জুম’আর দিনের ফযীলত

20
6620

উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য জুম’আর দিনের ফযীলত সমূহ

১) সূর্য উদিত হয় এমন দিনগুলোর মধ্যে জুম’আর দিন হল সর্বোত্তম দিন। এ দিনে যা কিছু ঘটেছিল তা হলঃ

(ক) এই দিনে আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল,
(খ) এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল,
(গ) একই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।” [মুসলিমঃ৮৫৪],
(ঘ) একই দিনে তাঁকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছিল,
(ঙ) এই দিনেই তাঁর তওবা কবুল করা হয়েছিল,
(চ)এই দিনেই তাঁর রূহ কবজ করা হয়েছিল।” [আবু দাউদঃ১০৪৬],
(ছ) এই দিনে শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে,
(জ) এই দিনেই কিয়ামত হবে,
(ঝ)এই দিনেই সকলেই বেহুঁশ হয়ে যাবে।” [আবু দাউদঃ১০৪৭],
(ঞ)প্রত্যেক নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতা, আকাশ, পৃথিবী, বাতাস, পর্বত ও সমুদ্র এই দিনটিকে ভয় করে।” [ইবনে মাজাহঃ১০৮৪, ১০৮৫; মুয়াত্তাঃ৩৬৪]।

২)উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এটি একটি মহান দিন। এ জুম’আর দিনটিকে সম্মান করার জন্য ইহুদী-নাসারাদের উপর ফরজ করা হয়েছিল; কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এই দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতঃপর ইহুদীরা শনিবারকে আর খ্রিষ্টানরা রবিবারকে তাদের ইবাদতের দিন বানিয়েছিল। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা এ উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও ফযীলতের দিন হিসেবে দান করেছেন। আর উম্মতে মুহাম্মদী তা গ্রহন করে নিল।” [বুখারী ৮৭৬, ইফা ৮৩২, আধুনিক ৮২৫; মুসলিমঃ ৮৫৫]

৩)জুম’আর দিন হল সাপ্তাহিক ঈদের দিন।” [ইবনে মাজাহঃ ১০৯৮]

৪)জুম’আর দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনের চেয়েও শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদা সম্পন্ন।” [মুসনাদে আহমদঃ৩/৪৩০; ইবনে মাজাহঃ১০৮৪]

৫) জুম’আর দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, তা-ই তাকে দেওয়া হয়। আর এ সময়টি হল জুম’আর দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত।” [বুখারীঃ৯৩৫, ইফা ৮৮৮, আধুনিক ৮৮২; মুসলিমঃ৮৫২]

৬) “জুম’আর রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি মারা যায় আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের ফিতনা থেকে রক্ষা করবেন।”[তিরমিযীঃ১০৭৮]

৭) জান্নাতে প্রতি জুম’আর দিনে জান্নাতীদের হাট বসবে। জান্নাতী লোকেরা সেখানে প্রতি সপ্তাহে একত্রিত হবেন। তখন সেখানে এমন মনমুগ্ধকর হাওয়া বইবে, যে হাওয়ায় জান্নাতীদের সৌন্দর্য অনেক গুণে বেড়ে যাবে এবং তাদের স্ত্রীরা তা দেখে অভিভূত হবে। অনুরূপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি স্ত্রীদের বেলায়ও হবে।” [মুসলিমঃ২৮৩৩, ৭১/৭৫৩]

৮)যে ব্যক্তি জুম’আর দিনে সুরা কাহফ পড়বে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেবেন।” [জামেউস সাগীরঃ৬৪৭০]

৯)যে ব্যক্তি জুম’আর দিনে সুরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত পড়বে, সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে।” [মুসলিম]

১০)প্রত্যেক সপ্তাহে জুম’আর দিন আল্লাহ তায়ালা বেহেশতী বান্দাদের দর্শন দেবেন।” [সহীহুত তারগীব]

১১) এই দিনে দান খয়রাত করার সওয়াব অন্য দিনের চেয়ে বেশী হয়। ইবনুল কায়্যিম বলেছেন, অন্য মাসের তুলনায় রমজান মাসের দানের সওয়াব যেমন বেশী তেমনি শুক্রবারের দান খয়রাত অন্য দিনের তুলনায় বেশী।” [যাদুল মা’আদ]

১২) ইবনুল কায়্যিম আরও বলেছেন যে, অন্য মাসের তুলনায় রমজান মাসের মর্যাদা যেমন, সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় জুম’আ বারের মর্যাদা ঠিক তেমন। তাছাড়া রমজানের কদরের রাতে যেমন ভাবে দোয়া কবুল হয়, ঠিক তেমনি শুক্রবারের সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণেও দোয়া কবুল হয়।” [যাদুল মা’আদঃ১/৩৯৮]

 

সূত্রঃ বই-প্রশ্নোত্তরে জুমুআ ও খুৎবা (লেখকঃ অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম; পরিমার্জনেঃ ডঃ মোহাম্মদ মনজুরে ইলাহী, ডঃ আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া মজুমদার, ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।)

Print Friendly, PDF & Email


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

20 COMMENTS

  1. শৃনেছি কাবলাল জুমআ নামে যে সুন্নাত নামাজ আমাদের সমাজে পড়া হয় তার কোন দলীল নেই । এই কথা কি ঠিক ? প্লিজ সঠিক তথ্য জানিয়ে উপকৃত করবেন ।

  2. সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ্‌ যেন আমাদের রক্ষা করুন। আমাদের হেফাজত করুন। আমাদের দুয়া কবুল করুন। আমিন!

  3. অংশটুইকু ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তিরমিযি ২য় খন্ড পৃঃ১৯৫ থেকে নেওয়া।এরপর আপনি যা বুঝেন।

  4. jumma barer doa kobuler shomoyta bukhari shorif e ja likha ta ekhane likha na, doa kobuler shomoyta ashole konta? janale upokrito hobo.

আপনার মন্তব্য লিখুন