Home Blog Page 55

বইঃ আক্বীকার বিধান ও নামকরন – ফ্রী ডাউনলোড

AkikarBidhanONamkoronসংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ আক্বীকা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এই বিধান পালনের মাধ্যমে নেকী পেতে হলে তা সঠিকভাবে কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে পালন করা আবশ্যক। আর এই বিধানটি সম্পর্কে আমাদের সমাজে অজ্ঞতা ও বিভ্রান্তি বিদ্যমান। তাই লেখক বিষয়টির ভয়াবহতা উপলব্ধিরদরুন এই বইয়ে আক্বীকার বিধান সম্পর্কে কুরআন সুন্নাহের আলকে দলীল ভিত্তিক আলোচনার পাশাপাশি আক্বীকার বিধান সম্পর্কিত দুর্বল ও জাল হাদিস গুলো উল্লেখ করেছেন যাতে সাধারন পাঠকগন এই দুর্বল ও জাল হাদিসগুলো জেনে তার উপর আমল করা বন্ধের মাধ্যমে নিজেদের উপকৃত করতে পারে।

প্রণয়নে: মুহাম্মাদ মুকাম্মাল হক আল-ফাইযী

আক্বীকার বিধান ও নামকরন
আক্বীকার বিধান ও নামকরন

Mediafire: আক্বীকার বিধান ও নামকরন
Mediafire: আক্বীকার বিধান ও নামকরন

বিশ্বজয়ী বাংলাদেশি হাফেজ

Hifzul_874062120

মুখস্থ করার অভ্যাস সবার সমান নয়। সে হিসেবে বলা যায়, যারা পবিত্র কোরআনে কারিম মুখস্থ করেন তারা অবশ্যই প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী। একজন হাফেজে কোরআন পরকালে বিশেষ সম্মানে ভূষিত হবেন। দুনিয়াতেও হাফেজে কোরআনকে দেয়া হয় বিশেষ সম্মান ও মার্যাদা। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে, বিভিন্ন উদ্যোগে হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বেশ কয়েকটি দেশে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বমানের হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা। এসব প্রতিযোগিতার মূল্যমান যেমন বিশ্বমানের, তেমন এর গুরুত্বও ভিন্ন।

ইসলামি সভ্যতা বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন। রয়েছে আলাদা ঐতিহ্যও। সেই ঐতিহ্যের অংশ হিসেবেই বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিত বিভিন্ন হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় স্বার্থকতার সাথে অংশগ্রহণ থাকেন বাংলাদেশের হাফেজরা। বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী আলোচিত প্রতিযোগিতার নাম ‘আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা।’ এই প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন বয়সী বাংলাদেশের হাফেজরা অত্যন্ত সফলতার সাথে অংশগ্রহণ করে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এসব প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা শীর্ষস্থান অধিকার করে দেশের সুনাম বয়ে আনছে। বিশ্বপরিমণ্ডলে ছড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি।

ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের ‘দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগ’ বিভাগ থেকে দেয়া সর্বশেষ তথ্যানুসারে, এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি হাফেজরা সৌদি আরব, দুবাই, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, মিশর, জর্দান, তুরস্ক, আলজেরিয়া, ভারত ও পাকিস্তানসহ প্রভৃতি দেশে আয়োজিত হিফজ, ক্বেরাত ও তাফসির প্রতিযোগিতায় প্রায় ১১০ জন হাফেজ, ক্বারী ও মুফাসসির বিভিন্ন মানের পুরস্কার অর্জন করেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ সব পুরস্কারের আর্থিক মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা এবং প্রাপ্ত স্বর্ণমুদ্রার পরিমাণ ৩৫০ ভরি।

নিম্নে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বলকারী কয়েকজন চ্যাম্পিয়ন হাফেজের কাহিনি উল্লেখ করা হলো:

হাফেজা ফারিহা তাসনিম: বিশ্বের ৪৩টি দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক বালিকা হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে বাংলাদেশি শিশু ‘হাফেজা ফারিহা তাসনিম।’ ২০১৩ সালের ১৭ মে জর্দানের রাজধানী আম্মানে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ফারিহা তাসনিম মাত্র ছয় বছর বয়সে সম্পূর্ণ কোরআন মুখস্থ করেন। প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করে সৌদি আরব ও তৃতীয় হয় লিবিয়ার প্রতিযোগী।

হাফেজ নাজমুস সাকিব: ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মক্কা নগরীর হারাম শরিফে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে ময়মনসিংহের ছেলে নাজমুস সাকিব। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল ৭০টি দেশের প্রতিযোগী। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নাজমুস সাকিব কাবা শরীফের ইমাম আবদুর রহমান আস সুদাইসের হাত থেকে গ্রহণ করেন পুরস্কারস্বরূপ ৮০,০০০ সৌদি রিয়াল, বিশেষ সম্মাননা পদক ও সার্টিফিকেট।

এর আগে সাকিব ২০১২ সালে ভারতের বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় এশিয়ার ২৭টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে। সাকিব ২০১৩ সালে এনটিভি-পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায়ও সাকিব প্রথম স্থান অর্জন করে প্রায় ২০ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে। সাকিবের অর্জন এখানেই শেষ নয়। সে ২০১২ সালে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৯০টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে। পুরস্কার হিসেবে সাকিব পায় ৪৭ হাজার দিনার।

হাফেজ জাকারিয়া: মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত ২১তম আন্তজার্তিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চর ইলামপুর গ্রামের কিশোর হাফেজ জাকারিয়া। ২০১২ সালে ৫০টি দেশের ক্ষুদে হাফেজদের পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ান হয়েছে সে। ১২ বছর বয়সী জাকারিয়ার বাবার নাম মাওলানা ফয়জুল্লাহ। এর আগে সে ২০১১ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান লাভ করে।

হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুন: সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা ২০১৪ সালে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশের গর্ব ১২ বছর বয়সী হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুন। সৌদি সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে হাইয়্যাতুল আলামিয়্যাহ নামের একটি সংস্থা এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রায় সাত হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে মামুন হয়েছেন প্রথম। মামুন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাসিন্দা।

২০১৪ সালের রমজান মাসে শুরু হয় এ প্রতিযোগিতা। মামুন পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ১৮ হাজার রিয়াল। মামুনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মক্কার আমির আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ।

মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ: ‘বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা’ বিশ্বের নামকরা একটি প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র মক্কা শরিফে। ২০১৩ সালে এ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বাংলাদেশি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। কালাম পুরস্কার হিসেবে পেয়েছে ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল। প্রতিযোগিতায় ৬১টি দেশের ১৫০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছিল।

হাফেজ মহিউদ্দিন: ২০১২ সালের আগস্টে আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের হাফেজ মহিউদ্দিন ৬০টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।

অন্ধ হাফেজ তানভির: ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত বিশ্ব হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ৭৩টি দেশের মধ্যে ৩০ পারা গ্রুপে অন্ধ হাফেজ মুহাম্মদ তানভির প্রথম স্থান লাভ করে। ওই একই প্রতিযোগিতায় ১০ পারা গ্রুপে সাদ সুরাইল নামের অপর এক ক্ষুদে বাংলাদেশি হাফেজ প্রথম স্থান অধিকার করেন।

আসলে সবধরনের রেকর্ডই যে কোনো দেশের জন্য সুখকর। এভাবে বছরের পর বছর বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি বিরল অর্জনও বটে। এই অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ যেমন বিশ্বব্যাপী সম্মানিত হয়েছে, তেমনি স্থান করে নিয়েছে বিশ্ব রেকর্ড বুকে। অর্জিত হয়েছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। আমার চাই বাংলাদেশি হাফেজদের এমন সফলতার অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। আরও বেশি বেশি সম্মান বয়ে আনুক। উজ্জ্বল করুক দেশের নাম।

বইঃ Enjoy Your Life (Bangla Version) – Exclusive

Enjoy Your Life Bangla 1

লেখকঃ ড. মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুর রহমান আল আরিফী – Shaikh Dr. Muhammad ibn Abdur Rahman Al-’Arifi

Enjoy Your Life – জীবনকে উপভোগ করুন| ফাইল সাইজঃ ২১ এমবি | পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৫৯২

সারা বিশ্বে এই বইটির প্রায় ২.৫ কোটি কপি বিক্রি হয়েছে।

সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ এই বইটি নবীজির (সা) জীবন এবং ইসলামের সমৃদ্ধ সোনালি অতীত থেকে নেওয়া বেশকিছু ঘটনার এক অনবদ্য সংকলন। তাছাড়া বইটিতে লেখক জীবনের এমন কিছু ঘটনা টুকরো স্থান পেয়েছে যেগুলো পাঠকের চিন্তা জগতকে আলোড়িত করবে।

বইটির মৌলিক উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন আত্ম-উন্নয়নমূলক, সামাজিক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে জীবনকে উপভোগ করা যায় সে সম্পর্কে পাঠককে দিকনির্দেশনা প্রদান করা।

বইটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং মনোমুগ্ধকর দিকটি হলো বইটিতে সামাজিক দক্ষতার সর্বোত্তম ব্যবহার আমাদের জীবনে কী পরিমাণ কল্যাণ বয়ে আনতে পারে তা নবীজি (সা) এবং তাঁর সাহাবা (রাঃ)  জীবন থেকে উদাহরণসহ দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। বইটি যেমন আত্ম-উন্নয়নের পথে একটি বাস্তবিক এবং সুপরিকল্পিত দিকনির্দেশিকা, ঠিক একইভাবে ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর এক অমূল্য রত্নভাণ্ডার। বইখানি পাঠকের আত্ম-সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তার আত্মার পুষ্টি যোগাবে এবং তার মননকে করবে শক্তিশালী।

Enjoy Your Life – Bengali
Enjoy Your Life – Bengali
Enjoy Your Life – MediaFire
Enjoy Your Life – MediaFire
Enjoy Your Life – English Version
Enjoy Your Life – English Version

লেখক পরিচিতি

areefi

Shaikh Dr. Muhammad ibn Abdur Rahman Al-’Arifi
(Professor at King Saʿud University – Member of Muslim Scholars Association)

Academic Qualifications:
• Ph.D. in Islāmic Theology: Islāmic Creed and Contemporary Sects.
The title of his thesis: “The Views of Shaykh al-Islām ibn Taymiyyah Regarding Sufism, a Collection and Academic Study.” It was awarded “Excellent with First Class Honors” in 1421 AH (2001), from Imām Muhammad b. Saʿud Islāmic University in Riyadh.
• Master’s Degree in Islāmic Theology: Islāmic Creed and Contemporary Sects.
The title of his thesis: “Ibn al-Qayyim’s al-Kāfiyah al-Shāfiyah fil Intiṣār lil Firqatin Nājiyah, Manuscript Authentication and Academic Study.” It is more famously known as “Nūniyat ibn al-Qayyim.” It was awarded “Excellent with First Class Honors” in 1416 AH (1996), from Imām Muhammad b. Saʿud Islāmic University in Riyadh.
• Bachelor’s Degree in Islāmic Theology, 1411 AH (1991), from Imām Muhammad b. Saʿud Islamic University in Riyadh.

Official Website: http://arefe.ws/en/

বইঃ বালা-মুসিবত: কারণ ও করণীয় (ফ্রী ডাউনলোড)

2

bala

লেখকঃ  মুহাম্মাদ নাসীল শাহরুখ | পৃষ্ঠাঃ ৩৪ | সাইজঃ ১০ মেগাবাইট

সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ সংশয়বাদীরা প্রশ্ন করে: যদি স্রষ্টা থেকেই থাকেন, তবে পৃথিবীতে বিপদাপদ, রোগ-শোক, যুলুম-অনাচার এবং সর্বোপরি মন্দের অস্তিত্ব কিভাবে সম্ভব? এই আলোচনায় সংশয়বাদীদের এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার পাশাপাশি আলোকপাত করা হয়েছে বালা-মুসিবতের বিভিন্ন কারণ, তাৎপর্য ও করণীয় সম্পর্কে৷

বালা-মুসিবত: কারণ ও করণীয় – QA Server
বালা-মুসিবত: কারণ ও করণীয় – QA Server

বালা-মুসিবত: কারণ ও করণীয় – Mediafire
বালা-মুসিবত: কারণ ও করণীয় – Mediafire

লেখকের অন্যান্য বই কিনতে এই লিংকে ক্লিক করুন৷

বইঃ সুখী হওয়ার ১০টি উপায় (ফ্রী ডাউনলোড)

0

cover

লেখকঃ  মুহাম্মাদ নাসীল শাহরুখ | পৃষ্ঠাঃ ৩৪ | সাইজঃ ১৪ মেগাবাইট

সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ সুখ সবার সাধারণ চাওয়া – জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ছোট ও বড় সকলেই সুখী হতে চায়৷ যে আল্লাহ তাআলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি সুখও সৃষ্টি করেছেন, আর বাতলে দিয়েছেন সুখী হওয়ার পথ৷ তাই স্রষ্টার দেখানো পথ ছাড়া অন্য কোন পথে সুখ আসা সম্ভব নয়৷ এই পুস্তিকায় কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে সুখী হওয়ার কিছু উপায় আলোচিত হয়েছে৷

 

সুখী হওয়ার ১০টি উপায়- QuranerAlo Server
সুখী হওয়ার ১০টি উপায়- QuranerAlo Server

সুখী হওয়ার ১০টি উপায়- Mediafire
সুখী হওয়ার ১০টি উপায়- Mediafire

 

লেখকের অন্যান্য বই কিনতে এই লিংকে ক্লিক করুন৷

বই – নবীদের কাহিনী (নতুন সংস্করণ) – ফ্রী ডাউনলোড

49

আশরাফুল মাখলুকাত মানব জাতির কল্যাণে প্রেরিত মানব জাতির বিধান সমূহ প্রচার ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে আদম (আঃ) থেকে মুহাম্মাদ (সাঃ) যুগে যুগে যে অসংখ্য নবী রাসূল প্রেরন করেছেন তাদের মধ্য থেকে মাত্র ২৫ জন নবীর নাম আল্লাহ পবিত্র কুরআনে গুরুত্ত্বের সাথে উল্ল্যেখ করেছেন এবং সত্যের পথে তাঁদের দৃঢ়চিত্ত্ব সংগ্রামের হৃদয়গ্রাহী সংগ্রামের বর্ণনা করে মানবতার সামনে সত্য ন্যায় ও সুন্দরের অনুপম মানদণ্ড উপস্থাপন করেছেন। এসব কাহিনী কেবল চিত্ত বিনোদনের খোরাক নয়, বরং এক অবিরাম বিচ্ছুরিত আলোকধারা,  যার প্রতিটি কণায় বিকশিত হয় মানবতার সর্বোচ্চ নমুনা। নবী ও রাসূলগণের জীবনালেখ্য জানা ও তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা আমাদের মুসলমানদের অপরিহার্য কর্তব্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি বাংলাদেশে ের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস খুবই দুর্লভ। তাই বিষয়টির গুরুত্ত্ব উপলব্ধি করে মাননীয় লেখক প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব এই মুল্যবান ইতিহাসটি লিখেন।

এই বইটির বিশেষত্ব হচ্ছে-

  • ঘটনা মূলক বর্ণনা পদ্ধতি মূল বিষয় বস্তু আত্মস্থ করতে শ্রোতা ও পাঠকগণকে খুব দ্রুত আকৃষ্ট করে। মানুষের বিচার-বুদ্ধি, প্রকৃতি ও স্বভাবের উপর এর সফল প্রভাব পরে। ফলে সহজেই ঘটনা হতে শিক্ষা গ্রহণ করা যায় এবং তার উপর আমল করা যায়। এ জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক সময় সাহাবায়ে কেরামদের জন্য ঘটনা মূলক উদাহরণ পেশ করতেন।
  • বইটিতে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বর্ণিত ঘটনা ও বক্তব্য সমূহ একত্রিত করে কাহিনীরূপ প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে বিশ্বস্ত তাফসীর,হাদীস ও ইতিহাস গ্রন্থ’ সমূহ থেকেও উদ্ধৃত করা হয়েছে। নবীদের কাহিনীর নামে প্রচলিত কেচ্ছা-কাহিনী ও ইসরাইলী উপকথা সমূহ হ’তে বিরত থেকে সহীহ বর্ণণাসমূহ দ্বারা বইটি সমৃদ্ধ হয়েছে।
  • এর সবচেয়ে মূল্যবান সংযোজন হল আম্বিয়া কেরামের জীবনী থেকে বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে শিক্ষনীয় বিষয় সমূহ তুলে ধরা হয়েছে।
  • কুরআনে ২৫ জন নবীর নাম বর্ণণা করা হয়েছে: আদম,নূহ,ইদরীস,হূদ,ছালেহ,ইবরাহীম,লূত,ইসমাঈল,ইসহাক,ইয়াকূব,ইউসুফ,আইয়ূব,শু‘আয়েব,মূসা,হারূণ,ইউনুস,দাঊদ,সুলায়মান,ইলিয়াস,আল-ইয়াসা‘,যুল-কিফ্ল,যাকারিয়া,ইয়াহ্ইয়া, ঈসা (আ) ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। বইটিতে দুটি খণ্ডে সম্মানিত এসকল আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের কাহিনী আলোচনা করা হয়েছে।

পরিশেষে বলা যায়, “নবী কাহিনী” একটি নির্ভরযোগ্য তথ্যবহুল বই। আশা করা যায়, এর মাধ্যমে পাঠক সমাজ মানবজাতির প্রাচিন ইতিহাসের পাদপীঠে নিজেদের নতুনভাবে মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবেন এবং নবীদের উন্নত জীবনকে উত্তম আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করার প্রেরণা লাভ করবেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন : ‘তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়, এটা কোন মনগড়া কথা নয়, কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্যে পূর্বেকার কালামের সমর্থন।‘ [সূরা ইউসুফ : ১১১]।

“আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন”। (বুখারী)

মানব জাতির শেষ্ঠ মানুষ নবীদের জীবনী পাঠ করি, আল্লাহ আমাদের এই সকল কাহিনী ও ঘটনা থেকে উপকৃত হওয়ার তাওফিক দান করুন, আমিন।

 

বিদ্রঃ কিছু ওয়েবসাইটে আপনি এই বইটি পেতে পারেন, কিন্তু আমাদের ওয়েবসাইটে যেই ভার্সনটা দেওয়া হল এইটাতে Interactive Link অ্যাড করা হয়েছে। মানে আপনি যখন সূচীপত্র থেকে কোন বিষয় পড়তে চাবেন, তখন আপনাকে কষ্ট করে বিষয়টা খুঁজতে হবে না। আপনি সুধু বিষয়টির উপর ক্লিক করলেই, আপনাকে সেই বিষয়টি তাৎক্ষণিক দেখানো হবে। আবার বইটির বাম দিকে Bookmark অপশনে ক্লিক করলে, আপনাকে সূচীপত্র দেখাবে।

 

নবীদের কাহিনী ১ম খণ্ড – QA Server
নবীদের কাহিনী ১ম খণ্ড – QA Server
 

নবীদের কাহিনী ২য় খণ্ড – QA Server
নবীদের কাহিনী ২য় খণ্ড – QA Server

ডাউনলোড করুন MediaFire থেকে

নবীদের কাহিনী ১ম খণ্ড – Mediafire
নবীদের কাহিনী ১ম খণ্ড – Mediafire
 

নবীদের কাহিনী ২য় খণ্ড – Mediafire
নবীদের কাহিনী ২য় খণ্ড – Mediafire

[divider]

নবীদের কাহিনী – Nobider Kahini Android App

Download from here – https://play.google.com/store/apps/details?id=com.simpleappandroid.nobiderkahini&hl=en

বইঃ আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া (নতুন সংস্করণ) – ফ্রী ডাউনলোড

Al Bidaya Wa Al Nihaya 500px

আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়াAl Bidaya Wal Nihaya প্রখ্যাত মুফাসসির ও ইতিহাসবেত্তা আল্লামা ইবনে কাসীর (রহ) প্রণীত একটি সুবৃহৎ ইতিহাস গ্রন্থ। এই গ্রন্থের সৃষ্টির শুরু তথা আরশ, কুরসী, নভোমন্ডল, ভূমন্ডল প্রভৃতি এবং সৃষ্টির শেষ তথা হাশর-নশর, কিয়ামত, জান্নাত, জাহান্নাম প্রভৃতি সম্বন্ধে আলোচনা করা হয়েছে।

এই গ্রন্থটি ১৪টি খন্ডে সমাপ্ত হয়েছে। আল্লামা ইবনে কাসীর (র) তাঁর এই গ্রন্থকে তিনভাগে ভাগ করেছেন।

প্রথম ভাগ: আরশ, কুরসী, ভুমন্ডল, নভোমন্ডল এতদুভয়ের অন্তর্বতী সব কিচু তথা ফেরেশতা, জিন, শয়তান, আদম (আ)-এর সৃষ্টি, যুগে যুগে আবির্ভূত নবী-রাসুলগণের ঘটনা, বনী ইসরাঈল, ইসলাম-পূর্ব যুগের রচনাবলী এবং মুহাম্মাদ (সা)-এর জীবন-চরিত আলোচনা করা হয়েছে।

দ্বিতীয় ভাগ : রাসুল (সা)-এর ওফাতকাল থেকে ৭৬৮ হিজরী সাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ কালের বিভিন্ন ঘটনা এবং মনীষীদের জীবনী আলোচনা করা হয়েছে।

তৃতীয়ভাগ : ফিতনা-ফাসাদ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, কিয়ামতের আলামত, নাশর-নশর, জান্নাত-জাহান্নামের বিবরণ ইত্যাদি।

লেখক তাঁর এই গ্রন্থের প্রতিটি আলোচনা কুরআন, হাদীস, সাহাবাগণের বর্ণনা, তাবেঈন ও অন্যান্য মনীষীদের দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন। ইবনে হাজার আসাকালানী (রহ), ইবনুল ইমাদ আল-হাম্বলী (র) প্রমুখ ইতিহাসবিদ এই গ্রন্থের প্রশংসা করেছেন। বদরুদ্দীন আইনী হানাফী (র) এবং ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) গ্রন্থটির সার-সংক্ষেপ রচনা করেছেন।

বিখ্যাত এই গ্রন্থটির ১-১০ খন্ড অনুবাদ প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ।

১-৭ ও ৯ম খন্ড স্ক্যান করেছে ইসলামী বই ডট ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম এবং  ৮ম ও ১০ম খন্ড স্ক্যান এবং সম্পূর্ণ বইটিতে Interactive Link অ্যাড করেছে  waytojannah.com । যারা এই কাজে পরিশ্রম ব্যয় করেছেন, আল্লাহ তাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

নতুন সংস্করণে Interactive Link অ্যাড করা হয়েছে । 

QuranerAlo  সার্ভার থেকে ডাউনলোড করুন

১ম খন্ড | ২য় খন্ড | ৩য় খন্ড | ৪র্থ খন্ড | ৫ম খন্ড

৬ষ্ঠ খন্ড | ৭ম খন্ড | ৮ম খন্ড | ৯ম খন্ড | ১০ম খন্ড

ডাউনলোড (১-১০ খন্ড একত্রে) (254 MB)

Mediafire থেকে ডাউনলোড করুন 

১ম খন্ড | ২য় খন্ড | ৩য় খন্ড | ৪র্থ খন্ড | ৫ম খন্ড

৬ষ্ঠ খন্ড | ৭ম খন্ড | ৮ম খন্ড | ৯ম খন্ড | ১০ম খন্ড

ডাউনলোড (১-১০ খন্ড একত্রে) (254 MB)

বই – নেতৃত্ব প্রদান ও প্রভাবিত করার গুপ্ত রহস্যাবলি- ফ্রী ডাউনলোড

leadership

 

বইঃ নেতৃত্ব প্রদান ও প্রভাবিত করার গুপ্ত রহস্যাবলি (Secrets of Leadership and Influence )

লেখকঃ সূলাইমান বিন আওয়াদ  ক্বিয়ান

প্রকাশনায়ঃ পিস পাবলিকেশন্স

এডিটিং ও ইন্টার‌্যাক্টিভ লিংকঃ QuranerAlo.com

সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ উচ্চ পদ হতে মাঠ পর্যায়সহ সর্বস্থরে যারা নেতৃত্ব প্রদান, ও দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেন বা করবেন তাদের জন্য পুস্তিকাটি অমেয় সূধা হিসাবে গৃহীত হবে বলে আশা করি। সকল মানুষই নিজ নিজ অবস্থানে এক একজন নেতা বা পরিচালক। এ জন্য সকলকেই দায়িত্ব কর্তব্য সুচারুরূপে পালনের নেপথ্য যে গুণাবলির গুপ্ত রহস্য স্বভাবে থাকা একান্ত প্রয়োজন তা জেনে জীবনে বাস্তবায়িত করার জন্য এ পুস্তকটি সকলের পথের দিশা হবে।

এই বইটিতে নবী (সাঁঃ) এর নৈতিক উৎকর্ষ সম্বলিত দূরদর্শিতার বর্ণনা আছে। যা নেতৃত্বে মানসম্পন্ন শিক্ষা, উপদেশ, পরামর্শ দিবে ও প্রভাবিত করবে।

এই বইটিতে নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঁ:) এর জীবনের সরাসরি ধারা বিবরণী বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁর অনুরাগ-অনুভূতি, তাঁর সিদ্ধান্ত গ্রহনের ধরন, তাঁর নেতৃত্বের ধারা, তাঁর প্রেরণা ও অনুপ্রেরনা প্রদানের পন্থা, মানুষ ও জনসাধারণকে আকর্ষিত ও অনুপ্রাণিত করার কৌশল বর্ণনা করা হয়েছে।

 

নেতৃত্ব প্রদান ও প্রভাবিত করার গুপ্ত রহস্যাবলি – QA Server
নেতৃত্ব প্রদান ও প্রভাবিত করার গুপ্ত রহস্যাবলি – QA Server

নেতৃত্ব প্রদান ও প্রভাবিত করার গুপ্ত রহস্যাবলি – Mediafire
নেতৃত্ব প্রদান ও প্রভাবিত করার গুপ্ত রহস্যাবলি – Mediafire

 

 

আমি সালাত আদায় করতে পারছি না!! কারণ.. Short Video

 

 

বক্তাঃ Nouman Ali Khan

বাংলা প্রতিলিপি…

আমি একজন মুসলিম অথচ আমি সালাত আদায় করতে পারছি না! আসলে দুটি আলাদা সমস্যায় দুই ধরনের উত্তর দেয়া হয়। প্রথম সমস্যা হল আমি দিনে পাঁচ বার সালাত আদায় করতে পারি না।আমি এটা পারছি না। এখন, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না। যেই বলে আমি এটা পারছি না, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না। কেন জানেন? কারন আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি।
আর আমি বলিনি আমি আল্লাহকে স্বীকার করি, আমি বলেছি আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি। এর মধ্যে পার্থক্য আছে, তাই না? আমি আল্লাহকে স্বীকার করি মানে আমি আল্লাহের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি।কিন্তু যখন আমি বলি, আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি, তার অর্থ আমি তার কথাগুলো বিশ্বাস করি।তিনি বলেন…আল্লাহ্‌ কখনোই কারও উপর সামর্থের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেন না।এটাই আল্লাহ্‌ বলেছেন । তিনি বলেছেন তিনি কারও উপরে এমন দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না যতক্ষন না তারা সেই দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা অর্জন করে। আপনি বলছেন, আপনি এমন দায়িত্ব পালনে অক্ষম যা আল্লাহ্‌ আপনাকে দিয়েছেন। তাই নয় কি? আপনি বলছেন, আমি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে পারছি না।
এটা মাত্রাতিরিক্ত! আর আল্লাহ্‌ বলছেন আপনি পারবেন।সুতরাং আমাকে বেছে নিতে হবে, আমি আপনাকে বিশ্বাস করব না আল্লাহকে। এবং সম্ভবত যদি আপনি তা বুঝতে না পারেন তাহলে নিজের সাথে মিথ্যাচার করছেন। সম্ভবত আপনি এমন ভাবছেন আপনার আলসেমীর কারনে, নিজের ইচ্ছার অভাবের কারনে, আপনি দিনে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে চান না।আপনাকে পারতে হবে… আমি আপনাকে বুঝতে পারছি না, আমি জানি না সমস্যাটা কি? কিংবা সমস্যাটা হল, আপনি অমুসলিমদের সামনে সালাত আদায়ে লজ্জা পাচ্ছেন। মানুষ কাজের ফাঁকে ১৫ মিনিট ধূমপানের বিরতি নিতে পারে, তাই না? তারা বিরতি নিয়ে বাইরে যেতে পারছে, যা খুশি করতে পারছে আর আপনি দিনে ৫ বার সালাত আদায় করতে পারছেন না? সুবহানাল্লাহ!পৃথিবীর এই প্রান্তে, আমি নিউ ইয়র্ক সিটিতে কাজ করি, আমি দেখি মুসলিমরা সব জায়গাতেই সালাত পড়ছে।রাস্তার মাঝে, ফুটপাতের উপরেও সে সালাত পড়ছে কারন তখন সালাতের সময়।
কিংবা আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীর দরজা খুলেও দেখবেন সেখানে ৩জনে মিলে সালাত আদায় করছে।মুসলিমরা সালাত আদায় করে, সময় হলেই তারা সালাত পড়ে নেয়।এটাই প্রথম ব্যাপার, আল্লাহ্‌ বলেছেন আপনি সক্ষম। আর যদি তাই হয়, আল্লাহ্‌ আসলেই আপনাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন, তাহলে আপনি পারবেন।সুতরাং নিজেকে বোঝান, আল্লাহর উপর ভরসা করেন, তিনি আপনার জন্য এটা সহজ করে দিবেন।
দ্বিতীয় প্রশ্ন হল, তিনি কি আসলে কিছু মনে করেন? আমার সালাত আদায় করা না করায় কি তার কিছু যায়-আসে?এখন এই প্রশ্নটা মূলতঃ, তাঁর কি আমার সালাতের কোন প্রয়োজন আছে?আপনি ভুলে যাচ্ছেন যে সালাত আল্লাহর প্রয়োজনে নয়। এটা আপনার জন্য, আল্লাহর প্রয়োজনে নয়।যদি পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তাদের জীবনভর সালাত পড়ে, এটা আল্লাহর সম্পদ বিন্দুমাত্র বৃদ্ধি করে দিবে না।

এটা তার রাজ্যও বাড়িয়ে দিবে না কারন সমস্ত রাজত্বই তাঁর।আর কেউ যদি আর কখনো তাঁর নাম নাও নেয়, তাঁর রাজত্ব, রাজ্য বা মর্যাদার কোনরকম খর্বও হবে না।তাঁর আমাদের প্রয়োজন নেই, আমাদেরই তাকে দরকার, আমাদেরই তাকে দরকার।সুতরাং প্রশ্ন হল, আপনার কি মনে হয় আপনার প্রার্থনা করা দরকার? আপনার কি মনে হচ্ছে আপনার জীবনে এটা প্রয়োজনীয়?যদি না হয়, আপনার যদি আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার, আল্লাহর দিকে যাওয়ার এবং তাঁর আদেশ মানার প্রয়োজন না পড়ে, তাহলে আপনার ঈমান মারাত্মক সংকটের মুখে।

তা দূর্বল হয়ে গিয়েছে এবং এই প্রশ্ন এই কারনেই দেখা দিয়েছে যে আপনি দীর্ঘদিন ধরে আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূরে সরে আছেন এবং শয়তান আপনার কাছে আসতে পারছে আর বলছে…হ্যাঁ, আমি জানি, সালাত আদায় না করায় আপনার খারাপ লাগে, এই বাজে অনুভূতি দূর করে ফেলুন এবং একে প্রতিস্থাপন করুন এই অনুভূতি দিয়ে যে আপনার কেন সালাত আদায় আবশ্যক। এটা এই রোগের পরবর্তী পর্যায়। প্রথম অংশ হল, অন্তত এটা ধরা পড়ছে, আপনার কমপক্ষে খারাপ লাগছে, এখনো অপরাধ বোধ কাজ করছে, এটাই আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি পুরস্কার।

আর এই অপরাধ বোধও যখন চলে যাবে, আপনি বলবেন আল্লাহর কাছে প্রার্থনার কোন দরকার নেই, সবই ঠিক আছে। যতদিন আমি ভালো কাজ করবো, এটাই আমার বক্তব্যের শেষ অংশ, এই “যতদিন আমি ভালো কাজ করবো” অংশ।কে ভালো-মন্দ ঠিক করে? এই পৃথিবীতে দুই ধরনের ভালো কাজ আছে। দয়া করে এটা মনে রাখবেন। দুই ধরনের ভালো কাজ আছে। একটি হচ্ছে নীতিশাস্ত্রের দিক থেকে ভালো। আমি আমার প্রতিবেশীর কাছে ভালো, আমি আমার কাজে সৎ, আমি মানুষের নিকট ভালো, আমি চুরি করি না, আমি ধোঁকা দেই না।এগুলো হচ্ছে মূলনীতি।

আমি সত্য বলি, আমি সৎ, আমি ট্যাক্স দেই… এগুলো হচ্ছে নীতিগত সত্য। এবং আমি ব্যাবসায় সৎ।এছাড়াও আছে ধর্মীয় ব্যাপার। আমি হজ্বে যাই, আমি যাকাত দেই, আমি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করি, আমি রমযানে সাওম পালন করি। এগুলো নীতিগত বাস্তবতা নয়, এগুলো হচ্ছে ধর্ম অনুযায়ী ভালো কাজ। ভালো কাজ যা ধর্মীয় এবং ভালো কাজ যা নীতিশাস্ত্রীয়, স্বাভাবিকভাবেই নৈতিক। এটা অসংখ্যবার মুসলিম-অমুসলিম উভয়ের সাথেই ঘটে, বিশেষ করে মুসলিমদের সাথে। আমরা এই দুয়ের মধ্যে পার্থক্য করে ফেলি। তাই, মুসলিম বিশ্বে আপনি দেখবেন যে মানুষ নৈতিক দিক দিয়ে ভালো।তারা পরিবারের প্রতি যত্নশীল, বাচ্চাদের যত্ন নিচ্ছে, গৃহস্থালী কাজে দায়িত্বশীল, প্রতিবেশীর প্রতি সচেতন, কাজের প্রতি সৎ। ভালো মানুষ, কিন্তু ধার্মিক না।আমার ভালো হতে ধর্মের প্রয়োজন নেই, তারা বলবে। আর অন্যদিকে আপনি কিছু মানুষ পাবেন যারা সালাত আদায় করে, হজ্বে যায়, যাকাত দেয়, লম্বা দাড়ি রাখে, ধর্মীয় পোষাক পরিচ্ছদ পরে। এবং তবুও পরিবারের প্রতি ভয়ংকর, ব্যাবসায় প্রতারণা করে, নৈতিক শাস্ত্র অনুযায়ী খুবই খারাপ।
তাহলে আমরা ভালোর দুটি বিভাগ তৈরি করলে কি ঘটবে? নৈতিক দিক দিয়ে ভালো, শাস্ত্র অনুযায়ী ভালো এবং ধর্মীয় দিক থেকে ভালো। আল্লাহ্‌ কুরআনে যা করলেন তা হল এই দুটিকে একত্রে বেঁধে দিলেন। একটি আয়াত দিয়ে যাকে বলে আয়াতুল বির- উত্তমের আয়াত, এতে উত্তমের সংজ্ঞা কিভাবে দিয়েছে? আপনি এই আয়াত পড়লে দেখবেন এতে দুটি জিনিস বলা হয়েছে। এতে নীতিশাস্ত্র, তোমার ওয়াদা রাখ, ধৈর্যশীল হও, উদ্যমী হও এর সাথে ধর্মীয় গুনাবলী সালাত কায়েম করা, যাকাত দেয়ার সমন্বয় ঘটেছে।
তাই এটা এক জায়গায় এই উভয়ের সমন্বয় করেছে। তাই আপনি যদি ভাবেন আপনি ভালোকে সংজ্ঞায়িত করবেন… তাহলে আপনি বোধহয় নৈতিক গুনাবলীর কথা বলছেন। এবং আপনি ধর্মীয় গুনাবলীর কথা ভুলে গেছেন। যে আচার গুলো আল্লাহ্‌ আমাদের শিখিয়েছেন। কিন্তু আল্লাহ্‌ চান আমরা একই সাথে দুটোই অর্জন করি। আর তখনই একজন প্রকৃত অর্থেই ভালো হবেন। তা না হলে আপনি প্রকৃত অর্থে ভালো নয়। আপনি আপনার মতো করে ভালোকে সংজ্ঞায়িত করছেন। আর আল্লাহর সংজ্ঞাকে বাতিল করে দিচ্ছেন! কিন্তু আমরা আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করি কারন আমরা আমাদের মতো করে জিনিসগুলোর সংজ্ঞা দিতে পারি না। এগুলোকে সংজ্ঞায়িত করতে তাঁকে আমাদের প্রয়োজন। ইনশাআল্লাহ তায়ালা (আল্লাহ্‌ যদি ইচ্ছা করেন)।

আয়াতুল বির এর বাংলা অনুবাদঃ
ভালো কাজ এটা নয় যে, তোমরা তোমাদের চেহারা পূর্ব ও পশ্চিম দিকে ফিরাবে; বরং ভালো কাজ হল যে ঈমান আনে আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতাব ও নবীগণের প্রতি এবং যে সম্পদ প্রদান করে তার প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও নিকটাত্মীয়গণকে, ইয়াতীম, অসহায়, মুসাফির ও প্রার্থনাকারীকে এবং বন্দিমুক্তিতে এবং যে সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং যারা অঙ্গীকার করে তা পূর্ণ করে, যারা ধৈর্যধারণ করে কষ্ট ও দুর্দশায় ও যুদ্ধের সময়ে। তারাই সত্যবাদী এবং তারাই মুত্তাকী।” সুরা বাকারা-১৭৭ ।

 

Courtesy: NAK Bangla

বইঃ বাসর রাতের আদর্শ বা আদাবুয যিফাফ – ফ্রী ডাউনলোড

Adab Az Jifafলেখকঃ শেইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ)

সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ আমাদের বর্তমান মুসলিম সমাজ সবক্ষেত্রেই অমুসলিমদের অনুসরণ করার পাশাপাশি  কিছু ক্ষেত্রে অনুকরণও করছে। তাদের কৃষ্টি, কালচার, সংস্কৃতি, অপসংস্কৃতি গ্রহণ করছে। কোনরুপ যাচাই বাছাই না করেই তারা গড্ডালিকা প্রবাহে মিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আজ মুসলিমরা অসহায়। তারা যেন ইসলামী সংস্কৃতিকে ভুল আর বিজাতীয় অপসংস্কৃতিকেই সংস্কৃতি ভাবছি। এগুলোর অনুসরণ করছে। যত সব অপসংস্কৃতির এই প্রবাহ তার অন্যতম হলো আচার-অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক।

এরকম বিবাহের মতো এই পবিত্র কাজকেও আমরা আজ অনুষ্ঠাননির্ভর করে ফেলেছি। এর সাথে যা করছি তা পুরোটাই হিন্দুয়ানী এবং পশ্চিমা সংস্কৃতি। যার পুরোটাই অনৈসলামিক। বিবাহের মতো এই পবিত্র বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে এবং অপসংস্কৃতিকে তুলে ধরতে শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ)-এর আদাবুয যিফাফ বা বাসর রাতের আদর্শ বইটি  অনন্য। এ বইয়ে তিনি সংস্কৃতির হক বাতিলের পার্থক্য তুলে ধরেছেন, যাতে উম্মাতে মুহাম্মাদী নিজস্ব সংস্কৃতিতে চলে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করতে পারে। শেইখ এই বই রচনায় তত্ত্ববহুল গভীর পান্ডিত্যের পরিচয় দিয়েছেন। এ কারণে জাতি তাঁর নিকট চিরকৃতজ্ঞঞ। বিশেষত: তিনি পুস্তকটিতে মহিলাদের স্বর্ণ ব্যবহার সম্পর্কে একটি  অধ্যায় রচনা করেছেন। বিষয়টি তত্ত্ববহুলে বটে কিন্তু এটি তার একটি স্বতন্ত্র গবেষণা ও তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী ভুমিকা। বিষয়টি সঠিক হলে তিনি দ্বিগুন সাওয়াবের অধিকারী হবেন এবং ভুল হলেও একগুণ সওয়াবের অধিকারী হবেন।

পাঠকের প্রতি অনুরোধ সওয়াব প্রাপ্তির বাসনায় বিষয়ীট গবেষণাধীন রাখা উচিত হবে এবং বিবাদ-বিসম্বাদ মতানৈক্য এড়িয়ে ঐক্যে অটুুট থেকে মুসলিম সভ্যতা সংস্কৃতি পালনের মাধ্যমে তাকওয়াবান হওয়ার প্রতিযোগীতায় উপনীত হওয়া বাঞ্জনীয় হবে।

এই গুরুত্বপূর্ণ বইতি যারা বিবাহিত বা খুব শিঘ্রই বিবাহিত করতে যাচ্চেন তাদের সকলকে পড়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। আল্লাহ এই বইটির প্রকাশক, ও যারা অনলাইনে প্রকাশের জন্য কাজ করেছেন তাদের সকলকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমীন

আদাবুয যিফাফ বা বাসর রাতের আদর্শ – Mediafire
আদাবুয যিফাফ বা বাসর রাতের আদর্শ – Mediafire

সালাতের ফজিলত সম্পর্কে জঈফ ও জাল হাদিস

12

mithabolarsasti

সালাত জান্নাতের চাবি কথাটি সমাজে বহুল প্রচলিত । অনেকে বুখারিতে আছে বলেও চালিয়ে দেয়াই পছন্দ করে। আসলে এর কোন ভিত্তি নাই।

হাদিস নং ১।

জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (ছা) বলেছেন, জান্নাতের চাবি হল সালাত। আর সালাতের চাবি হল পবিত্রতা।

(মুসনাদে আহমাদ হা/১৪৭০৩ তিরমিজি হা/৪ মিস্কাত হা/২৪৯ ফাজায়েলে আমাল  ৮৮ পৃ)

তাহকিকঃ

হাদিস এর প্রথম অংশ  জঈফ (জঈফুল জামে হা/৫২৬৫, সিলসিলা ই জঈফা হা/৩৬০৯) দ্বিতীয় অংশ পৃথক সনদ এ ছহিহ সুত্রে বর্ণিত আছে। (আবু দাউদ হা/৬১, তিরমিজি হা/৩)

হাদিসটির প্রথম অংশ জঈফ হবার কারন হল- উক্ত সনদ এ দুইজন দুর্বল রাবি আছে। (ক) সুলাইমান বিন করম ও (খ) আবু ইয়াহিয়া আল-কাত্তাত।

(আলবানি, মিস্কাত হা/২৯৪ এর টিকা দ্রষ্টব্য)

জ্ঞাতব্যঃ

জান্নাতের চাবি সম্পর্কে ইমাম বুখারি (রহ) একটি অনুচ্ছেদের বিষয়বস্তু আলোচনা করতে গিয়ে ওহাব ইবনু মুনাব্ববিহ (রহ) থেকে যে বর্ণনা এসেছে তা হল-

“লা ইলাহা ইল্লাল্লহ” কি জান্নাতের চাবি? তখন তিনি বলেন, হ্যাঁ। তবে প্রত্যেক চাবির দাত রয়েছে। তুমি যদি এমন চাবি নিয়ে আসো যার দাঁত রয়েছে, তাহলে তোমার জন্য জান্নাত খোলা হবে। অন্যথাই খোলা হবে না।

(বুখারি ১/১৬৫ পৃ হা/১২৩৭ এর পূর্বের আলোচনা দ্রষ্টব্য)

এছারাও আরও অন্নান্য ছহিহ হাদিস দারাও এটা প্রমানিত।

(বুখারি হা/৫৮২৭, মুসলিম হা/২৮৩, )

তাই, “লা ইলাহা ইল্লাল্লহ” হল জান্নাতের চাবি আর শরিয়াতের অন্নান্য আমল-আহাকাম অর্থাৎ সালাত, সিয়াম, হাজ, যাকাত ইত্যদি ওই চাবির দাঁত।

 

হাদিস নং ২।  

সালাত হল দিনের খুঁটি। সুতারাং যে ব্যাক্তি সালাত কায়েম করলো সে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করলো। আর যে ব্যাক্তি সালাত ছেড়ে দিল সে দ্বীনকে ধ্বংস করল।

(কাশফুল খাফা ২/৩২ পৃ, তাযকিরাতুল  মউজুয়াত পৃ ৩৮, ফাজায়েলে আমাল  ২৯ পৃ)

তাহকিকঃ

সমাজে হাদিসটির সমাধিক প্রসার থাকলেও হাদিসটি গ্রহন যোগ্য নয়। ইমাম নাবাবি (রহ) বলেন, এটি বাতিল ও মুনকার।

(কাশফুল খাফা ২/৩১ পৃ,)

হাদিস নং ৩।

রসুল (সা) বলেছেন, সালাত মুমিনের মিরাজ।

(তাফসিরে রাযি ১/২১৮ পৃ, তাফসিরে হাক্কি ৮/৪৫৩ পৃ, মিরকাতুল মাফাতিহ ১/১৩৪ পৃ, “ইমান” অধ্যায়)

তাহকিকঃ

উক্ত বর্ণনার কোন সনদ নাই। এটি ভিত্তিহিন ও বানোয়াট।

হাদিস নং ৪।

আনাস (রা) বলেন, রসুল (সা) বলেছেন, “সালাত মুমিনের নুর”

(মুসনাদে আবি ইয়ালা হা/৩৬৫৫, ফাজায়েলে আমাল  ২৯ পৃ)

তাহকিকঃ

বর্ণনাটি জইফ। মুহাদ্দিস হুসাইন সালিম আসাদ (রহ) বলেন, উক্ত হাদিসের সনদ অত্যন্ত দুর্বল।

(তাহকিক মুসনাদে আবি ইয়ালা হা/৩৬৫৫,)

উক্ত হাদিসের সনদে ইসা ইবনু মাইসারা নামে একজন দুর্বল রাবি আছে।

(সিলসিলাই জইফা হা/১৬৬০)

উল্লেখ্য, ছলাত নুর, সাদাকা দলিল মর্মে মুসলিমে যে হাদিস বর্ণিত হয়েছে তা ছহিহ।

(মুসলিম হা/৫৫৬, মিস্কাত হা/২৮১)

হাদিস নং ৫।

যে বাক্তি জামাতের সাথে ফজরের সালাত আদায় করে সে যেন আদম (আ) এর সাথে পঞ্চাশ বার হজ করে এবং যে বাক্তি জামাতের সাথে যোহরের সালাত আদায় করে সে যেন নুহ (আ) এর সাথে চল্লিশ কিংবা ত্রিশ বার হজ করে। এভাবেই অনন্যা ওয়াক্ত সে আদায় করে।

(হাসান ইবনু মুহাম্মাদ আস-ছাগানি, আল-মউজুয়াত হা/৪৮ পৃঃ ৪২)

তাহকিকঃ

বর্ণনাটি জাল ও মিথ্যা।

(আল-মউজুয়াত হা/৪৮ পৃঃ ৪২)

 

হাদিস নং ৬।

সালমান ফারসি (রা) বলেন, আমি রাসুল (সা) কে বলতে শুনেছি, যে বাক্তি ভোরে ফজরের ছালাতের দিকে আগিয়ে গেলো সে ইমানের পতাকা নিয়ে গেলো। আর যে বাক্তি ভোরে (ফজরের সালাত আদায় না কওরে) বাজারের দিকে  আগিয়ে গেলো সে শয়তানের পতাকা নিয়ে গেলো।

(ইবনু মাজাহ হা/২২৩৪, বঙ্গানুবাদ মিস্কাত হা/৫৮৯)

তাহকিকঃ

উক্ত হাদিসের সনদ অত্যন্ত দুর্বল। এর সনদে উবাইস ইবনু মাইমুন নামক রাবি রয়েছে। ইমাম বুখারি (রহ) সহ অন্যান্য মুহাদ্দিছ গন তাকে মুনকার বলে অভিযোগ করেছে। ইবনু হিব্বান (রহ) বলেন, সে নির্ভরশীল বাক্তির নাম দিয়ে ধারনা পূর্বক বহু জাল হাদিস বর্ণনা করেছে।

(আলবানি, জইফ ইবনু মাজাহ হা/২২৩৪, মিস্কাত হা/৬৪০ টিকা দ্রষ্টব্য)

 

হাদিস নং ৭।

ইমরান ইবনু হুসাইন (রা) বলেন, রাসুল (সা) কে একদা জিজ্ঞাস করা হল, আল্লাহর এই বানি সম্পর্কে-“নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে” তখন তিনি বললেন, যাকে তার সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে না “তার সালাত হয় না”।

(তাফসির ইবনে কাসির; সিলসিলা ই জইফা হা/৯৮৫, ফাজায়েল এ আমাল পৃঃ ১৭২)

তাহকিকঃ

হাদিসটি জইফ। উক্ত বর্ণনার সনদে ইবনু জুনাইদ নামে একজন মিথ্যুক রাবি রয়েছে। মুহাদ্দিসগণ বর্ণনাটিকে মুনকার বলেছেন।

(সিলসিলা ই জইফা হা/৯৮৫৫)

হাদিস নং ৮।

ইবনু আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা) বলেন, যার সালাত তকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে না তাকে উহা ইসলাম থেকে দূরে সরে দেয়া ছারা আর কিছুই বৃদ্ধি করে না।

(ফাজায়েল এ আমাল পৃঃ ১৭৩, তাবারানি, আল-মুজামুল কাবির হা/১০৮৬২)

তাহকিকঃ

বর্ণনাটি বাতিল বা মিথ্যা। এর সনদে লইস ইবনু আবি সালিম নামক ত্রুতিপূর্ণ  রাবি রয়েছে।

(সিলসিলা ই জইফা হা/২)

জ্ঞাতব্যঃ

উক্ত বর্ণনা প্রমান করে ত্রুটিপূর্ণ কোন বাক্তি সালাত আদায় করলে সালাত কবুল হয়না। সুতারাং সালাত আদায় করে কোন লাভ নাই। কিন্তু উক্ত ধারনা সঠিক নয়। বরং সালাত আদায়ের মাধ্যমে এক সময় সে আল্লাহর অনুগ্রহে পাপ কাজ ছেড়ে দিবে। ছহিহ হাদিসে বর্ণিত হইছে,

আবু হুরাইরা (রা) বলেন, জনৈক বাক্তি রাসুল (সা) এর নিকটে এসে বললেন, অমুক বাক্তি রাতে সালাত আদায় করে আর সকাল হলে চুরি করে। তিনি উত্তরে বললেন, সালাত তাকে অচিরেই তা থেকে বিরত রাখবে।

(আহামাদ হা/৯৭৭৭, মিস্কাত হা/১২৩৭, সনদ ছহিহ)

চলবে……

ইউনুস عليه السلام এর ঘটনা

লেখক: শেইখ ড. সালেহ আলে তালেব | সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

পূর্ববর্তী নবী ‘আলাইহিমুস সালামগণের ঘটনাবলিতে রয়েছে শিক্ষা ও উপদেশ। তারা আমাদের আলোকবর্তিকা ও আলোর মিছিল। আল্লাহ বলেন: “তাদের এ কাহিনীগুলোতে অবশ্যই বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে শিক্ষা, এটা কোনো বানানো গল্প নয়, বরং তাদের পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়নকারী এবং প্রতিটি বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ। আর হিদায়াত ও রহমত ঐ কওমের জন্য যারা ঈমান আনে।” {সূরা ইউসূফ, আয়াত: ১১১}

মক্কায় যখন ঈমানদারের সংখ্যা মুষ্টিমেয়, পথ যখন দুর্গম অথচ দীর্ঘ- মুসলিমরা যখন এর শেষের দেখা পাচ্ছিল না, তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এসব বৃত্তান্ত নাযিল হত। এসব বৃত্তান্ত তাদের পথের শেষ উন্মোচিত করত। গন্তব্যের শেষ রেখা উদ্ভাসিত করত। তাদের সঙ্গে পথ চলত এবং তাদের হাত ধরত। এসব ছিল রাসূল ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের হৃদয় স্থির করার অভিপ্রায়ে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আর রাসূলদের এসব সংবাদ আমরা তোমার কাছে বর্ণনা করছি যার দ্বারা আমরা তোমার মনকে স্থির করি আর এতে তোমার কাছে এসেছে সত্য এবং মুমিনদের জন্য উপদেশ ও স্মরণ। ” {সূরা হূদ, আয়াত : ১২০}

আল্লাহ যেন তাঁর নবীকে বুঝাতে চান, আপনি দুর্গম পথে একা নন। আল্লাহর ভাষ্য যেমন বলছে: “অতএব তুমি ধৈর্যধারণ কর, যেমন ধৈর্যধারণ করেছিল সুদৃঢ় সংকল্পের অধিকারী রাসূলগণ।” {সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ৩৫}

আজ আমরা নবীদের মধ্যে একজনের ঘটনা শুনব, যে ঘটনা আমাদের নবীকে বলছিল- সাবধান তুমি যেন দাওয়াতের দায়িত্ব ও রেসালতের গুরুভার ফেলে যেও না। যেন বলছিল: “অতএব তুমি তোমার রবের হুকুমের জন্য ধৈর্যধারণ কর। আর তুমি মাছওয়ালার মত হয়ো না, যখন সে দুঃখে কাতর হয়ে ডেকেছিল।” {সূরা আল-কলম, আয়াত: ৪৮}

এ হলো ইউনুস ‘আলাইহিস সালামের ঘটনা। আল্লাহ তাকে মসুলের নাইনাওয়াবাসীর কাছে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি তাদেরকে আল্লাহর তাওহীদ ও ইবাদতের প্রতি আহ্বান জানান। তারা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং নিজেদের কুফরী ও অবাধ্যতায় অটল থাকে। তাদের এ অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে ইউনুস ‘আলাইহিস সালাম রাগে-ক্ষোভে তাদের ছেড়ে চলে আসেন। তিনি তাদেরকে তিনদিন পর আযাব নাযিলের সতর্কবার্তা ঘোষণা করেন। রাগত অবস্থায় ইউনুস ‘আলাইহিস সালাম তাদের ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন এ কথা ভেবে যে পৃথিবীর ব্যাপ্তি অনেক, গ্রামের সংখ্যা বহু ও জাতির ধরন বিভিন্ন। ফলে আল্লাহ একে সংকীর্ণ করবেন না। আর এরা যেহেতু দাওয়াতের অবাধ্যতায় অপরিবর্তিত, সেহেতু আল্লাহ হয়তো অন্য জাতিকে তাঁর প্রতি ঝুঁকে দেবেন। আর এটাই আল্লাহর বাণীর মর্ম: “আর স্মরণ কর যুন-নূনের কথা, যখন সে রাগান্বিত অবস্থায় চলে গিয়েছিল এবং মনে করেছিল যে, আমি তার ওপর সংকীর্ণ করব না।” {সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭}

অর্থাৎ তার জন্য দুনিয়াকে সংকীর্ণ করব না। এদিকে ইউনুস ‘আলাইহিস সালামের উম্মত যখন দেখল নবী চলে গেছেন এবং তাদের ওপর আযাব অবতরণ অবধারিত, তখন আল্লাহ তাদের অন্তরে তাওবা ও অনুশোচনা ঢেলে দিলেন। নবীর সঙ্গে কৃত আচরণের জন্য তারা অনুতপ্ত হলো। আল্লাহর প্রতি বিনত হলো এবং তাঁর সামনে বিগলিত হলো। এ ছিল এক বড় মুহূর্ত। ফলে নিজ শক্তি ও সামর্থ্য এবং দয়া ও করুণায় আল্লাহ তাদের পরিত্রাণ দিলেন। তাদের আযাব উঠিয়ে নিলেন যার কারণ ও অনুঘটক কেবল তাদের সঙ্গেই মিলে গিয়েছিল, তারা ছাড়া অন্য কারও ছিলো না। যখনই কোনো উম্মত তাদের নবীকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে অতঃপর তাদের ওপর আযাব নাযিল হয়েছে, তখন তারা ঈমান এনেছে আর সে ঈমান তাদের কাজে এসেছে এমনটি দৃশ্যমান হয় না, তবে ইউনুসের কাওম এর ব্যতিক্রম। আল্লাহ তা‘আলা সূরা ইউনুসে বলেন: “সুতরাং কেন হল না এমন এক জনপদ, যে ঈমান এনেছে এবং তার ঈমান তার উপকারে এসেছে? তবে ইউনুসের কওম ছাড়া যখন তারা ঈমান আনল, তখন আমরা তাদের থেকে দুনিয়ার জীবনের লাঞ্ছনাকর আযাব সরিয়ে দিলাম এবং আমরা তাদেরকে একটি সময় পর্যন্ত ভোগ করতে দিলাম।” {সূরা ইউনুস, আয়াত : ৯৮}

অসন্তুষ্টি ইউনুস ‘আলাইহিস সালামকে সমুদ্রতীরে নিয়ে উপনীত করল। সেখানে তিনি যাত্রী ও মাল বোঝাই এক জাহাজে চড়লেন। মাঝ দরিয়ায় ঢেউ ও বাতাস জাহাজটিকে ঝুঁকিয়ে ফেলল। সহযাত্রীরা এ থেকে ইঙ্গিত খুঁজে পেল যে যাত্রীদের মধ্যে কেউ একজন রয়েছে যার ওপর আল্লাহ অসন্তুষ্ট। তিনি কোনো অনুচিত কাজ করে এসেছেন। সেহেতু জাহাজটিকে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচাতে তাকে পানি ফেলে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। অথবা ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচাতে জাহাজের বোঝা হাল্কা করতে চাইল। এ লক্ষ্যে তারা যাত্রীদের নামে লটারি দিল। দেখা গেল ইউনুস ‘আলাইহিস সালামের নামই বেরিয়ে এলো। তাদের অন্তর তাঁকে ফেলে দিলে সায় দিচ্ছিল না। কিন্তু বারবার লটারি দিলেও একের পর এক শুধু তার নামই বেরিয়ে আসতে থাকল। আল্লাহ বলেন: “আর নিশ্চয় ইউনুসও ছিল রাসূলদের একজন। যখন সে একটি বোঝাই নৌযানের দিকে পালিয়ে গিয়েছিল।” {সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ১২৯-১৪০}

আল্লাহ তাঁর বেরিয়ে যাওয়াকে পালানো বলেছেন যেভাবে গোলাম তার মুনিবকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। কারণ তিনি আল্লাহর অনুমতি ছাড়াই জনপদ থেকে বেরিয়েছিলেন। পরের আয়াতে আল্লাহ বলেন: “অতঃপর সে লটারিতে অংশগ্রহণ করল এবং তাতে সে হেরে গেল।” {সূরা আস-সাফফাত, আয়াত: ১৪১}

এরপর তাকে সাগরে নিক্ষেপ করা হলো। আল্লাহ বলেন: “তারপর বড় মাছ তাকে গিলে ফেলল। আর সে (নিজেকে) ধিক্কার দিচ্ছিল।” {সূরা সাফফাত, আয়াত: ১৪২}

তিনি ধিক্কারযোগ্য হয়ে যান। কারণ তিনি সে মহান দায়িত্ব ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন আল্লাহ যা দিয়ে তাঁকে প্রেরণ করেছিলেন। আল্লাহ তাঁকে অনুমতি না দিতেই তিনি স্বজাতিকে ত্যাগ করে যাচ্ছিলেন অসন্তুষ্টিবশত। মাছ তাঁকে আহার বানাল অথচ তাঁর এতটুকু গোশত খেল না কিংবা তার কোনো হাড্ডিতে ঠোকর দিল না। মেছের পেটে তিনি থাকলেন যতক্ষণ আল্লাহ তাঁকে রাখতে চাইলেন। মাছের অন্ধকার, সাগরের অন্ধকার ও রাতের অন্ধকার- অন্ধকারের পর অন্ধকারে তিনি নিজের রবকে কাতরভাবে ডাকলেন: “আপনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই। আপনি পবিত্র মহান। নিশ্চয় আমি ছিলাম যালিম।” {সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭}

বর্ণিত হয়েছে যে ফেরেশতারা তাঁর এ কাতর প্রার্থনা শুনে বললেন, হে রব, এ দেখি অচেনা দেশ থেকে আসা চেনা মানুষের ক্ষীণ কণ্ঠ! আল্লাহ তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন এবং তাঁকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করলেন। আল্লাহর ভাষায়: “অতঃপর আমরা তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম এবং দুশ্চিন্তা থেকে তাকে উদ্ধার করেছিলাম। আর এভাবেই আমরা মুমিনদেরকে উদ্ধার করে থাকি।” {সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ৮৮}

এমন ঘনঘোর বিপদে ইউনুস ‘আলাইহিস সালাম মাছের পেটে আল্লাহর তাছবীহ পড়তে লাগলেন এবং দো‘আ করতে থাকলেন। মাছ তাঁকে সমুদ্রতীরে উগড়ে দিল। এমন স্থানে যেখানে কোনো উদ্ভিদ বা ছায়া ছিল না। তিনি তখন শারীরিকভাবে একেবারে দুর্বল। আল্লাহ বলেন: “অতঃপর আমরা তাকে তৃণলতাহীন প্রান্তরে নিক্ষেপ করলাম এবং সে ছিল অসুস্থ। আর আমরা একটি ইয়াকতীন (লাউজাতীয়) গাছ তার ওপর উদগত করলাম।” {সূরা আস-সাফফাত, আয়াত : ১৪৫-১৪৬}

এটি এমন গাছ যা তাকে বড় পাতা দিয়ে ছায়া দেয় এবং তার গায়ে মাছি বসতে বাধা দেয়। নবী ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত যে তিনি লাউ পছন্দ করতেন এবং বাসনের পাশ থেকে খুঁজে নিয়ে খেতেন। অতঃপর আল্লাহ তাঁকে উম্মতের কাছে ফিরে যেতে নির্দেশ দেন। তারা তাঁকে সত্য বলে গ্রহণ করে এবং তাঁর প্রতি ঈমান আনে। তাদের সংখ্যা ছিল অন্যূন এক লাখ। এ হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর নবীকে সম্মানিত করা ও শ্রেষ্ঠত্ব দানের নমুনা। আর আমাদের নবী মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন উম্মতের সংখ্যার দিক দিয়ে সব নবীর সেরা। যেমন আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘প্রত্যেক নবীকেই এমন কিছু (অলৌকিক নিদর্শন) প্রদান করা হয়েছে যার অনুযায়ী তাঁর ওপর মানুষ ঈমান এনেছে। আর আমাকে যে নিদর্শন দেওয়া হয়েছে তা হলো অহী, যা আল্লাহ আমার ওপর প্রত্যাদেশ হিসেবে প্রেরণ করেছেন। (যা কিয়ামত পর্যন্ত অবিকল টিকে থাকবে)। সেহেতু আমি আশা করি আমি কিয়ামতের দিন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অনুসারীর অধিকারী হব।’ [বুখারী : ৪৯৮১]

এ হলেন ইউনুস ‘আলাইহিস সালাম। আল্লাহর একজন সম্মানিত নবী। আবদুল্লাহ ইবন ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: কারও জন্য এমন বলা সমীচীন নয় যে আমি ইউনুস ইবন মাত্তা থেকে উত্তম।’ [বুখারী : ৪৬০৩; মুসলিম : ২৩৭৬]

এমন সম্মানিত নবী সূরা নিসা ও আন‘আমে উল্লেখিত সম্মানিত নবীদের কাতারে যাকে রাখা হয়েছে আর যাদের সম্পর্কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অনুসরণের। আল্লাহর ভাষায়: “এরাই তারা, যাদেরকে আল্লাহ হিদায়াত করেছেন। অতএব তাদের হিদায়াত তুমি অনুসরণ কর।” {সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৯০}

আর ইউনুস ‘আলাইহিম সালামের এ ঘটনায় মহান অনুসরণ হলো ওই হিদায়াত বা পথনির্দেশ যার কথা আল্লাহ বলেছেন নিম্নোক্ত আয়াতে। আল্লাহ বলেছেন: “অতএব তুমি তোমার রবের হুকুমের জন্য ধৈর্যধারণ কর। আর তুমি মাছওয়ালার মত হয়ো না, যখন সে দুঃখে কাতর হয়ে ডেকেছিল।” {সূরা কলম, আয়াত: ৪৮}

অতএব দাওয়াতপ্রচারকদের কাজ হবে যে কোনো মূল্যে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাওয়া এবং এ পথে পাওয়া কষ্ট ও মিথ্যা অভিযোগে ধৈর্য ধরা। অটল অবিচল থাকা এবং বারবার সুপথে আহ্বান অব্যাহত রাখা।। মানুষ যতই বিমুখতা দেখাক তাদের সংশোধন থেকে নিরাশ না হওয়া। তাই রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসারীদেরও অবশ্য কর্তব্য হবে, ধৈর্যধারণ করা এবং সহ্য করা। অবিচল থাকা এবং অধ্যবসায় চালিয়ে যাওয়া। সর্বোপরি বারবার দাওয়াতের পুনরাবৃত্তি করতে থাকা। তেমনি তার জন্য বৈধ নয় মানুষের অন্তর সংশোধিত হওয়া বা হৃদয় সাড়া দেওয়ার ব্যাপারে হতাশ হওয়া। যতই তারা অস্বীকার বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করুক কিংবা অবাধ্যতা ও বিমুখতা দেখাক না কেন।

ডাকে সাড়া না দেওয়ায় মানুষের ওপর রাগ করা তো সংশোধন প্রত্যাশীদের জন্য সহজ বৈ কি। কিন্তু এটা তো সত্যকে সাহায্য করবে না। মুমিন তাই নিজের ক্রোধ হজম করে এবং চলমান থাকে। তার জন্য সবরই শ্রেয়। আর শেষ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য। আল্লাহর ভাষায়: “আর অবশ্যই আমরা জানি যে, তারা যা বলে তাতে তোমার অন্তর সঙ্কুচিত হয়। সুতরাং তুমি তোমার রবের প্রশংসায় তাসবীহ পাঠ কর এবং সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও। আর ইয়াকীন (মৃত্যু) আসা পর্যন্ত তুমি তোমার রবের ইবাদাত কর।” {সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৯৭-৯৯}

হে বিপন্ন ব্যথিত চিন্তিত ব্যক্তি, নবীদের দোয়ায় তোমার জন্য রয়েছে আদর্শ। ইমাম আহমদ ও তিরমিযী রহিমাহুমাল্লাহ সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন, সা‘দ ইবন আবী ওয়াক্কাছ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘মাছের পেটে করা জুন্নুনের (মাছওয়ালা অর্থাৎ ইউনুস ‘আলাইহিস সালামের) দো‘আ ‘আপনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই, আপনি সপ্রশংস মহান, নিশ্চয় আমি জুলুমকারীদের অন্তর্ভুক্ত।’ (উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লা আনতা ছুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনায যোলিমীন) এটি যে কোনো মুসলিম কোনো সময় পড়বে, আল্লাহ অবশ্যই তার দো‘আ কবুল করবেন।’ [তিরমিযী : ৩৫০৫; মুসনাদ আহমাদ : ১৪৬২]

আমাদেরকে অবশ্যই অমূল্য এ দো‘আটি ভেবে দেখা দরকার। এতে রয়েছে আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা, অংশীদারিত্বের অস্বীকৃতি ও নিজের যাবতীয় ভুলের স্বীকারোক্তি। (অতএব নিজের দো‘আ কবুলের জন্য এ তিন বৈশিষ্ট্য রক্ষা করে করা দরকার।)

ইমাম আহমদ (রা:) আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বিপদ বা দুশ্চিন্তায় পড়ে বলবে (দু‘আর উচ্চারণ), আল্লাহুম্মা ইন্নী ‘আব্দুকা অবনু ‘আব্দিকা অবনু ‘আমাতিকা, না-সিয়াতী বিয়য়াদিকা, মা-দ্বিন ফিইয়্যা হুকমুকা, আদলুন ফিইয়্যা ক্বাদ্বা-উকা, আসআলুকা বিকুল্লিস্মিন হুয়া লাকা, সাম্মাইতা বিহী নাফসাকা আউ আনযালতাহূ ফী কিতা-বিকা, আউ আল্লামতাহূ আহাদাম মিন খালক্বিকা, আও ইস্তা’’সারতা বিহী ফী ‘ইলমিল গাইবি ‘ইন্দাক; আন তাজ‘আলাল ক্বুরআ-না রাবী‘আ ক্বালবী অনূরা সাদরী অজালা-আ হুযনী অযাহা-বা হাম্মী।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, নিঃসন্দেহে আমি তোমার দাস, তোমার দাসের পুত্র ও তোমার দাসীর পুত্র, আমার ললাটের কেশগুচ্ছ তোমার হাতে। তোমার বিচার আমার জীবনে বহাল। তোমার মীমাংসা আমার ভাগ্যলিপিতে ন্যায়সঙ্গত। আমি তোমার নিকট তোমার প্রত্যেক সেই নামের অসীলায় প্রার্থনা করছি- যে নাম তুমি নিজে নিয়েছ। অথবা তুমি তোমার গ্রন্থে অবতীর্ণ করেছ, অথবা তোমার সৃষ্টির মধ্যে কাউকে তা শিখিয়েছ, অথবা তুমি তোমার গায়বী ইলমে নিজের নিকট গোপন রেখেছ, তুমি কুরআনকে আমার হৃদয়ের বসন্ত কর, আমার বক্ষের জ্যোতি কর, আমার দুশ্চিন্তা দূর করার এবং আমার উদ্বেগ চলে যাওয়ার কারণ বানিয়ে দাও। আল্লাহ তার দুশ্চিন্তা দূর করবেন এবং তার বিষাদকে হর্ষে বা আনন্দে পরিণত করে দেবেন।’ [মুসনাদ আহমাদ : ৪৩১৮]

একইভাবে আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, নবী ছাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিপদের সময় বলতেন: উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল আলীমুল হালীম, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রাব্বুল ‘আরশিল আযীম, লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রাব্বুস সামা-ওয়া-তি ওয়ারাব্বুল আরদি ওয়ারাব্বুল আরশিল কারীম।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মাবুদ নেই; যিনি সর্বজ্ঞ, সহিষ্ণু। আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; যিনি মহান ‘আরশের প্রতিপালক। আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য আরাধ্য নেই; যিনি আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী ও সম্মানিত ‘আরশের অধিপতি। [বুখারী : ৭৪২৬]

এ হলো দুশ্চিন্তা-টেনশনের নববী চিকিৎসা। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সঙ্গে এসব পড়বে, আল্লাহ তার অন্তর উন্মোচন করে দেবেন ফলে তার কষ্টের কারণ দূর হয়ে যাবে।

সুত্রঃ শেইখ ড. সালেহ আলে তালেবের খুতবা হতে অনুদিত

শয়তানের একটা চালাকির কথা বলছি শুনুন… Short Video

 

» Download 3GP «240p | » Download MP4 «720p

বক্তাঃ Nouman Ali Khan

প্রতিলিপি…

আমি আপনাদের শয়তানের একটা চালাকির কথা বলছি শুনুন। মনে করুন আপনার অফিসে যেতে দেরী হয়েছে এবং দেরী করার জন্য আপনার বস রাগ হয়ে আছেন।

অফিসে আরও অনেক মানুষ আছে। আপনি এরকম সময় কী করেন? আপনি সকলের নজর এড়িয়ে নিজের কিউবিকলে গিয়ে চুপচাপ বসে পড়েন।আপনি তখন বসের সাথে দেখা করতে চান না।

অথবা মনে করুন একটা বাজে রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আপনি বাড়ি ফিরলেন।যখন আপনি ক্লাস ৬ বা ৭ এ আর খারাপ রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসেন তখন আপনি চুপিসারে ঘরে ঢুকবেন। কোন “আসসালামু আলাইকুম” নেই কিছু না … চুপিসারে ঢুকে আপনি ঘুমের ভান করে পড়ে রইলেন।মা যদি জিজ্ঞেস করেন, “আজকে স্কুলে কী হোল?” আপনি বলবেন, “তেমন কিছু না।”

আপনি যখন কাউকে হতাশ করেন তখন তার থেকে দূরে দূরে থাকেন। এটাই স্বাভাবিক। এই ক্ষেত্রে, যখন আমরা অশ্লীল কাজ করি, নিজেদের উপর যুলম করি, তখন আমরা কাকে হতাশ করি? আল্লাহ আযযা ওয়াযালকে! আপনি আল্লাহ্‌কে অসুন্তষ্টি করেন। শয়তান তখন এর সুযোগ নেয়। আপনার কাছে এসে সে বলে যে তুমি এখন আবার সালাহ পড়তে যাবে? ভন্ড! তুমি এতসব অশ্লীল কাজ করে এখন আবার একটা ক্লাস করতে যাবে?এখন তুমি ইবাদত করতে যাবে? তুমি তো দু’মুখো মানুষ!

তখন সে বলে হ্যাঁ আমি তো দু’মুখো মানুষ; আমার সালাহ পড়া উচিত না। শয়তান আপনার গুনাহের সুযোগ নিয়ে আল্লাহর কাছ থেকে আপনাকে দূরে সরিয়ে রাখে। আপনি তখন আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে বিব্রত বোধ করেন।

কিন্তু একজন সত্যিকারের মুত্তাকী যখন ভুল কিছু করে তৎক্ষণাৎ সে কী করে? সে আল্লাহকে স্মরণ করে! যাকারুল্লাহ। ফা বা সুম্মাও আসেনি এখানে! “ফাসতাগফারু লিযুনুবিহিম।” তারপর তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয়। (৩:১৩৫)

এখানে যুনুব শব্দটা দিয়ে পাপ বোঝান হচ্ছে যা এসেছে যানাব থেকে। যানাব দিয়ে মূলত বোঝান হয় এমন একটা পাপ যার কারণে আপনি অসম্মানিত বোধ করেন। এমন কোন কাজ যার কারণে আপনি লজ্জিত। বিব্রত।

আর তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদের কৃত লজ্জাজনক কাজ থেকে। “ওয়া মান ইয়াগফিরুযযুনুবা ইল্লাল্লাহ।” আল্লাহ ছাড়া আর কে গুনাহ ক্ষমা করতে পারে? (৩:১৩৫)

আপনি আর কার কাছে যাবেন?আর কোথায় যাবেন? আল্লাহ ছাড়া আর কে জানে আপনি আর আমি কী কী ভুল করেছি? আমাদের গুনাহের খাতায় বহু জিনিস আছে যা আল্লাহ প্রকাশ করেননি।শুধু আল্লাহই সেসব জানেন। সেসবের জন্য আল্লাহর কাছে আমাদের ক্ষমা চাইতে হবে।

জান্নাতে যারা যাবে তাদের বর্ণনায় যেসব বৈশিষ্ট এসেছে তার মাঝে এটাই প্রধান বৈশিষ্ট।

“তাদেরই জন্য প্রতিদান হলো তাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে প্রস্রবণ যেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। যারা কাজ করে তাদের জন্য কতইনা চমৎকার প্রতিদান। (৩:১৩৬)

এখনে যে শেষ কথাটি আপনাদের বলব, আমি আমার ফ্যামিলির সাথে একবার শপিং মলে গিয়েছিলাম।সেখানে এক মা তার ছেলেকে ভীষণ বকা দিচ্ছিল আর ছেলেটা চিৎকার করে কাঁদছিল।মা ছেলেকে কষে একটা চড়ও বসিয়ে দিল। কিন্তু আপনি জানেন বাচ্চাটা তারপরও কার কাছে গেল? এর পরও বাচ্চাটা মাকেই ধরে রইল।তার মাকে ছাড়ছে না
চারপাশে সব কিম্ভূতকিমাকার বিশাল বিশাল অচেনা মানুষ। সে তাদের কাছে যেতে চায় না।যদিও তার মা তার উপর রাগ হয়েছে, হতাশ হয়েছে, তাকে বকা দিচ্ছে কিন্তু তার আশ্রয়, সুরক্ষা সে কার কাছে পাবে? তার মায়ের কাছেই!

এই দৃশ্য আমাকে ভাবিয়েছে সুবহানাল্লাহ, যখন আপনি আমি গুনাহ করি যখন আমরা আল্লাহকে হতাশ করি, তাঁর অবাধ্য হই, আমরা কার কাছে যাব? আমাদের আর কোথায় যাওয়ার আছে! তাই আমরা আল্লাহকে অসুন্তষ্টি করলেও, আর আল্লাহ আমাদের যেমন দেখতে চান তেমন আমরা হতে না পারলেও সত্যিকারের মুত্তাকী কখনোই আল্লাহর উপর আশা হারায় না।আল্লাহর উপর আশা হারানোর অনুমতি তিনি আমাদের দেননি।
এই আচরণ আমাদের রপ্ত করতে হবে।

প্রতিলিপি অনুবাদ করেছেনঃ রাবেয়া রাওশিন

Courtesy: NAK Bangla

পাঁচটি মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ

Creative Commons: Attribution-Noncommercial-No Derivative Works 3.0 Unported

ভাষাগত সম্পাদনা: কাউসার বিন খালেদ | ওয়েব গ্রন্থনা: আবুল কালাম আযাদ আনোয়ার

পাঁচটি মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ

পাঁচটি অতি জরুরি বস্তুর সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে সকল শরিয়ত একমত। সব শরিয়তই এ বিষয়গুলোর প্রতি খুব যত্ন নিয়েছে। ইমাম শাতবী রহ. বলেন : সকল উম্মত বরং সকল জাতি ও ধর্ম এ বিষয়ে একমত যে, শরিয়তের প্রবর্তনই হয়েছে অতি প্রয়োজনীয় পাঁচটি বস্তুর সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। বস্তু গুলো হচ্ছে: (১) দ্বীন (২) জীবন ও প্রাণ (৩) বংশধর (৪) সম্পদ () এবং বোধ-বুদ্ধি।

যারা আল্লাহর কিতাব কোরআনুল কারীম গবেষণা ও অধ্যয়ন করেন তারা অবশ্যই দেখতে পাবেন যে আল্লাহ তাআলা অনেক স্থানে বহুবার তিনটি মারাত্মক কবীরা গুনাহকে এক সাথে মিলিয়ে বর্ণনা করেছেন। সেগুলো হচ্ছে-শিরক, হত্যা, এবং যিনা-ব্যভিচার। কারণ এ তিনটি বস্তুই কদর্যতা, জাতি-বিনাশ এবং প্রজন্ম-ধ্বংস করার দিক থেকে এক ও অভিন্ন। এগুলোর মাধ্যমেই সুস্থ প্রকৃতি, সচ্চরিত্র ও মূল্যবান প্রাণের অপমৃত্যু ঘটে। যে সমাজে এসব মারাত্মক অপরাধের বিস্তার ঘটে সে সমাজ মূলত ধ্বংস ও বিনাশের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। কারণ সে সমাজ মৌলিক সামাজিক অবকাঠামোই হারিয়ে ফেলে। এ কারণে অতীতের অনেক সভ্যতা বিলুপ্ত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে, পরবতীতে আর কখনো অস্তিত্বে আসতে পারেনি। এত দ্রুত পতন ও বিধ্বস্ত হওয়ার কার্যকারণ অনুসন্ধান ও উদ্‌ঘাটন করলে দেখা যায় ঐ জরুরি বিষয়গুলোর সংরক্ষণ ও যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে শৈথিল্য প্রদর্শন ও অবহেলাই একমাত্র কারণ। সুতরাং শরিয়তের ভিত্তি এ জরুরি বস্তুগুলোর উপর অহেতুক হয়নি বরং এটিই তাৎপর্যপূর্ণ এবং কল্যাণময়।
সম্মানিত পাঠক ! আমরা এখানে প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি। গুরুত্বের বিবেচনায় এবং শরিয়তের বিন্যাসের আলোকে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে।

প্রথমত: দ্বীনের সংরক্ষণ

দ্বীনের কল্যাণ ও উপকার, সকল কল্যাণ ও উপকারের ঊর্ধ্বে, দুনিয়া ও আখেরাতের সকল বিষয় সঠিক ও কল্যাণকর হওয়া নির্ভর করে দ্বীনের উপর। দ্বীন ব্যতীত বান্দার কোন বিষয়ই সঠিক ও নির্ভুল হতে পারে না। ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি যে, দ্বীনের সংরক্ষণ অতীব জরুরি-এমর্মে সকল বিষয়ই হচ্ছে দ্বীন। আর কোরআন ও সুন্নাহ দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরার জন্য আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে আদেশ প্রাপ্ত হয়েছি। আল্লাহর এ আদেশ বাস্তবায়ন করার জন্য দুটি কাজ করা জরুরি। ঐ দুই কাজ ব্যতীত উক্ত আদেশ (কোরআন ও সুন্নাহ আঁকড়ে ধরা) পালন হয়েছে বলে প্রমাণ করা যাবে না। কাজ দুটোর একটি হচ্ছে الفعل বা করা। দ্বিতীয়টি الترك বা পরিহার ও বর্জন করা। الفعل বা করা এর মর্মার্থ হচ্ছে দ্বীনের আরকান কায়েম করা ও ভিত্তি গুলো প্রতিষ্ঠিত করা। এটি আমলের মাধ্যমেও হতে পারে আবার হুকুমের মাধ্যমেও, দাওয়াতের মাধ্যমেও হতে পারে, আবার জিহাদের মাধ্যমেও। মোটকথা আল্লাহ তাআলার নির্দেশ গুলো যে কোন ভাবে বাস্তবায়ন করা।

আর الترك দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, ক্ষতিকর ও অনৈতিক কার্যাদি পরিহার করা। এবং যে সকল কাজের মাধ্যমে দ্বীনের ভিতর ঘাটতি ও ত্রুটি সৃষ্টি হয় যেমন বেদআত ও এ জাতীয় গুনাহ বা দ্বীন বিলকুল বিনষ্ট হয়ে যায় যেমন স্বধর্ম ত্যাগ করা বা মুরতাদ হয়ে যাওয়া-ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকা। মহান আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুকম্পা ও রহমত যে, তিনি দ্বীন সংরক্ষণের উপায় হিসাবে অনেকগুলো পন্থার অনুমোদন এবং অনেকগুলো আইনের প্রবর্তন করেছেন। এখানে অল্প কয়েকটির আলোচনা করা হল।

(১) ইবাদত ও নেক কাজ অপরিহার্য ভাবে করা এবং গুনাহ ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান। আল্লাহ তাআলা বলেন: “এবং নিশ্চিত এটি আমার সরল পথ। সুতরাং তোমরা এ পথে চল এবং অন্যান্য পথে চলো না। তাহলে সে সব পথ তোমাদেরকে তার পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা সংযত হও।”  [সূরা আনআম:১৫৩]
(২) দ্বীনের মধ্যে নতুন বিষয় আবিষ্কার বেদআতের প্রচলন করার বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং বেদআতপন্থী, জাদুকর ও এ জাতীয় ভণ্ড পাপীদের শাস্তি প্রদানের ঘোষণা প্রদান।
(৩) ধর্মত্যাগী মুরতাদদের হত্যার বিধান।
(৪) জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের হুকুম।

দ্বিতীয়ত: জীবনের হেফাজত

জীবন ও প্রাণের হেফাজত একটি অতীব জরুরি ও মৌলিক বিষয়। আল্লাহ তাআলা মানুষের উপর বিভিন্নভাবে অনুগ্রহ করেছেন। তাদেরকে অস্তিত্বহীনতা থেকে অস্তিত্বে এনেছেন। পরিপূর্ণ অবয়ব ও সুন্দর কাঠামোতে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর কৃতজ্ঞতা ও শুকরিয়া আদায়কল্পে অবশ্যই জীবনের নিরাপত্তা ও হেফাজতের যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এবং যে সকল জিনিস জীবনকে পরিপূর্ণ রূপে বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে বা বিপন্ন করে তা থেকেও নিজেকে রক্ষা করতে হবে। এ কারণেই নিজেকে হত্যা করতে পারবে না এবং হত্যার কারণও হতে পারবে না। সাথে সাথে অপরের ক্ষতি করা যাবে না যার ফলে নিজের জীবন দিতে হয়। হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। এসব বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “তোমরা নিজেদের হত্যা কর না নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি দয়াবান। [সূরা নিসা : ২৯]। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন: “যে ব্যক্তি স্বেচ্ছা ক্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম। তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাআলা তার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন। তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। [সূরা নিসা: ৯৩]

কাউকে হত্যা করা হাদিসে বর্ণিত ধ্বংসাত্মক সাত কাজের একটি। নবী সা. হত্যার ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন: মোমিন সব সময় তার দ্বীনের ব্যাপারে নিরাপদে থাকবে যতক্ষণ না সে অবৈধ ভাবে প্রাণ সংহার না করে।

তৃতীয়ত: বংশধরের হেফাজত

সন্তান ও বংশধরের হেফাজত জীবনের মৌলিক অতীব প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর অন্যতম। এটি ধরাপৃষ্ঠ আবাদের অন্যতম প্রধান সহায়ক। উম্মতের শক্তি ও বল এর মধ্যেই নিহিত। এ জন্যই ইসলাম দু ভাবে বংশধর হেফাজতের গুরুত্ব দিয়েছে।

(১) ইতিবাচক দিক: আর সেটি বংশধরের ধারা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে চলমান রাখা ও বংশ বিস্তারের পরিধি বিস্তৃত ও বৃদ্ধি করার উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে। যেমন বিবাহের নির্দেশ দান, বিভিন্ন ভাবে এর প্রতি উৎসাহিত করা।
(২) নেতিবাচক দিক: আর তা যিনা ব্যভিচার হারাম করে। তার উপর কঠোর শাস্তি প্রদান এবং দৃষ্টি, সহ অবস্থান, অবাধ মেলামেশা জাতীয় যিনার প্রতি আকৃষ্ট কারী উপায় উপকরণ হারাম ও নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে। আল্লাহ তাআলা বলেন: হে নবী আপনি মোমিনদেরকে বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে, নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাজত করে। তারা যেন ঢেকে রাখে যা সাধারণত: প্রকাশমান, তাছাড়া নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন স্বীয় মাথার উড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে। (সূরা নূর:৩০-৩১)

প্রজ্ঞাময় মহান রব্বুল আলামীনের বিশেষ একটি প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা হচ্ছে, তিনি নারী পুরুষ উভয়ের মাঝে এমন এক প্রকৃতি ও মেজাজ স্থাপন করেছেন যার মাধ্যমে সাময়িকভাবে মানব ধারার অস্তিত্ব ও স্থায়িত্ব চলমান থাকবে। এবং সাথে সাথে তাকে কিছু নিয়মনীতি দ্বারা শর্তাধীন করেছেন যা মানুষকে আল্লাহর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন করতে বাধা প্রদান করে এবং অবাধ্যতার লাগাম টেনে ধরে। যেমন সমকামিতা বা নিজের যিনার অপবাদ দিয়ে মানুষের সম্মান বিনষ্টে প্রবৃত্ত হওয়াকে হারাম করেছেন। এবং প্রজ্ঞাময় বিধান প্রতিকারের জন্য প্রথমেই ভয়ানক শাস্তির রাস্তা গ্রহণ করেননি। বরং এর পূর্বেও নিষিদ্ধ ও হারাম কর্মে পতিত হওয়া থেকে প্রতিহত কারী কিছু বিশেষ ও শক্তিশালী নিয়ম-নীতি প্রবর্তন করেছেন যার মাধ্যমে উক্ত শাস্তি যোগ্য অপরাধে জড়িত হওয়া থেকে বিরত থাকতে পারবে। সুতরাং বিধান দিয়েছেন এবং সাথে সাথে আদব ও শিষ্টচারের প্রতিও পথ প্রদর্শন করেছেন। যেমন দৃষ্টি অবনত করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। অপরিচিত নারী পুরুষ নির্জনে একত্রিত হওয়াকে হারাম করেছেন। নারী পুরুষের সহ অবস্থান ও মেলা মেশা, নারীদের খোলামেলা বের হওয়া এবং মুহরিম ব্যতীত সফর করা-ইত্যাদিকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছেন।

চতুর্থত: বিবেক ও বোধবুদ্ধির হেফাজত

বোধবুদ্ধি ও বিবেক আল্লাহ তাআলার বিশেষ দান ও বিশাল অনুগ্রহ। আল্লাহ তাআলা এ নেয়ামত শুধু মানুষকে দান করে অন্যান্য জীব জন্তু থেকে তাকে স্বতন্ত্র ও সম্মানিত করেছেন। মানুষ যখন বোধশক্তি হারিয়ে ফেলে তখন সে চতুষ্পদ জন্তুর মত হয়ে যায়। বিবেকের যত্ন নেয়া, হেফাজত করা এবং তাকে সুস্থ ও সচল রাখার আগ্রহ ও বাসনা প্রত্যেক মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য, তার প্রকৃতিতেই এ ধারা গেড়ে দেয়া হয়েছে এবং সকল ধী সম্পন্ন মানব সন্তান সব সময় এ চর্চা করে আসছে। সকল শরিয়ত বিবেকের হেফাজত ও তার প্রতি যথাযথ যত্ন নেয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে, মানুষকে শরিয়তের মুকাল্লাফ তথা দায়িত্বশীল বানানোর ক্ষেত্রে বিবেকই হচ্ছে মূল কেন্দ্র-বিন্দু। সে বিবেকের মাধ্যমেই উপকারী ও অপকারীর মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। তাইতো বিবেকহীন ব্যক্তিকে শরিয়তের দায়িত্বশীল বানানো হয় না। এজন্যই আল্লাহ তাআলা যে সকল দ্রব্য বিবেককে ধ্বংস অথবা ত্রুটি যুক্ত করে দেয় তাকেও হারাম করেছেন।

বিবেক বিনষ্ট কারী জিনিস প্রথমত দুই প্রকার:

(১) حسي যা দেখা যায় ও অনুভব করা যায়। যেমন মাদক ও মাদকদ্রব্য। এগুলোই হচ্ছে সকল অনিষ্টের মূল চাবি-কাঠি। এগুলোর কারণে কত বিবেক নষ্ট হচ্ছে, কত অকল্যাণ সাধিত হচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই। মদের জঘন্য অপকারিতা সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বর্ণনা করেছেন: “শয়তান তো চায় মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে তোমাদের বিরত রাখতে। অতএব তোমরা এখনও কি নিবৃত হবে না?[সূরা মায়েদা : ৯১]
(২) معنوي আত্মিক, যা বাহ্যত দেখা যায় না। তবে বিবেক বিনষ্ট করে। যেমন : মহান আল্লাহ তাআলার কুদরত ও ক্ষমতা অসীম তার জ্ঞান ও ক্ষমতার কোন সীমারেখা নেই। এরূপ অনেক বিষয় আছে যা আল্লাহর সাথে নির্দিষ্ট। মানুষ চিন্তা করে সেগুলো করতে পারে না। এবং তাতে মানুষের কোন ফায়দাও নেই। এরূপ বিষয়ে যদি মানুষ চিন্তা ও কল্পনা শুরু করে দেয় যে গুলোর সমাধান খুঁজে পাওয়া মূলত তার ক্ষমতার বাইরে তাহলে আস্তে আস্তে তার বিবেক লোপ পেতে থাকে এবং বোধ ও অনুভূতি নষ্ট হতে শুরু করে। সুতরাং এরূপ অসার চিন্তা ভাবনার মাধ্যমেও মানুষের বিবেক নষ্ট হয়। সুতরাং বিবেক নষ্ট হওয়ার কারণ দুইটি। মদ ও মাদক দ্রব্যে আক্রান্ত হওয়া। অহেতুক ও ক্ষমতার বাইরের বিষয় নিয়ে চিন্তা গবেষণায় প্রবৃত্ত হওয়া। অতএব বিবেকের সংরক্ষণের জন্য এ উভয়প্রকার বিধ্বংসী কার্যকারণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

পঞ্চমত: মাল সম্পদের হেফাজত

সম্পদ মানব জীবনের এমন একটি প্রয়োজনীয় জিনিস যা ব্যতীত মানুষ জীবনের সার্থকতা খুঁজে পায় না, চলার গতি ঠিক থাকে না। বরং সম্পদ ব্যতীত মানুষ বাঁচতেই পারে না। সম্পদ জীবনের নার্ভ ও শিরা। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন যাত্রার অবলম্বন করেছেন তা অর্বাচীনদের হাতে তুলে দিয়ো না। বরং তা থেকে তাদেরকে খাওয়াও।[সূরা নিসা: ৫]

ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত সব ক্ষেত্রেই সম্পদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। মাল ও সম্পদ বলতে এখানে প্রত্যেক ঐ জিনিসকেই বুঝানো হয়েছে যার দ্বারা মানুষ নিজেদের প্রয়োজন পূর্ণ করে, জমা করে, সঞ্চয় করে এবং ভোগ করে, এটি দ্রব্য সামগ্রীও হতে পারে আবার অর্থ কড়ি ও হতে পারে এ জাতীয় অন্য কিছুও হতে পারে। শরিয়ত সম্পদকে দুই ভাবে সংরক্ষণ করেছে:

(১) ইতিবাচক পদ্ধতিতে: আর সেটি সম্পদ উপার্জন অনুমোদিত পন্থায় খরচ করার উৎসাহ দেয়ার মাধ্যমে।
(২) নেতিবাচক পদ্ধতিতে: আর সেটি সম্পদ উপার্জন ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন ও বাড়া বাড়িকে হারাম, এ পন্থা রোধ এবং চোর বাটপার দুর্নীতি বাজদের শাস্তি ও দণ্ডবিধান প্রবর্তনের মাধ্যমে।

শরীয়তে ইসলামিয়া অপরাধের বিপরীতে দণ্ডবিধান করার ক্ষেত্রে একটি মাপকাঠি ও ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা রেখেছে যে, যে অপরাধের শাস্তি যতটুকু হলে অপরাধ বন্ধ হবে এবং অপরাধের মাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে ঠিক ততটুকু শাস্তিরই বিধান করা হয়েছে একটুও বাড়াবাড়ি করা হয়নি। আর হবেই না বা কেন ? এ যে প্রজ্ঞাময় বিচক্ষণ, সর্বজ্ঞ আল্লাহ তাআলার প্রবর্তন।

ইসলামে হিজাবের বিধান আরোপের কারণ যৌন কামনা রোধ করা নয়

revolution change yourself vintage hijab style yulia rahmawati (1)

প্রশ্ন:

আপনাদের ধর্ম বা সংস্কৃতিতে নারীদের যে আবরণ পরতে হয় আমি সে ব্যাপারে জানতে আগ্রহী। এই পোশাক আমাদের খ্রিষ্টানদের কাছে সত্যিই খুব অসার মনে হয়। কারণ এটি এমন ইঙ্গিত করে যেন একজন নারী ভাবে সে এই পোশাক না পরলে প্রতিটা পুরুষ তাকে কামনা করবে। আরও ইঙ্গিত করে যে সৌন্দর্যের কারণে আপনার ধর্মের বা সংস্কৃতির অনুসারী কোন নারীর ক্ষেত্রে পুরুষদেরকে বিশ্বাস করা যায় না। কারণ আপনি মনে করছেন যে আপনাকে কামনা করা হবে। কিন্তু কেউ সুন্দর হতেই পারে; তাই বলে প্রতিটা পুরুষ তাকে কামনা করবে এমন তো নয়। আপনি কি এ ব্যাপারে কিছু আলোকপাত করতে পারেন? আমি আপনাকে সত্য করেই বলব আমি যখন এই পোশাক পরা কোন নারীকে দেখি আমার মনে হয়, “কত অসার তুমি?”

উত্তর:

উত্তরের জন্য আপনাকে আগেই ধন্যবাদ দিয়ে রাখছি।
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। প্রথমেই আমরা আপনাকে আপনার অকপটতা, সুস্পষ্ট প্রশ্ন ও প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা আশা করি নিচে যে সামান্য কিছু কথা আমরা তুলে ধরব এর মাঝে আপনি আপনার উত্তর খুঁজে পাবেন।

আমরা উত্তরের শুরুতে আপনাকে একটা প্রশ্ন করতে চাই, যার উত্তর আপনাকে দিতে হবে এবং তারপর আল্লাহর ইচ্ছায় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আপনার কাছে পরিষ্কার হবে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে- আপনি কি মনে করেন যদি একজন নারী তার সমস্ত কাপড় খুলে লন্ডন বা প্যারিসের মার্কেটগুলোতে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়ায় তাহলে আপনি সেটা মেনে নিবেন অথবা সেখানকার কর্তৃপক্ষ বা আইন তাকে সেটা করতে দিবে?

আমরা মনে করি, খুব সম্ভবত আপনার উত্তর হবে- না, আপনি তা মেনে নিবেন না। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা একদমই অনুমোদন করবে না। এটা সে দেশে বসবাসরত সবাই জানে।

যদি আমরা আরও এক ধাপ এগিয়ে আপনাকে জিজ্ঞেস করি, যদি সে তার শরীরের নিম্নাংশের বিশেষ অঙ্গটা আবৃত করে শরীরের উর্ধ্বাংশ খোলা রেখে শপিং এ বের হয়? আমাদের মনে হয় আপনি এবারও একমত হবেন যে, এমন ব্যবহার অভদ্রতা ও অসম্মানজনক এবং প্রচলিত আদবের লঙ্ঘন।

এখন যারা স্থুলভাবে নিজেদের প্রকাশ করে তাদের কথা ছাড়ুন; আপনার কি মনে হয় যদি একজন নারী তার ঘুমের পোশাক পরে রাস্তায় বা লোকালয়ে আসে…?

সম্ভবত আপনি জানেন যে পশ্চিমা দেশে যারা সাঁতারের পোশাক পরে লোকালয়ে আসে তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের আপত্তি জানানোর অধিকার আছে এবং কোম্পানির ম্যানেজার বা অফিসের কর্মকর্তার কর্মক্ষেত্রে নারী কর্মচারীকে খোলামেলা, উস্কানিমূলক পোশাক পরা প্রতিহত করার অধিকার আছে এবং প্রচলিত, শালীন পোশাক পরা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক।

এখন আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে- আপনি কি মনে করেন এসব দেশ, মানুষ, প্রতিষ্ঠান, আইন ও রীতি-নীতি আপনার কথা অনুযায়ী অসার ও তারা যৌনতায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে? অথবা আপনি কি মনে করেন তারা ঘৃণ্য অন্যায়কারী; যাদের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের স্বাধীনতা হরণ করা এবং এমন কাজ যৌনতায় মত্ত হয়ে থাকা মানুষ ছাড়া আর কারও পক্ষে করা সম্ভব না? আপনি কি মনে করেন যদি একজন নারী তার বুক কিংবা বিশেষ অঙ্গ খোলা রাখে অথবা সাতারের পোশাকে লোকালয়ে আসে তাহলে সমস্ত পুরুষ তাকে কামনা করবে অথবা তাকে পতিতা মনে করবে কিংবা ভাববে সে তাদেরকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে?

আপনি যদি বলেন, এই দুইটা দৃশ্যের মাঝে পার্থক্য আছে- লোকালয়ে নগ্নতা নিঃসন্দেহে অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু চুল আর মুখ খোলা রাখা উস্কানিমূলক নয়; বরং স্বাভাবিক ব্যাপার। আর এটাতে আইনও লঙ্ঘন হয় না। তাহলে আমরা আপনাকে বলবঃ আমি আর আপনি নির্ধারণ করার কে শরীরের কোন অংশ উন্মুক্ত রাখা যাবে, আর কোন অংশ উন্মুক্ত রাখা যাবে না? আপনি কেন চাইছেন আপনার নির্ধারিত সীমা আমরা মেনে নিব, যেখানে আপনি ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী নির্ধারিত সীমা মেনে নিতে রাজি নন?

অধিকন্তু, কেন একটা নির্দিষ্ট সমাজ যেমন ধরুন পশ্চিমা সমাজ নির্ধারণ করবে কোনটা অন্যদের জন্য মানানসই; আর কোনটা মানানসই নয়?

আপনি যদি মনে করেন প্রকাশ্যে নগ্নতা ও স্বল্প পোশাক পরা নিষিদ্ধ করা মানে আপনি আপনার প্রশ্নে যা যা বলেছেন তা না, তাহলে আমরা আপনাকে বলব যে আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি শালীন পোশাক হচ্ছে এই হিজাব যা মুসলিম নারীদের পরতে দেখে আপনি তাদেরকে “অসার” বলে অভিযুক্ত করছেন।

কেন আপনি হিজাব পরাকে শালীনতা হিসেবে দেখছেন না? নাকি আপনি মনে করছেন এটি সাধারণ রুচি, আদব ও নৈতিকতা বিরুদ্ধ? যদি তা মনে করেন থাকেন তাহলে আপনি নিজের বা নিজ সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্য সমাজ বা মানুষকে বিচারের মানদণ্ড মনে করছেন কেন?

কেন আপনি এই বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রত্যাখ্যান করে আপনার দেয়া শালীনতার ব্যাখ্যা মেনে নিতে বলছেন? একজন নারী যদি তার উরু বা পেট খোলা রাখে তাহলে সেটা কি শালীনতা? নাকি তার শুধুমাত্র নিজের হাত আর পা উন্মুক্ত রাখার মাঝেই একে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত? এই বিষয়ে আপনার দিকনির্দেশনা কি? আপনার কি অধিকার আছে সমস্ত মানবতাকে আপনার নিজস্ব ধারণা মেনে নিতে বাধ্য করার?

এটা কি সাদা মানুষদের অবশিষ্ট “অধিকার”? অথবা এভাবেও বলতে পারি এটা কি শুভ্র বা স্বর্ণকেশী নারীর পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করা ও পৃথিবীর ধ্যান-ধারণা, রীতি, আদব আর রুচিকে নির্ধারণ করার একক পন্থা?

কেন আপনি কুমারী মেরী (আঃ)-কে “অসার” বলেন না? প্রশ্নে আপনি যে কারণ দেখিয়েছেন সে অনুযায়ী তো তিনিও অসার। আপনি জানেন যে তিনি এক ধরণের হিজাব পরতেন। তিনি কি আপনার ব্যাখ্যা অনুযায়ী শালীনতাকে যৌনতার সাথে সম্পর্কিত কিছু ভেবেছিলেন?

কেন গির্জার মহিলারা গির্জার কাজকর্মের সময় ও প্রার্থনার সময় তাদের চুল ঢেকে রাখে?

প্রার্থনারত অবস্থা আর প্রার্থনার বাহিরের অবস্থার মাঝে পার্থক্য কি? যদি প্রার্থনার সময় হিজাব করলে ভক্তি আর বিশ্বাস বাড়ে, তাহলে কেন একজন নারী প্রার্থনার বাইরে তার ভক্তি আর বিশ্বাসের একাংশকে সরিয়ে রাখবে?

কোরিন্থীয়দের প্রতি দূত পল প্রথম এপিস্টলে যা বলেছেন তার প্রতি কেন আপনি অসারতার অভিযোগ আনেন না? তিনি বলেছিলেন: “কিন্তু যে স্ত্রীলোক মাথা না ঢেকে প্রার্থনা করে বা ভাববাণী পড়ে সে তার নিজের মাথার অপমান করে — এটি সে স্ত্রীলোকের মাথা ন্যাড়া করে ফেলার তুল্য। স্ত্রীলোক যদি তার মাথা না ঢাকে সে যেন তার মাথার চুল কেটে ফেলল। কিন্তু স্ত্রীলোকের পক্ষে যদি চুল কেটে ফেলা বা মাথা ন্যাড়া করা লজ্জার বিষয় হয় তবে সে তার মাথা ঢেকে রাখুক। আবার পুরুষ মানুষের মাথা ঢেকে রাখা উচিত নয়। কারণ সে ঈশ্বরের স্বরূপ ও মহিমা প্রতিফলন করে। কিন্তু স্ত্রীলোক হলো পুরুষের মহিমা।কারণ স্ত্রীলোক থেকে পুরুষের সৃষ্টি হয়নি; কিন্তু পুরুষ থেকেই স্ত্রীলোক এসেছে। স্ত্রীলোকের জন্য পুরুষের সৃষ্টি হয়নি; কিন্তু পুরুষের জন্য স্ত্রীলোকের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে এবং স্বর্গদূতগণের জন্য অধীনতার চিহ্ন হিসেবে একজন স্ত্রীলোক তার মাথা ঢেকে রাখবে।” [১ করিন্থীয়ানস ১১:৫-১০ – নতুন আন্তর্জাতিক সংস্করণ]

টিমোথির প্রতি পলের প্রথম এপিস্টলে বলা হয়েছে: “অনুরূপভাবে আমি চাই নারীরা যেন ভদ্রভাবে ও যুক্তিযুক্তভাবে উপযুক্ত পোশাক পরে তাদের সজ্জিত করে। তারা যেন নিজেদের শৌখিন খোঁপা করা চুলে বা সোনা মুক্তোর গহনায় বা দামী পোশাকে না সাজে। কিন্তু সৎকাজের অলঙ্কারে তাদের সেজে থাকা উচিত। যে নারী নিজেকে ঈশ্বরভক্ত বলে পরিচয় দেয় তার এভাবেই সাজা উচিত। নারীরা সম্পূর্ণ বশ্যতাপূর্বক নীরবে নতনম্র হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করুক। আমি কোন নারীকে শিক্ষা দিতে অথবা কোন পুরুষের ওপরে কর্তৃত্ব করতে দিই না; বরং নারী নীরব থাকুক।” [১ টিমোথি ২:৯-১২ – নতুন আন্তর্জাতিক সংস্করণ]

উপরন্তু, একজন নারীর শালীনতা ও সদাচারের চিহ্ন হিসাবে বাইবেলে নিকাব (মানে যা দিয়ে মুখ ঢাকা হয়) এর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

জেনেসিসে বলা হয়েছে: “একদিন সন্ধ্যায় ধ্যান করার জন্য ইসহাক একান্তে নির্জন প্রান্তরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ইসহাক চোখ তুলে দেখলেন যে দূর থেকে উটের সারি আসছে। রিবিকাও ইসহাককে দেখতে পেলেন। তখন সে উটের পিঠ থেকে লাফিয়ে নেমে পড়ল। ভৃত্যকে জিজ্ঞেস করল, “কে ঐ তরুণ মাঠের মধ্যে দিয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে?” ভৃত্য উত্তর দিল, “ঐ আমার মনিবের পুত্র।” শুনে রিবিকা ওড়না দিয়ে তার মুখ ঢেকে নিল।” [জেনেসিস ২৪:৬৩-৬৬ – নতুন আন্তর্জাতিক সংস্করণ]

আমাদের পক্ষে এখানে এর চেয়ে বেশি উদ্ধৃতি দেয়া সম্ভব নয়। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের গবেষণা রয়েছে। আপনি সেসব খুঁজে পড়ে দেখতে পারেন।

আমরা আপনার সাথে শুধু যুক্তিতর্ক দিয়ে, নিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে এবং আলোচনা-সমালোচনার একটি স্বচ্ছ ভিত্তি থেকে বিষয়টি পর্যালোচনা করার চেষ্টা করছি। “অসারতার” অভিযোগ আমরা করতে চাই না। একজন প্রতিপক্ষের জন্য এমন দাবী করা খুব সহজ। আর যে কেউ এমন দাবী খণ্ডন করতে সক্ষম।

আমরা আপনাকে নিশ্চিত করছি যে ইসলামী শরিয়তে হিজাব বাধ্যতামূলক এ কারণে নয় যে, যেসব নারী হিজাব পরে না তারা সবাই চরিত্রহীন। অথবা এ কারণে নয় যে, হিজাব না পরলে সমস্ত পুরুষ একজন নারীর দিকে খারাপ দৃষ্টিতে বা কু মতলবে তাকাবে। ইসলামী সমাজ মানুষকে পরিবারে, রাস্তায়, স্কুলে, মসজিদে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব জায়গায় সৎকর্মশীল ও ধার্মিক হতে শেখায়। বাস্তব সত্য হচ্ছে ইসলামের অনেক অনুশাসন মানুষকে সদ্ব্যবহার, ভদ্রতা, সচ্চরিত্রতা ও নম্রতার প্রতি এতটাই উদ্বুদ্ধ করে যে এটা বহু মানুষকে অনৈতিক কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে।

তবে যে কোন বিধান আরোপের ক্ষেত্রে ইসলাম শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের দিকটাই দেখে না; বরং সংখ্যায় কম হলেও সমাজে যে কিছু অপরাধী রয়েছে সেটাও বিবেচনায় রাখে। যেন সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সুস্থ জীবনধারা নিশ্চিত করা যায় এবং সংখ্যালঘু মানুষ অনৈতিকতার বিস্তার ঘটিয়ে তাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে না পারে। ঠিক যেমনভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর কর্তৃপক্ষ যদি বিকৃত মনের মানুষদের, সমকামীদের আর স্ট্রিপ ক্লাবের খদ্দেরদের রাস্তায় বা লোকালয়ে কোন বাধা না দিয়ে তাদের যা খুশি করতে দেয়, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই কল্পনা করতে পারছেন সেইসব সমাজের পরিণতি কি হতে পারে!!

এখানে আমরা আরও একটা উদ্ধৃতি উল্লেখ করতে চাই যেখানে বলা হয়েছে কোন নারীর নিকাব (যা দিয়ে মুখ ঢাকা হয়) তা অপসারণ করে তার চেহারা অনাবৃত করার চেষ্টা করা এক ধরণের অপকর্ম।

ড্যানিয়েল বইয়ের ক্যাথলিক সংস্করণে বলা হয়েছে: “এখন, সুজানা ছিল খুব মার্জিত ও সুন্দরী এক রমণী। যেহেতু সে অবগুণ্ঠিত ছিল, দুর্বৃত্তরা তার অবগুণ্ঠন সরাতে আদেশ দিল যেন তারা চোখ দিয়ে তার সৌন্দর্য আস্বাদন করতে পারে।” [ড্যানিয়েল ১৩:৩০-৩১ – নিউ রিভাইসড স্ট্যান্ডার্ড এডিশন]

কোন মন্তব্য নেই!

সবশেষে, আমরা আপনাকে নারীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিসংখ্যানগুলোর প্রতি নজর দেয়ার অনুরোধ করছি। এ পরিসংখ্যান থেকে নারীর উপর নানা রকম আক্রমণ যেমন- ধর্ষণের যে সংখ্যা আপনি পাবেন সেটা রীতিমত আতঙ্কিত হওয়ার মতো। আমেরিকার যৌন আক্রমণ বিরোধী সবচেয়ে বড় সংস্থা RAINN (Rape, Abuse and Incest National Network) এর তথ্য অনুযায়ী আমেরিকাতে প্রতি দুই মিনিটে একটা যৌন আক্রমণের ঘটনা ঘটে। যার অর্থ হচ্ছে- বছরে যৌন আক্রমণের ২০৭,৭৫৪টা ঘটনা ঘটে। এই সংখ্যাটা ব্যাপক এবং এর কারণ ও প্রতিকার খোঁজার জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা দরকার। আপনি রিপোর্টটা এখানে পাবেন – http://rainn.org/get-information/statistics/frequency-of-sexual-assault

আমরা যদি বৈবাহিক বিশ্বাসঘাতকতা, অবৈধ সন্তান, বিবাহবিচ্ছেদ, অতি-নিকট আত্মীয়ের মধ্যে যৌন সঙ্গমের পরিসংখ্যান দেখি, তাহলে আমরা এমন অনেক ঘটনা খুঁজে পাব যা ঘটেছে নারীদের যথাযথ পোশাক না পরার কারণে এবং মহান আল্লাহ কুরআনে যে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা অতিক্রম করার কারণে এবং এই নির্দেশগুলো ওল্ড ও নিউ টেস্টামেন্টের ছাপানো সংস্করণেও পাওয়া যাবে যা আমরা উপরে উল্লেখ করেছি।

আমরা আশা করব উপরে যা আলোচনা করা হল আপনি তা ভেবে দেখবেন। পরবর্তীতে কোন সময় আমরা মুসলিম নারীদের হিজাব পরিধানে উদ্বুদ্ধকারী কারণসমূহ এবং এই টুকরো কাপড়ের মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক প্রভাবের ব্যাপারে আরও আলোচনা করার প্রয়াশ পাব।

এই আলোচনাতে আমাদের যুক্তিগুলো যদি আপনার মনপুত হয় তাহলে আমরা ইসলাম সম্পর্কে আপনার অনুসন্ধিৎসু সব প্রশ্ন ও আন্তরিক স্পৃহাকে স্বাগত জানাই।

আল্লাহই ভালো জানেন।

প্রবন্ধের উৎসঃ IslamQA Bangla

জামাআতে সালাতের গুরুত্ব প্রেক্ষিত বর্তমান সমাজ

জামাআতের গুরুত্ব, পরিপ্রেক্ষিত বর্তমান সমাজ

আল্লাহ তাআলা সালাতের মর্যাদা সমুন্নত করেছেন। পবিত্র কুরআনের বহু জয়গায়  সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন । সালাতের প্রতি যত্নবান ও  জামাআতভুক্ত হয়ে  সালাত আদায়ের আদেশ করেছেন। সালাতকে  গুরুত্বপূর্ন ইবাদত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ও আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে সাব্যস্ত করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং সালাতে রুকুকারীদের সাথে রুকু কর।” [বাকারা-৪৩]

আর এর প্রতি অবমাননা এবং তা আদায়ে অলসতা মুনাফিকের আলামত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে: “মুনাফিকরা অবশ্যই প্রতারণা করছে আল্লাহর সাথে অথচ তারা প্রকারান্তরে নিজেদেরই প্রতারিত করছে । বস্তুতঃ তারা যখন সালাতে দাড়ায় তারা  দাড়ায় একান্ত শিথিলভাবে।” [সূরা নিসা-১৪২] অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে: “তারা সালাতে আসে আলস্যভরে।” [সূরা তওবা : ৫৪]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের প্রতি অচ্ছেদ্যভাবে  যত্নবান ছিলেন। যুদ্ধ কি শান্তি, সুস্থ কি অসুস্থ  সকল অবস্থায়  এমনকি ওয়াফতের পূর্বে  মৃত্যব্যাধিতে আক্রান্ত অবস্থায়ও তিনি সালাত আদায়ে অবহেলা করেননি  বিন্দুমাত্র । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর  সাহাবীগণ, ও পরবর্তীতে তাবেয়ীন ও উত্তম পূর্বপুরুষগণ সালাতের প্রতি ছিলেন বর্ণনাতীতভাবে ঐকান্তিক, একনিষ্ঠ । তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি  রীতিমতো ঘাবড়ে দেবার মতো। বর্তমানে  অনেক মুসলমানই  সালাত আদায়ে দারুণভাবে উদাসীন।  জুমার  সালাতে মসজিদে উপচে-পড়া ভীড় হচ্ছে ঠিকই তবে  পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে মসজিদের অধিকাংশ জায়গাই থাকে মুসুল্লিশূন্য। সালাত বিষয়ে মুসলমানদের অবহেলার আদৌ কোন কারণ থাকতে পারে না। সালাত বিষয়ে অবহেলার অর্থ ঈমানের একটি মৌলিক দাবি , ইসলামের একটি প্রধানতম নিদর্শন বিষয়ে  অবহেলা । আর যারা এ ধরনের অবহেলা প্রদর্শনে  অভ্যস্ত  তাদের অপেক্ষায় থাকবে মর্মন্তুদ শাস্তি, কঠিন নারকীয় আযাব।

আমাদের পূর্বপুরুষগণ  জামা‘আতভুক্তিতে  সালাত আদায়ের  প্রতি  খুবই যত্নশীল। তাদের নিকট এর গুরুত্ব ছিল অপরিসীম ; এমনকি জামাত  ছুটে গেলে  খুবই মর্মাহত হতেন। তারা। মনোকষ্টে অশ্রু ঝরাতেন।   সমবেদনা জানাতেন একে অপরকে জামাত ছুটে যাওয়ার  কারণে ।

জামাআতভুক্তিতে সালাত না আদায়ের ফলে সালফে সালেহীনের মনোবেদনা

মুহাম্মদ বিন মুবারক আ‘সম রহ. বলেন: ‘আমি জামা‘আতে সালাত আদায়ে সক্ষম না হওয়ায় শুধুমাত্র আবু ইসহাক আল-বুখারীই সমবেদনা জানান। অথচ যদি আমার পিতা মারা যেত, তাহলে দশ হাজারেরও বেশী মানুষ আমাকে সমবেদনা জানাত। কেননা ধর্ম পালন করতে গিয়ে কষ্ট শিকার, তাদের নিকট, দুনিয়ার মুসীবতের চেয়েও সহজ মনে হত। জামা‘আতে সালাত আদায়  তাদের নিকট দুনিয়ার সম্পদ অর্জনের চেয়েও  অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।  অথচ আমরা দুনিয়ার পিছনেই লেগে রয়েছি মরিয়া হয়ে। দুনিয়-অর্জন ক্ষতিগ্রস্ত হবে  এই ভয়ে  অনেক সময় সালাতও  আদায় করছি দেরী করে। শুধু তাই নয় বরং আমাদের মাঝে এমন অনেকই  আছেন, যারা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী চাকচিক্যের পিছনে তড়িত হয়ে সালাত আদায়ই  ছেড়ে দিয়েছে সম্পূর্ণভাবে।

মায়মুন বিন মেহরান রহ. মসজিদে এলে তাকে বলা হল, সমস্ত লোক চলে গিয়েছে। তিনি বললেন : ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। এই সালাতের মর্যাদা আমার নিকট ইরাকের গভর্ণর হওয়ার চেয়েও অধিক প্রিয়। ইউনুস বিন আব্দুল্লাহ রহ. বলেন,  আমার যদি মুরগী হারিয়ে যায়, তবে আমি তার জন্য চিন্তিত হই, অথচ সালাত ছুটে গেলে তার জন্য চিন্তিত হই না!সালফে সালেহীনগণ সালাতের আওয়াজ শোনার সাথে সাথে মসজিদে যাবার জন্য প্রতিযোগিতা করতেন। ইমামের সাথে প্রথম তাকবীরে উপস্থিত হবার জন্য তারা সকলে ছিলেন প্রচন্ড আগ্রহী । সাঈদ নি মুসায়্যিব রহ. বলেন : পঞ্চাশ বৎসর ধরে আমার প্রথম তাকবীর ছুটেনি, পঞ্চাশ বৎসর পর্যন্ত আমি ফরয নামাযে মানুষের ঘাড় দেখিনি। অর্থাৎ তিনি পঞ্চাশ বৎসর ধরে প্রথম কাতারেই শমিল ছিলেন। ওয়াকী বিন জারাহ রহ. বলেন : প্রায় সত্তর বৎসর পর্যস্ত আ’মাশ রহ. এর প্রথম তাকবীর ছুটেনি। ইবনে সামাআহ রহ. বলেন : চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত আমার তাকবীরে উলা ছুটেনি। শুধু যে দিন আমার মায়ের মৃত্যু হয়, সে দিন ছুটেছিল।

প্রিয় ভাই ! আমাদের অবস্থা আর সালফে সালেহীনের অবস্থার মাঝে অনেক ব্যবধান তাদের নিকট সালাতের গুরুত্ব ছিল আপরিসীম, আর আমরা এর অবমাননা করছি হরহামেশা। তারা এর প্রতি যত্নবান ছিলেন। আর আমারা করছি অলসতা। তারা দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী চাকচিক্যের উপর সালাতকে প্রাধান্য দিয়েছেন, আর আমরা দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি এবং একে (সালাতকে) পিছনে ফেলে রেখেছি। এর গুরুত্বপূর্ণ ছাওয়াব ও অফুরন্ত ফযীলতের প্রতি তাদের উৎসাহ ছিল অপরিসীম। আর আমরা এ থেকে বিমুখ।

জামা‘আতে সালাত আদায়ের ফযীলত ও ফলাফল:

জামা‘আতে সালাত আদায়ের ফযীলত ও মর্যাদা অনেক। তন্মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপ:
(১) সালাত পাপমোচন এবং মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ: আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমি কি তোমাদের এমন বিষয় জানাব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ গুনাহসমূহ মোচন করে দেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করেন ? সাহাবায়ে কিরাম বললেন : হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল ! তিনি বললেন : তা হচ্ছে কষ্টের সময়ে যথাযথভাবে অযু করা, মসজিদের দিকে বেশি বেশি পদচারণ করা এবং এক সালাতের পর অন্য সালাতের  অপেক্ষায় থাক।  ‌এটাই হল  সীমান্ত প্রহরা।” [তিরমিযী: ৪৮]

অন্য হাদীসে এসেছে: “আব্দুল্লাহ বিন আমর থেকে বর্ণিত , রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি জামা‘আতের সাথে সালাত আদায়ের জন্য মসজিদে যায়, তার আসা এবং যাওয়ায় প্রতি পদক্ষেপে গুনাহ মিটে যায় এবং প্রতি পদক্ষেপে নেক ‘আমল লেখা হয়।” [আহমাদ: ৬৩১১]

(২) সালাত বান্দাকে শয়তান থেকে হিফাজত করে এবং তার প্ররোচনা থেকে নিরাপদ রাখে: আবূ দারদা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি : যে গ্রামে বা মরুপ্রান্তরে তিনজন লোক অবস্থান করে অথচ তারা জামা‘আত কায়েম করে সালাত আদায় করে না,  শয়তান তাদের উপর চরে বসে।  কাজেই জামা‘আতে সালাত আদায় করা একান্ত অপরিহার্য। কারণ বাঘ দলছুট বকররীটিকেই উদরস্থ করে।”  [আবূ দাউদ : ৪৬০]

(৩) নিফাক থেকে পরিত্রাণ এবং জাহান্নাম খেকে মুক্তি: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “এশা ও ফজরের সালাত মুনাফিকদের নিকট সবচেয়ে বেশী ভারী বোঝা বলে মনে হয়।” [বুখারী ও মুসলিম : ১৪১১]। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন: “যে ব্যক্তি একাধারে চল্লিশ দিন পর্যন্ত প্রথম তকবীরের সাথে জামা‘আতে সালাতে আদায় করে, তার জন্য দু’টি মুক্তি রয়েছে : জাহান্নাম থেকে মুক্তি আর নিফাক থেকে মুক্তি।” [তিরমিযী : ২২৪]। ইবনে মাসউদ    (রা:)  বলেন: “ক সময় আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে, একমাত্র প্রকাশ্য মুনাফিক ব্যতীত আর কেউ জামা‘আতে সালাত আদায় করা থেকে বিরত থাকেনি।” [মুসলিম : ১০৪৬]

(৪) কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ নূরের সুসংবাদ: বুরাইদাহ (রা:) থেকে বর্ণিত: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: অন্ধকার রাতে মসজিদে গমনকারীদের জন্য ক্বিয়ামত দিবসে পূর্ণ নূরের সুসংবাদ দাও।” [আবূ দাউদ : ৪৪৭]

(৫) জামা‘আতে সালাত আদায়কারী আল্লাহর হিফাজতে: উমামাহ (রা:) থেকে বর্ণিত: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন : তিন ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মায়, তন্মধ্যে মসজিদে গমনকারী ব্যক্তি। সে আল্লার জিম্মায় থাকে ; এমনকি, তার মৃত্যু হলে তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। অথবা তাকে ছাওয়াব বা গনীমত প্রদান করে (বাড়ীতে) ফিরিয়ে দিবেন।” [আবূ দাউদ : ২১৩৩]। তাছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি সকালের সালাত জামা‘আতের সাথে আদায় করে, সে আল্লাহর জিম্মায় থাকে। যে আল্লাহর জিম্মাকে অবমাননা করবে, আল্লাহ তাকে  জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।” [দারামী : ৩৩৬৭] একটু ভেবে দেখুন ! যে ব্যক্তি সকল ফরয-সালাত জামা‘আতের সাথে মসজিদে আদায়  করে তার অবস্থা কত কল্যাণময় হতে পারে ?

(৬) ঘরে সালাত আদায়ের  চেয়ে মসজিদে সালাত আদায়  অধিক ছাওয়াবের উপযোগী বানায়: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: জামা‘আতের সাথে  সালাত আদায়  ঘরে বা বাজারের সালাতের চেয়ে ২৫ গুণ বেশী ছাওয়াবের অধিকারী বানায়। আর এটা এভাবে যে, যখন সে অযু করে খুব সুন্দর করে । এবং  (সালাতের জন্য) মসজিদের উদ্দেশো বের হয়। এ অবস্থায় সে যতবার পা ফেলে,  প্রতিবারের পরিবর্তে একটি করে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি করে গুনাহ ক্ষমা করা হয়। তারপর যখন সে সালাত আদায় করতে থাকে, ফেরেস্তাগণ তার জন্য রহমতের দু‘আ করতে থাকেন। যতক্ষণ সে সালাতের জায়গায় বসে  থাকে ফেরেশতারা তার জন্য এই বলে দু’আ করেন যো, হে আল্লাহ ! এই ব্যক্তির উপর রহমত নাযিল কর। হে আল্লাহ ! এর উপর দয়া কর। আর যতক্ষণ সে সালাতের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে, ততক্ষণ সে সালাতের অর্ন্তভুক্ত থাকে।” [বুখারী ও মুসলিম : ৬১১]

রাসূল (সা:) বলেন:যে ব্যক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় মসজিদে গমন করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারীর ব্যবস্থা করেন, যতবার সে সকালে বা সন্ধ্যায় গমন করে ততবারই।” [বুখারী ও মুসলিম : ৬২২]। আবূ উমামাহ (রা:) থেকে বর্ণিত: “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি নিজ গৃহ থেকে পবিত্র হয়ে ফরয সালাতের জন্য বের হয়, তার ছাওয়াব একজন হজ্জ পালনকারীর ছাওয়ারেবর সমান।” [আবূ দাউদ: ৪৭১] জাবির বিন আব্দুল্লাহ (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “বনু সালামাহ গোত্র মসজিদের কাছে স্থানান্তরিত হতে মনস্থ করল। তিনি বলেন : জায়গা খালি ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ খবর পৌছলে তিনি তাদেরকে বললেন : হে বনী সালামাহ ! তোমরা তোমাদের বর্তমান বাসস্থানগুলো ধরে রাখ। মসজিদে গমনাগমনের পদক্ষেপগুলো তোমাদের জন্যে লিখে রাখা হবে। তারা বললেন: “স্থানান্তরিত হওয়া আমাদের কিই-বা আনন্দত দিতে পারে !”  [মুসলিম: ১০৬৯]

(৭) জামা‘আতে সালাত আদায়কারী কিয়ামত দিবসে আরশের নীচে ছায়া পাবেন: সাহাবী আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন : সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা ছায়া দান করবেন ঐ দিন, যেদিন আল্লাহর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না … তাদের মধ্যে একজন হল ঐ ব্যক্তি যার হৃদয় মসজিদের সাথে লাগানো। অর্থাৎ সালাত ও জামা‘আতের প্রতি অচ্ছেদ্যভাবে  আগ্রহী।” [বুখারী ও মুসলিম : ৬২০]

(৮) আল্লাহ তা‘আলা মুসল্লির আগমনে খুশী হন:  রাসূল (সা:) বলেন: “তোমাদের মধ্যে যদি কেউ পরিপূর্ণভাবে অযূ করে, অতঃপর শুধুমাত্র সালাতের উদ্দেশ্যেই মসজিদে আসে, তবে আল্লাহ তা‘আলা তার প্রতি এমন খুশি হন যেরূপ খুশি হয় নিরুদ্দেশ ব্যক্তির আচম্বিতে ফেরে আসায়  তার পরিবারের সদস্যরা।” [ইবনু খুযাইমাহ: ৮১৩১]

(৯) জামা‘আতে সালাত একাগ্রতা অর্জন ও অন্তর বিগলিত হওয়ার উপকরণ: কোন মুসলিম যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন দুনিয়ার সকল ব্যস্ততা থেকে সে নিজেকে মুক্ত করে নেয়। আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হয়, অতঃপর সে মসজিদে আগত মুসল্লিদের আল্লাহর সামনে  রুকু-সিজদারত অবস্থায় দেখে। যিকির এবং কুরআন তিলাওয়াত প্রত্যক্ষ করে। আল্লাহর কালাম স্বকর্ণে শোনার সুযোগ পায়। এ সব থেখে  সে বুঝতে পারে এ ময়দান আল্লাহ ও তার  জান্নাত লাভের উদ্দেশে প্রতিযোগিতার ময়দান। আর এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাকারীরাই  আন্তরিকতা ও একাগ্রতার সাথে আল্লাহর দিকে অগ্রসর হয়।

(১০) জামাতের সাথে সালাত আদায় মুসলমানদের মাঝমাঝে পারস্পরিক আন্তরিকতা ও মহব্বত সৃষ্টি করে:
জামা‘আতে সালাতে আদায়ের মাধ্যমে মুসলমানগণ দিন ও রাতে পাঁচবার পরস্পর মিলিত হয়। তাদের মাঝে সালাম বিনিময় হয়। একে অপরের  খোজ-খবর নেয়। হাসিমুখে একে অন্যের সাথে সাক্ষাত করে। এ সব বিষয় পারস্পরিক মহব্বত, ভালবাসা এবং একে অপরের কাছাকাছি আসার সুযোগ করে দেয়।

(১১) আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাদের নিকট মুসল্লীদের নিয়ে গর্ব করেন: আব্দূল্লাহ বিন ‘আমর (রা:) থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেন: “তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর, তোমাদের প্রভু আসমানের দরজাসমূহের একটি দরজা খুলেছেন। সেখানে তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের নিকট গর্ব করে বলেন, দেখ আমার বান্দাদেরকে, তারা একটি ফরয আদায় করেছে এবং আরেকটি ফরযের জন্য অপেক্ষা করছে।” [আহমাদ, ইবনে মাজাহ্‌ : ৭৯৩]

(১২) এতে অজ্ঞ লোকের জন্য রয়েছে শিক্ষা এবং বিজ্ঞলোকের জন্য রয়েছে উপদেশ: যে ব্যক্তি জামা‘আতের সাথে মসজিদে সালাত আদায় করে, সে সালাতের আহকাম, আরকান, সুন্নাত ইত্যাদি বিষয়গুলো আহলে ইলম থেকে শিখতে পারে । আহলে ইলমের সালাত দেখে উক্ত ব্যক্তি নিজের ভুল-ভ্রান্তি সংশোধন করে নেয়। এমনিভাবে ওয়াজ-নসীহত শুনে ভাল কাজে উৎসাহিত হয়, মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকে। এতে সে অনেক উপকৃত হয়, যা ঘরে সালাত আদায় করে আদৌ সম্ভব নয়।

(১৩) আল্লাহ তা‘আলা জামা‘আতে সালাত আদায়ে মুগ্ধ হন: কতই না সৌভাগ্য ঐ ব্যক্তির, যার আমল দেখে সৃষ্টিকর্তা মুগ্ধ হন। ইবনে উমর  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি : নিশ্চই আল্লাহ তা‘আলা জামা‘আতে সালাত আদায় করাতে মুগ্ধ হন।” [আহমাদ]

(১৪) জামা‘আতে সালাত আদায়ের ছাওয়াব লিখা এবং আসমানে উঠানোর ব্যাপারে ফেরেশতাগণ বির্তক করেন: ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন : একরাতে আল্লাহ তা‘আলা এক জ্যোর্তিময় অবস্থায় আমার নিকট এলেন । তিনি বলেন, সম্ভবতঃ তা নিদ্রায় হবে। এসে বললেন : হে মুহাম্মদ ! ঊর্ধ্বজগতে কি নিয়ে বিতর্ক হয় তুমি জান ? আমি বললাম না। তিনি বলেন : অতঃপর তিনি আমার হাত ধরলেন, আমি তার শীতলতা আমার বুকে অনুভব করলাম। (অথবা বললেন আমার গলায়) তখন বুঝতে পারলাম আসমান যমীনের মাঝে কি হচ্ছে ? তিনি বললেন : হে মুহাম্মদ ! তুমি জান উপর আসমানে কি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে ? আমি বললাম : হ্যাঁ, কাফফারা সম্পর্কে। কাফফারা হল সালাতের পর মসজিদে অবস্থান করা। পায়ে হেঁটে জামা‘আতের জন্য গমন করা, কষ্টের সময়েও পুরোপুরি অযু করা। যে ব্যক্তি এটা করবে সে কল্যাণময় জীবন যাপন করবে এবং তার মৃত্যু মঙ্গলময় হবে । তার গুনাহগুলো মিটে এমন হবে যেন সে তার মায়ের উদর থেকে আজই জন্মগ্রহণ করল।” [তিরমিযী : ৩১৫৭]

(১৫) এটা মানুষকে ভাল কাজের প্রতিযোগিতায় অভ্যস্ত করে এবং নফলের প্রতি উৎসাহিত করে: আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন: “যদি লোকেরা জানত আযান এবং প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর মধ্যে কি আছে, আর লটারীর মাধ্যম ছাড়া তা অর্জন করার অন্য কোন পথ না থাকত, তাহলে তারা অবশ্যই লটারী করত। যদি তারা জানত গরমের সময় ভর দুপুরে মসজিদে যাওয়ার কি ফযীলত, তাহলে অবশ্যই তার জন্যে প্রতিযোগিতা করত। যদি তারা এশা ও ফজরের সালাতের মধ্যে কি মর্যাদা আছে জানতে পারত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এ দু’টি সময়ের সালাতে শামিল হত।” [বুখারী ও মুসলিম: ৫৮০]

অনুরূপভাবে সালাতের সাথে সালাত আদায়  ব্যক্তিকে নফল সালাত আদায়েও অভ্যস্ত করে তুলে। যে ব্যক্তি সালাত কায়েমের পূর্বে মসজিদে আসে, সে তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায়ের সুযোগ পায়,  সুন্নাত পড়ার সুযোগ পায়, কুরআন তিলাওয়াত, দু‘আ ইসতিগফার ইত্যাদির সুযোগ পায়। আর কিছু না করলেও অন্তত সালাতের অপেক্ষায় চুপ করে বসে থাকতে পারে। আর এ সময় ফেরেশতাগণ তার জন্য এই বলে দু‘আ করতে থাকে যে,  হে আল্লাহ ! তুমি তাকে ক্ষমা কর, তার প্রতি রহম কর। আবূ হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত একিট হাদীসে এসেছে,  তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন : তোমাদের কোন ব্যক্তি যখন সালাতের জন্য নিজের মসল্লায় অপেক্ষা করতে থাকে, তখন ফেরেশতাগণ তার জন্য দু‘আ করতে থাকে যতক্ষণ তার অযু ভঙ্গ না হয়। ফেরেশতাগণ বলতে _ আল্লাহ ! তুমি একে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ ! তুমি এর উপর রহম কর।” [মুসলিম : ১০৬৩]

ওয়েব গ্রন্থনা: আবুল কালাম আযাদ আনোয়ার / সার্বিক যত্ন:আবহাছ এডুকেশনাল এন্ড রিসার্চ সোসাইটি, বাংলাদেশ

জান্নাতের হুরে ‘ঈন কেমন হবে?

flower-meadow-20392-20902-hd-wallpapers_Fotor

(১) জান্নাতের অন্যান্য নিয়ামতের ন্যায় হুরে ঈনও একটি নিয়ামত হবে।

(২) কোন কোন হুরে ইন ইয়াকুত ও মুক্তার ন্যায় লাল হবে।

(৩) অতুলনীয় সুন্দরী সাথে সাথে হুরে ইনরা সতিত্ব ও লজ্জাশীলতায়ও নিজেরা নিজেদের তুলনীয় হবে।

(৪) মানব হুরদেরকে ইতিপূর্বে অন্য কোন মানুষ স্পর্শ করেনি। জ্বিন হুরদেরকেও্ ইতিপুর্বে কোন জ্বীন স্পর্শ করেনি। আল্লাহ তায়ালা বলেন: “তথায় থাকবে আয়তনয়না রমণীগণ। কোন জ্বীন ও মানব পূর্বে যাদেরকে স্পর্শ করেনি। অতএব উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে? প্রবাল ও পরাগ সদৃশ নারীগণ। অতএব তোমরা উভয়ে তোমাদের পলনকর্তার কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?” [সূরা আর-রহমান-৫৫/৫৬-৫৯]

(৫) হুরেরা এতটা লজ্জাশীল হবে যে ,স্বামী ব্যতিত আর কারো দিকে চোখ তুলে তাকাবে না।

(৬) হুরেরা ডিমের ভিতর লুক্কায়িত পাতলা চামড়ার চেয়েও অধিক নরম হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন: “তাদের নিকট থাকবে আয়তলোচনা তরুণীগণ যেন তারা সুরখ্যিত ডিম।” [সূরা সাফফাত ৩৭/৪৮-৪৯]

(৭) জান্নাতের হুরেরা সুন্দর লাজুক চোখ বিশিস্টা, মোতির ন্যায় সাদা এবং তাদের স্বচ্চতা ও রং এত নিখুত হবে যেন সংরখ্যিত স্বর্ণালংকার। আল্লাহ তায়ালা বলেন: “তথায় থাকবে আয়তনয়না হুরগণ। আবরণে রখ্যিত মোতির ন্যায়, তারা যা কিছু করত তার পুরস্কার স্বরুপ।” [সূরা ওয়াক্বিয়া ৫৬/২২-২৪]

(৮) হুরদের সাথে জান্নাতী পুরুষদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিয়ে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন: “তাদেরকে বলা হবে তোমরা যা করতে তার প্রতিফল স্বরুপ তোমরা তৃপ্ত হয়ে পানাহার কর। তারা শ্রেনীবদ্ধ সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। আমি তাদেরকে আয়তলোচনা হুরদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে দিব।” [সূরা তূর ৫২/১৯-২০]

(৯) হুরেরা তাদের স্বামীর সমবয়সী হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন: “তাদের নিকট থাকবে আয়ত নয়না সমবয়স্কা নারীগণ। তোমাদের এরই প্রতিশ্রুতি দেয়‍া হচ্ছে বিচার দিবসের জন্য।” [সূরা ছোয়াদ ৩৮/৫২-৫৩]

(১০) জান্নাতে স্বীয় স্বামিদের আনন্দ দানে হুরদের সঙ্গীত। আনাস (রা:) থেকে বর্নিত। রসূলুল্লাহ (সা:) বলেন: “জান্নাতে আকর্ষণীয় চক্ষুবিশিষ্টা হুরেরা সঙ্গীত পরিবেশন করবে এ বলে: আমরা সুন্দর এবং সতী ও সৎচরিত্রের অধিকারিনী ‍হুর। আমরা আমাদের স্বামিদের অপেক্ষায় অপেক্ষমান ছিলাম।” [ত্বাবারানী ,হাদিস নং -১৫৯৮] সুবহানআল্লাহ…..

(১১) ঈমানদারদের জন্য জান্নাতের হুরদেরকে আল্লাহ বাছাই করে রেখেছেন। মোয়াজ বিন জাবাল (রা:) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন রসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: “যখন কোন মহিলা তার স্বামীকে কোন কষ্ট দেয়, তখন আয়তনয়না হুরদের মধ্য থেকে মুমিন স্ত্রী বলবে যে, আল্লাহ তোমকে ধ্বংষ করুন, তাকে কষ্ট দিও না। সে অল্প দিনের জন্য তোমার নিকট আছে অতি শীঘ্রই সে তোমাদেরকে ছেড়ে চলে আসবে।” [ইবনে মাযাহ, আলবানী ,১ম খন্ড, হা: নং১৬৩৭]

বুরাইদা (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: “আমি জান্নাতে প্রবেশ করার সময় এক যুবতি আমাকে অভ্যর্থনা জানাল, আমি তাকে বললাম, তুমি কার? সে বলল যে আমি যায়েদ বিন হারেসার জন্য।” [ইবনে ‍আসাকের. সহীহ আল-জামে সগীর. আলবানী. হা: নং-৩৬১]

লেখা গুলো নেয়া হয়েছে ‍”জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা” মুহাম্মদ ইকবাল কিলানি রচিত বই থেকে। (তাওহীদ পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত)

English Version

বইঃ মুত্তাফাকুন আলাইহি হাদিসের বাংলা সংস্করণ – ফ্রী ডাউনলোড

Al-Lulu-Wal-Marjan-Banglaসংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ ইসলামী শরীআতের অন্যতম উত্স হাদীস। এটিকে সহীহ সনদে ও মতনে সুসংরক্ষিত। এই হাদীসগুলো বিভিন্ন মানের দিক দিয়ে সর্বাধিক উত্তম হলো মুত্তাফাকুন আলাইহি। যেসব হাদীস একই সাথে ইমাম বুখারী (রহ.) ও ইমাম মুসলিম (রহ.) স্বীয় গ্রন্থে সংকলন করেছেন। এসব হাদীস উভয় ইমাম সহীহ বলে একমত পোষণ করেছেন সেই সাথে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে স্বীয় হাদীস গ্রন্থে সংকলন করেছেন। এই হাদীসগুলো বেছে বেছে সংকলন করেছেন আল্লামা ফুয়াদ আল বাকী (রহ)। এই সংকলেনর নাম করণ করেছেন “আল লূ’লু ওয়াল মারজান” এটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। এটি প্রকাশ করেছে তাওহীদ পাবলিকেশন্স।

হাদীস গ্রন্থটি হাক্ব পিয়াসীদের জন্য এক অনন্য সংকলন। বইটির এই হাদীসগুলোকে বিষয়ভিত্তিক সাজিয়ে তাকে আরো সুন্দর করা হয়েছে। সাবলীল ভাষায় অনুবাদকৃত এই সংকলনটি আমাদের সবার ঘরে (হার্ডকপি) থাকার মতো কিতাব। আল্লাহ আমাদের তা কেনার সেই সাথে তা অন্যকে কিনতে উত্সাহিত করা তাওফিক দিন।

বইটির অনন্য বৈশিষ্ট্য :

  1. মুত্তাফাকুন আলাইহির’ সংকলন এই প্রথম বাংলা ভাষায় প্রকাশকৃত।
  2. বইটিতে বুখারী ও মুসলিমের হাদীসগুলো সংকলন করা হয়েছে।
  3. বুখারীর নম্বর নেয়া হয়েছে ফাতহুল বারীর থেকে।
  4. মুসলিমের নম্বর নেয়া হয়েছে ফুয়াদ আল বাকী নম্বর থেকে।
  5. অধ্যায় নম্বর সাজানো হয়েছে ইমাম নববী (রহ) কৃত মুসলিম অধ্যায়ের ক্রম অনুযায়ী
  6. হাদীসগুলো বিষয় বুঝার জন্য সুন্দরভাবে ও বিস্তারিত সূচিপত্র যুক্ত করা হয়েছে।
  7. সহজ ও সরলভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। সেই সাথে সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃক সম্পাদিত।
  8. নিচে টীকায় উভয় গ্রন্থের পর্ব, অধ্যায় ও হাদীস নম্বর যুক্ত করা হয়েছে।
  9. বইটিতে ইন্টারেকটিভ লিংক যুক্ত করা হয়েছে।

 

মুত্তাফাকুন আলাইহি হাদিসের বাংলা সংস্করণ- QA Server
মুত্তাফাকুন আলাইহি হাদিসের বাংলা সংস্করণ- QA Server

মুত্তাফাকুন আলাইহি হাদিসের বাংলা সংস্করণ- Mediafire
মুত্তাফাকুন আলাইহি হাদিসের বাংলা সংস্করণ- Mediafire

বইটির স্ক্যান করেছেন মিনহাজ ভাই এবং ইন্টারেকটিভ লিংক কাজে সহযোগীতা করেছেন আশরাফুল ভাই। আল্লাহ তাঁদের কবুল করুন।

***পিডিএফ বই কখনোই মুল বইয়ের বিকল্প হয়না। তাই সবার প্রতি অনুরোধ বইটি বাজার হতে নিজে কেনার পাশাপাশি অন্যকেও উত্সাহিত করুন। নিকটস্থ মসজিদে দান করুন।***

Courtesy: waytojannah.com

সাবস্ক্রাইব করুন

2,018,267FansLike
1,685FollowersFollow
1,150FollowersFollow
6,143FollowersFollow
4,600SubscribersSubscribe