদ্ধির জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শিখানো সার্বক্ষণিক পন্থাটি অবলম্বন করি।

বিশ্ব ভালবাসা দিবসের নামে এসব ঈমান বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড হতে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে হেফাযত করুন। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই যেন কাউকে ভালবাসি এবং শত্রুতাও যদি কারো সাথে রাখতে হয়, তাও যেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই রাখি।

আমীন !!!

পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩

Print Friendly, PDF & Email


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

5 COMMENTS

  1. Fantastic and scholastic write-up. Extremely delighted to read. Continue spreading the message of Truth in these beautiful ways. Look forward to read more on these topics. May Allah grant you more courage and wisdom and excellent health. 

    Muhammad Musharraf Hussain, PhD (Pharm)
    [email protected]
     

আপনার মন্তব্য লিখুন