ঈমানের শাখা-প্রশাখা

2
2871

মূল প্রবন্ধঃ দা’উদ আদিব এর বক্তৃতা | অনুবাদ ও পরিবর্ধনঃ মোঃ মুনিমুল হক | সম্পাদনাঃ আবদ্‌ আল-আহাদ | ওয়েব এডিটিং: মুহাম্মাদ গাফফার

“কসম সময়ের,নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;কিন্তু তারা ব্যতীত,যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের”। [সূরা আসর; ১০৩:১-৩]

প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম! ধরুন, আপনার কোন প্রিয়জন আপনাকে সুন্দর একটা কচি চারাগাছ উপহার দিয়ে বলল, “চারাটির ভাল মত যত্ন নেবেন, দেখবেন, চারাটা যেন মারা না যায়।” আচ্ছা বলুন তো, আপনি কিভাবে চারাগাছটির যত্ন নিবেন? আপনি কি চারাটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপনার সাধ্যমত চেষ্টা করবেন না? আর সেটা করতে গিয়ে আপনি হয়ত চারাগাছটির যা যা দরকার তার সবই জোগাড় করবেন এবং চারাটিকে সবধরনের ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে আগলে রাখবেন। জানার চেষ্টা করবেন চারাটির স্বাভাবিক বিকাশের জন্য কি ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন, কি করলে চারাটি স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠে সুবিশাল বৃক্ষে পরিণত হবে।

বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, আমাদের প্রত্যেকের অন্তরে এরকম সুন্দর একটা চারাগাছ আছে। এই চারাগাছ মহান আল্লাহ-তা’য়ালার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য এক বিশেষ উপহার। আর সেই চারাগাছটার নাম হল “ঈমান”।   “শাজারাত-আল-ঈমান” অর্থাৎ ঈমানের বৃক্ষ

এই বৃক্ষের ব্যাপারে পবিত্র কুর’আনে আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ “তুমি কি লক্ষ্য করোনা,আল্লাহ তা’আলা কেমন উপমা বর্ণনা করেছেনঃ পবিত্র বাক্য হলো পবিত্র বৃক্ষের মত। তার শিকড় মজবুত এবং শাখা আকাশে উত্থিত। সে পালনকর্তার নির্দেশে অহরহ ফল দান করে। আল্লাহ মানুষের জন্যে দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেন-যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।” [সূরা ইব্রাহীম; ১৪:২৪-২৫]

বিজ্ঞান বলে পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহেও উদ্ভিদ/গাছপালা আছে। আল্লাহ তা’য়ালা শুধু এই পৃথিবীই তৈরি করেননি, তৈরি করেছেন সপ্ত-আকাশ ও নভোমণ্ডল। কেউ বলে উদ্ভিদের অস্তিত্ব আছে ওখানেও আবার কেউ বলে নেই। তবে কুর’আন ও হাদীস বলে জান্নাতে রয়েছে সুশোভিত বৃক্ষরাজি। এদের একটির নাম হল “তুবা”, যেটার ছায়া এত বিস্তৃত যে তা অতিক্রম করতেই দীর্ঘ একমাস লেগে যাবে আমাদের; আর এই ছায়াতেই মু’মিনদেরকে জান্নাতের পোশাক পরানো হবে। তবে এই পার্থিব জগতে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বৃক্ষ হল ঈমানের বৃক্ষ (শাজারাত-আল-ঈমান)।

ঈমানের বৃক্ষটি কি কি উপাদান দিয়ে তৈরি?

আল্লাহ্‌ তা’য়ালা কর্তৃক সৃষ্ট প্রত্যেক গাছই তিনটি মূল অংশ নিয়ে গঠিতঃ

১.  শিকড় বা মূল- এ পৃথিবীর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বৃক্ষটির শিকড় হলঃ

  • ক) জ্ঞান (I’lm)
  • খ) বিশ্বাস/ আস্থা (Yaqeen)

ইসলামের মূলভিত্তি হল ঈমান আর ঈমানের মূলভিত্তি হললা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌”; অর্থাৎ, আল্লাহ্‌ ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য সত্য কোন উপাস্য নেই-এই কথায় সজ্ঞানে (I’lm) পরিপূর্ণ বিশ্বাস। আমদের জীবনের একেবারে তুচ্ছাতিতুচ্ছ ব্যাপারগুলোও এই বিশ্বাসের সাথে জড়িত। যখন আমরা জানব/বিশ্বাস করব যে আল্লাহ্‌ ছাড়া ইবাদতের যোগ্য সত্য কোন উপাস্য নেই, তখন আমরা নিজেদের পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ্‌র কাছে সঁপে দিতে পারব এবং কুর’আন ও সুন্নাহ্‌তে যা যা আদেশ ও নিষেধ করা হয়েছে তার সবই পরিপূর্ণভাবে মেনে চলতে পারব। ঈমানের শিকড়ের অপর অংশটি হল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌তে পূর্ণ আস্থা (Yaqeen)। অর্থাৎ, আমরা যখন আমাদের নিজেদের জীবনে ইসলামের বিধি-বিধান কার্যকর করব তখন কুর’আন ও সুন্নাহ্‌র বিধানের উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস থাকতে হবে। এই ব্যাপারে যদি বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকে, তবে তা হবে দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক।

২. কাণ্ড: অন্য যেকোনো বৃক্ষের মত ঈমানেরও কাণ্ড আছে। আর সেই কাণ্ডটা হল আল-ইখ্‌লাসবা নিয়্যতের বিশুদ্ধতা (Purity of Intention)। ঈমানের বৃক্ষকে শক্ত ও মজবুত করতে হলে নিয়্যত বিশুদ্ধ হতে হবে; না হলে একটুখানি ঝড়ঝাপটাতেই বৃক্ষটা ভেঙ্গে বা নুইয়ে পড়বে।বিজ্ঞ তাবে’ঈন আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে সা’ল আত-তুয্‌কুরি (রা) কে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলঃ “ঈমান কি?”, উত্তরে তিনি বলেছিলেনঃ “ঈমান হল একটা বাখ্য/বিবৃতি, একটা কর্ম, একটা নিয়্যত এবং একটা সুন্নাহ্‌। বিবৃতি যদি হয় কর্ম-বিহীন তবে তা হল কুফর বা অবিশ্বাস (disbelief); আবার সেই বিবৃতি ও কর্ম যদি নিয়্যতবিহীন তবে তা হল “নিফাক” বা মোনাফেকি (hypocrisy); আর সেই বিবৃতি, কাজ ও নিয়্যত যদি হয় সুন্নাহ্‌বিহীন তবে তা হল বিদ’আহ্‌ (innovation )। তাই ঈমানের কাণ্ডকে মজবুত রাখতে হলে কাজের নিয়্যতকে পরিষ্কার রাখতে হবে আমাদের। প্রত্যেক সৎকর্মই দু’টি অংশে বিভক্ত। এর প্রথম অংশটিই হল বিশুদ্ধ নিয়্যত আর নিয়্যত বিশুদ্ধ করতে হলে কাজের নিয়্যতটি হতে হবে কেবলমাত্র আল্লাহ্‌কে রাজি-খুশি করা!

৩.শাখা-প্রশাখাওফলঃ ঈমানের মূল আর কাণ্ড যেমন আছে ঠিক তেমনি আছে শাখা-প্রশাখা ও ফল। আর তা হলঃ

  • ক) সৎকাজ
  • খ) সচ্চরিত্র

কুর’আনের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহ তা’য়ালা জান্নাতিদেরকে জাহান্নমের অধিবাসীদের থেকে পৃথক করেছেন এই বলে যেঃ তারা হল বিশ্বাসী এবং সৎকর্মপরায়ণ। প্রত্যেক সৎকর্মই দু’টি অংশে বিভক্ত।  ইতোপূর্বেই বলেছি, প্রথম অংশটি হলঃ আল্লাহ্‌কে রাজি-খুশি করার বিশুদ্ধ নিয়্যত। আর দ্বিতীয় অংশটি হলঃ কাজটি হতে হবে শারী’য়াহ্‌ অনুযায়ী অর্থাৎ কুর’আন আর সুন্নাহ্‌ দ্বারা সমর্থিত। কুর’আন আর সুন্নাহ্‌ সমর্থন করে না এমন কোন কাজকেই সৎকর্ম বলা যাবে না। একটা গাছের শিকড় আর কাণ্ড যখন দৃঢ় ও মজবুত হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই তা ভাল ফল দিবে। একইভাবে ঈমানের মূল/ভিত্তি যদি মজবুত হয়, আমাদের অন্তরে তার কাণ্ড যদি হয় শক্তিশালী অর্থাৎ নিয়্যত যদি হয় বিশুদ্ধ, তবে তাও কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে বাধ্য। যদি আমাদের দ্বীনের জ্ঞান থাকে আর সেই জ্ঞানে পরিপূর্ণ আস্থা থাকে তবে সেই জ্ঞান আর আস্থা নিয়ে বিশুদ্ধ নিয়্যতে কোন সৎকর্ম করলে তা নিঃসন্দেহে আমদের চরিত্রকে করবে আরও উন্নত ও সম্মানিত।  

যেসব কারণে আমাদের প্রিয় বৃক্ষটি (ঈমান) মারা যেতে পারেঃ

. কুফ্‌রঃ যদি কুফ্‌রীতে লিপ্ত হয়ে পড়ি আমরা, তবে তা আমাদের ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়।

২. শির্‌কঃ যদি শির্‌কে লিপ্ত হই আমরা, তবে তাও আমাদের ঈমানকে ধবংস করে দিবে।

৩. বিদা’আহঃ বিভিন্ন ধরনের বিদা’আহ্‌ যদি আক্রমণ করে বসে আমাদের বৃক্ষটিকে, তবে আমাদের বৃক্ষটি হয়ে পড়বে রোগাক্রান্ত, হলুদাভ, ও শুষ্ক। আর এভাবেই একসময় ধীরে ধীরে মারা পড়বে আমাদের প্রিয় বৃক্ষটি! আল্লাহ্‌কে রাজি-খুশি করার জন্য আমরা আজকাল এমন অনেক ধর্ম-কর্ম করি সত্যিকার অর্থে যেগুলো হয় বিদা’আহ্‌ নতুবা শির্‌ক। আমরা অনেকেই ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন সব নতুন নতুন পন্থায় কাজ করি যা কিনা আমদের পূর্ববর্তী সময়ের নবী-রাসূল, সাহাবী, তাবে’ঈন, তাবে-তাবে’ঈন বা আউলীয়ায়ে কেরামগন যেভাবে কাজগুলো সম্পন্ন করেছিলেন তার সাথে কোনই মিল নেই; ফলে কাজগুলো হয়ে যায় বিদা’আহ্‌র অন্তর্ভুক্ত। কাজগুলো যেহেতু শরী’য়াহ্‌ অনুযায়ী করা হয়না তাই সেগুলোকে সৎকর্মও বলা যাবেনা। আর এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন দ্বীনের জ্ঞান এবং আমাদের প্রত্যেকটি কথা ও কাজের আগে ভেবে দেখা আমাদের পূর্ববর্তী আউলীয়ায়ে কেরামগন কিভাবে সম্পন্ন করেছিলেন কাজগুলো।

ঈমান বলতে কি বুঝায়?

১.বিশ্বাস: ঈমান হল আমাদের অন্তরের বিশ্বাস। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌-তে অর্থাৎ, আল্লাহ্‌ ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য সত্য কোন উপাস্য নেই এই কথায় পরিপূর্ণ বিশ্বাসের নামই হল ঈমান। এই ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকা যাবেনা। আর এই বিশ্বাস তখনই জন্মাবে যখন কুর’আন ও সুন্নাহ্‌র বিধানের উপর পূর্ণ আস্থা থাকবে আমাদের।

পবিত্র কুর’আনে আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ “হে ঈমানদারগণ,আল্লাহ্‌র উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন কর এবং বিশ্বাস স্থাপন কর তাঁর রাসূল ও তাঁর কিতাবের উপর,যা তিনি নাযিল করেছেন স্বীয় রাসূলের উপর এবং সে সমস্ত কিতাবের উপর,যেগুলো নাযিল করা হয়েছিল ইতোপূর্বে। যে আল্লাহ্‌র উপর,তাঁর ফেরেশতাদের উপর,তাঁর কিতাবসমূহের উপর এবং রাসূলগণের উপর ও কিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাস করবে না,নিশ্চয়ই সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহুদূরে গিয়ে পড়বে”। [সূরা আন-নিসা; ৪:১৩৬]

২.ব্যাখ্যা বা বিবৃতি: ঈমান হল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌-কে অন্তরে মেনে নেবার পর তা নিঃসঙ্কোচে, প্রকাশ্যে স্বীকার করা এবং সেই অনুযায়ী বিবৃতি দেয়া। অর্থাৎ, ঈমান শুধু অন্তরে থাকলেই হবেনা, মুখেও তা ঘোষণা করতে হবে।

৩.কর্ম: আমরা অন্তরে যা বিশ্বাস করি আর মুখে ঘোষণা করি তা কাজে পরিণত করাই হল ঈমান। অর্থাৎ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌-কে শুধু অন্তরে বিশ্বাস বা মুখে প্রচার করলেই চলবে না, আমদের প্রতিটি কাজ-কর্মেও তার প্রতিফলন থাকতে হবে। আমাদের প্রতিটি কর্মই হতে হবে কুর’আন ও সুন্নাহ্‌ভিত্তিক।

আমরা যারা শুধু মুখে প্রচার করে বেড়াই কিন্তু কাজে তা পালন করি না তাদের ব্যাপারে আল্লাহ্‌ বলেনঃ “হে মু’মিনগণ! তোমরা যা কর না তা তোমরা কেন বল?  আল্লাহর কাছে অত্যন্ত ঘৃণিত যে, তোমরা যা কর না তোমাদের তা বলা আল্লাহ্‌র নিকট অতিশ্য অসন্তোষজনক।” [সূরা আস্‌-সফ্‌ফ; ৬১:২-৩]

উদাহরনস্বরূপ, এখানে হিজাবের কথা বলা যেতে পারে।  এক আল্লাহ্‌ এবং তাঁর বিধানে যদি আপনার পূর্ণ আস্থা থাকে, তবে আপনি এটাও নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করবেন যে (নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই) হিজাব মেনে চলা বাধ্যতামূলক। কারণ এটাই আল্লাহ্‌র আদেশ। কিন্তু শুধু মনে মনে বিশ্বাস করলেই হবে না, ঈমানকে পরিপূর্ণ করতে হলে আপনাকে এটা প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে হবে যে হিজাব পালন করা বাধ্যতামূলক এবং অন্যদেরও হিজাব পালনের ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। তাদের সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলতে হবে যে (নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই) হিজাব পালন করা কতটা কল্যাণকর ও জরুরী। আচ্ছা, সবই না হয় করলেন। এতো কিছুর পরও কি ঈমান পরিপূর্ণ হল আপনার? দুঃখিত! আসল (সবচাইতে কঠিন) কাজটিই বাকি রয়ে গেছে এখনো। অর্থাৎ, অন্তরে মানলাম, মুখে প্রকাশ করলাম আর অন্যকে মানতে বললাম, কিন্তু নিজে এখনো পালন করলাম না, তাহলে কি ঈমান পরিপূর্ণ হল আমাদের? তাই অন্তরে যা বিশ্বাস করব আর মুখে যা প্রচার করব, বাস্তবে তা কাজেও পরিণত করতে হবে আমদের। আমাদের ঈমান ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ হবেনা যতক্ষণ না আমরা নিজেরা হিজাব পালন করব। আমরা যারা ভাবি ঈমান শুধুমাত্র অন্তরের বিষয়, কাজে প্রমাণ করার কোন দরকার নেই, তারা চরম বিভ্রান্তিতে আছি। এমন চিন্তা-ভাবনা শয়তানের ধোকা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আমাদের উচিত এধরনের বিভ্রান্তি থেকে বেরিয়ে এসে যা অন্তরে বিশ্বাস করব তা কথা ও কাজে প্রমাণ করে দেখানো। যদি আমরা সেটা করে দেখাতে পারি, তবে পবিত্র কুর’আনে আল্লাহ্‌  তা’য়ালার প্রতিশ্রুতি হলঃ “আল্লাহ্‌ওয়াদা করছেন-যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য রয়েছে পরিত্রাণ আর বিরাট পুরস্কার।” [সূরা আল্‌ মায়িদা; ৫:৯]

ঈমানের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাখাঃ আমাদের প্রিয় নবী (স) বলেছেন, “ঈমানের ৭০ টি শাখা-প্রশাখা রয়েছে। ঈমানের সর্বোচ্চ শাখা হলঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌(ঈমানের শাখা-প্রশাখাগুলোর মধ্যে এটাই হল সবচাইতে সুন্দর আর সর্বোত্তম)। সর্বনিন্ম শাখা হলঃ পথচারীদের চলতে অসুবিধা হয় এমন জিনিস রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়া । আর লজ্জাশীলতা হল ইমানের একটি অংশ”।

ঈমানের ক্ষয়ঃ একেক সময় আমাদের ঈমানী শক্তি একেক রকম হয়ে থাকে-কোন সময় বেশি, আবার কোন সময় কম। রাসূল (সা:) বলেছেন, “আমাদের পরিধানের পোশাক-পরিচ্ছদ যেমন পুরানো হতে হতে এক সময় ছিঁড়ে যায়, ঠিক তেমনি আমাদের ঈমানও ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যায়”। রাসুল (সা:) আমাদের উপদেশ দিয়েছেন, “প্রত্যেক মুসলমানের উচিত আল্লাহ্‌র কাছে এই বলে প্রার্থনা করা, তিনি যেন ঈমানকে নবায়ন (মজবুত) করে দেন আমদের অন্তরে। তা না হলে ঈমান ক্ষয় হতে হতে আমরাও ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতে পারি। কারণ আল্লাহ্‌ তা’য়ালা বলেছেনঃ “নিঃসন্দেহে, যারা একবার ঈমান আনে তারপর অবিশ্বাস পোষণ করে, পুনরায় ঈমান আনে ও আবার অবিশ্বাস করে এবং অবিশ্বাসকে বাড়িয়ে নেয় আরও,  আল্লাহ তাদেরকে না কখনও ক্ষমা করবেন, না পথ দেখাবেন”। [সূরা আন-নিসা; ৪:১৩৭]

Print Friendly, PDF & Email
Banner Ad


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

2 COMMENTS

আপনার মন্তব্য লিখুন