বর্ষাকালের বিবিধ বিধান

1
3178

rain

লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব। সম্পাদনাঃ ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

রহমতের বারতা আর অসংখ্য নেয়ামতের ডালি নিয়ে ফি বছর বাংলামুলুকে বর্ষা আসে। গ্রীষ্মের তাপদাহে যখন মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত, তখনই আসমান থেকে দয়াময়ের দান রহমতের ধারা নামতে শুরু করে। আকাশে সাদা-কালো মেঘের ওড়াওড়ি, বৃষ্টির টুপটাপ শব্দ, ঝরঝর অবিরল বারিধারা, পানির রূপালী ঢেউ, মরা জলাশয়ের যৌবন ফিরে পাওয়া, রোদে পোড়া তামাটে তরুলতার সজীব হয়ে ওঠা -সবই বর্ষার সৌন্দর্য। সবুজের বৈভব-ঐশ্বর্যেই বর্ষার নি‘আমত শেষ নয়। এ ঋতুতে মহান আল্লাহ আমাদের উপহার দেন বিচিত্র ফুল, ফল ও সবজি। প্রকৃতিতে হেসে ওঠে গন্ধরাজ, বাগানবিলাস, শ্বেতরঙ্গন, টগর, জুঁই, কেয়া ও কদমসহ আরও কত ফুল। ফলের দোকানের শোভা বাড়িয়ে দেয় পেয়ারা, আমড়া, কামরাঙা, ডেউয়া, জামরুল, লটকন, গাবসহ রকমারি ফল। সবজিভাণ্ডারে ক্রেতার দৃষ্টি কাড়ে ঢেঁরস, করল্লা, কাঁকরোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, পটল, বরবটিসহ বিবিত্র সবুজ সবজি। নানা রঙ, ঘ্রাণ ও স্বাদে মানুষ আকুল হয়। ভেষজ গুণেও এসব ফুল, ফল ও সবজির জুড়ি মেলা ভার।

বর্ষার নি‘আমত নিয়ে চিন্তা করা:

বর্ষায় এতসব দানে আপ্লুত হওয়াই শেষ নয়, পাশাপাশি কৃতজ্ঞতার দাবি হলো এসবের স্রষ্টা ও দাতাকে নিয়ে চিন্তা করা। নেয়ামতদাতার প্রতি আনত হয়ে তাঁর সব নির্দেশ পালনে ব্রতী হওয়া। পবিত্র কুরআনে বৃষ্টির কথা উল্লেখ করে আল্লাহ তা‘আলা নানা বাক-ভঙ্গিমায় আমাদের চিন্তা আকর্ষণ করেছেন। আল্লাহ বলেছেন: “আর তিনিই আসমান থেকে বর্ষণ করেছেন বৃষ্টি। অতঃপর আমি এ দ্বারা উৎপন্ন করেছি সব জাতের উদ্ভিদ। অতঃপর আমি তা থেকে বের করেছি সবুজ ডাল-পালা। আমি তা থেকে বের করি ঘন সন্নিবিষ্ট শস্যদানা। আর খেজুর বৃক্ষের মাথি থেকে (বের করি) ঝুলন্ত থোকা। আর (তা দ্বারা উৎপন্ন করি) আঙ্গুর বাগান এবং সাদৃশ্যপূর্ণ ও সাদৃশ্যহীন যয়তুন ও আনার। দেখ তার ফলের দিকে, যখন সে ফলবান হয় এবং তার পাকার প্রতি। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য যারা ঈমান আনে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৯৯]

তিনিই সে সত্তা, যিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন, যাতে রয়েছে তোমাদের জন্য পানীয় এবং তা থেকে হয় উদ্ভিদ, যাতে তোমরা জন্তু চরাও। তার মাধ্যমে তিনি তোমাদের জন্য উৎপন্ন করেন ফসল, যাইতুন, খেজুর গাছ, আঙ্গুর এবং সকল ফল-ফলাদি। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ১০-১১]

তুমি কি দেখ না, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর জমিনে তা প্রস্রবণ হিসেবে প্রবাহিত করেন তারপর তা দিয়ে নানা বর্ণের ফসল উৎপন্ন করেন, তারপর তা শুকিয়ে যায়। ফলে তোমরা তা দেখতে পাও হলুদ বর্ণের তারপর তিনি তা খড়-খুটায় পরিণত করেন। এতে অবশ্যই উপদেশ রয়েছে বুদ্ধিমানদের জন্য।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ২১]

আমরা জানি বর্ষার প্রকৃতি প্রতিটি কবিমনকে মোহিত ও ছন্দমুখর করে। কবি বলতেই বর্ষাকালে সৃষ্টিসুখের উল্লাসে মাতোয়ারা হন। বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো কবি নেই যিনি বর্ষায় মুগ্ধ হয়ে কাব্য-সঙ্গীত রচনা করেন নি। কৈশোরে আমিও কিছু ছড়া-কবিতা লিখেছি বর্ষার খুশিতে, বর্ষাদাতার প্রশংসায়। দৈনিক ইনকিলাব, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত শিশু-কিশোর ম্যাগাজিন সবুজ সাথীসহ বিভিন্ন মাসিক, সাপ্তাহিক ও সাময়িক পত্রিকায় সেসব প্রকাশিত হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত দিনলিপির পাতা ওল্টালেও বর্ষা নিয়ে অনেক বক্তব্যই খুঁজে পাওয়া যাবে। পবিত্র কুরআনে বৃষ্টি, বৃষ্টির কারণ, বৃষ্টির দান, বৃষ্টির শিক্ষা ও বৃষ্টির স্রষ্টার কথা বারবার তুলে ধরা হয়েছে বহু সূরায় এবং অসংখ্য আয়াতে। আকাশ থেকে অদ্ভুত এ সরল তরল দান না নামলে পৃথিবী শুকিয়ে যেত। প্রাণ ও প্রকৃতি মরে যেতে। পাখি গাইত না। ফুল হাসত না। ফল রসনা মেটাত না। জলাধারে জলতরঙ্গ বইত না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “বরং তিনি (শ্রেষ্ঠ), যিনি আসমানসমূহ ও জমিনকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য তিনি আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা আমি মনোরম উদ্যান সৃষ্টি করি। তার বৃক্ষাদি উৎপন্ন করার ক্ষমতা তোমাদের নেই। আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? বরং তারা এমন এক কওম যারা শির্ক করে। বরং তিনি, যিনি জমিনকে আবাসযোগ্য করেছেন এবং তার মধ্যে প্রবাহিত করেছেন নদী-নালা। আর তাতে স্থাপন করেছেন সুদৃঢ় পর্বতমালা এবং দুই সমুদ্রের মধ্যখানে অন্তরায় সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সঙ্গে কি অন্য কোনো ইলাহ আছে? বরং তাদের অধিকাংশই জানে না।” [সূরা আন-নামল, আয়াত: ৬০-৬১]

তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, যার ফলে জমিন সবুজ-শ্যামল হয়ে ওঠে। নিশ্চয় আল্লাহ স্নেহপরায়ণ, সর্ববিষয়ে সম্যকজ্ঞাত।” [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৬৩]

আর আল্লাহ আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। অতঃপর তা দিয়ে জমিনকে তার মৃত্যুর পর সজীব করেছেন। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে সেই কওমের জন্যা যারা শুনে।” [সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৬৫]

বৃষ্টি আল্লাহর নিদর্শন:

বৃষ্টি আল্লাহর অন্যতম নিদর্শন। আমরা আল্লাহর ওপর ঈমান স্থাপন করি তাঁকে না দেখে। ইহকালে আল্লাহকে দেখা সম্ভব নয়। তিনি আমাদের চর্মচোখ ও কল্পনার অতীত। আল্লাহকে চেনা যায় তাঁর প্রেরিত আসমানী গ্রন্থ ও নবীর মাধ্যমে, তাঁর নাম ও গুণের মাধ্যমে। কিন্তু না দেখেও তাঁর অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় তাঁর সৃষ্ট অসংখ্য নিদর্শনের মাধ্যমে। পবিত্র কুরআনের সূরা আর-রূমে আল্লাহ তাঁর বেশ কিছু নিদর্শনের কথা তুলে ধরেছেন। অন্য আরও বিভিন্ন সূরাতেও বিভিন্ন নিদর্শনের উল্লেখ আছে। সেসব নিদর্শনের অন্যতম হলো বৃষ্টি। আল্লাহ বলেন: “আর তাঁর নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে তিনি তোমাদেরকে ভয় ও ভরসাস্বরূপ বিদ্যুৎ দেখান, আর আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা জমিনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলি রয়েছে সে কওমের জন্য যারা অনুধাবন করে।” [সূরা আর-রূম, আয়াত: ২৪]

আরেক সূরায় আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “তাঁর আরেকটি নিদর্শন হলো, তুমি জমিনকে দেখতে পাও শুষ্ক-অনুর্বর, অতঃপর যখন আমি তার উপর পানি বর্ষণ করি তখন তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয়। নিশ্চয় যিনি জমিনকে জীবিত করেন তিনি মৃতদেরও জীবিতকারী। নিশ্চয় তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান।” [সূরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৩৯]

পানির জন্য হাহাকার:

গেল শতাব্দীতে পৃথিবীর বড় বড় পরাশক্তিগুলো তেলসম্পদ আহরণ জন্য একের পর যুদ্ধে জড়িয়েছে। তেলের তরল লোভে একে অন্যের পেছনে লেগে থেকেছে। মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ মুসলিম দেশগুলোয় শকুনেরা দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছে তরলসোনা খ্যাত তেলের প্রতি। বর্তমান শতাব্দীতে দেখা যাচ্ছে যুদ্ধের আড়ালে ভূমিকা রাখছে পরাশক্তিগুলোর অস্ত্র বিক্রির অনৈতিক স্বার্থ। ভূতত্ত্ববিদ ও গবেষকদের মতে, আগামী শতাব্দী পৃথিবীতে যুদ্ধ ও হানাহানি হতে পারে পানি নিয়ে। সাম্প্রতিক সময়গুলোয় উন্নত বিশ্বকে সবচেয়ে বেশি সরব দেখা যাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে। ক্লাইমেক্স চেঞ্জ এখন জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর অন্যতম প্রধান আলোচ্য। তাদের বক্তব্য, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর বরফভাণ্ডারসমূহ গলতে শুরু করেছে। এতে হুমকির মুখে রয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রাণ ও প্রকৃতি। এদিকে পৃথিবীতে এখন বিশুদ্ধ পানির স্তর ক্রমনিম্নমুখী। বাংলাদেশের মতো নদীমাতৃক তৃতীয়বিশ্বের দেশেও এখন শহরাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার পড়ে যায় গ্রীষ্মকালে। স্থানভেদে টাকা দিয়ে কিনে খেতে আল্লাহর দান বিশুদ্ধ পানি। শুধু বোতলজাত মিনারেল ওয়াটার নয়, আজকাল ফুতপাথের রেস্তোরাঁ ও চা-স্টলগুলোতেও পানি কিনে খেতে হয় গ্লাস প্রতি ১ টাকা করে।

আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে প্রায় জায়গায় পানির নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাঁকে নিয়ে চিন্তা করা, তাঁর মারিফাত লাভ এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতাবনত হওয়ার কথা বলেছেন। শুধু তাই নয়, অন্যথায় তিনি এ নি‘আমত ছিনিয়ে নিতে পারেন আজ থেকে প্রায় সাড়ে চৌদ্দশ বছর আগে তাও বলে দিয়েছেন। তিনি না দিলে এ নি‘আমত মানুষ খুঁজেও পাবে না মর্মে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন নানাভাবে। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশে বিরল এক ঘটনা ঘটে। সারা দেশে একযোগে বিদ্যুৎ চলে যায়। দেশজুড়ে নেমে আসে ভীতি জাগানিয়া অন্ধকার। প্রায় চব্বিশ ঘন্টা বিদ্যুতবিচ্ছিন্ন থাকায় জেনারেটরের মতো বিকল্প ব্যবস্থাগুলোও প্রায় বিকল হয়ে যায়। তখন আমরা স্বচোখে প্রত্যক্ষ করেছি পানির নি‘আমত আল্লাহ সাময়িক সময়ের জন্য তুলে নিলে মানুষের কী করুণ অবস্থা হতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: “আর আমরা আকাশ থেকে পরিমিতভাবে পানি বর্ষণ করেছি। অতঃপর আমি তা জমিনে সংরক্ষণ করেছি। আর অবশ্যই আমি সেটাকে অপসারণ করতেও সক্ষম।” [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১৮]

বৃষ্টির পূর্বাভাস ঘোষণায় ইনশাআল্লাহ বলা:

আজকের এ আধুনিক বিশ্বে মানুষ প্রাকৃতিক অনেক কিছুরই বিকল্প আবিষ্কার করেছে। তথাপি এক পর্যায়ে গিয়ে মানবসৃষ্ট সব কিছুই প্রাকৃতিক তথা আল্লাহপ্রদত্ত উপকরণের ওপর নির্ভরশীল। আজকের আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আল্লাহর সৃষ্ট আলামত দেখে বৃষ্টির পূর্বাভাস বলে। আবহাওয়াবিদরা আগে  বলতেন, ‘আগামীকাল অমুক অমুক স্থানে বৃষ্টি হতে পারে’। এখন তারা ‘হতে পারে’ আর বলেন না, সরাসরি বলে দেন, ‘হবে’! এক শ্রেণীর মানুষ যে প্রযুক্তিগর্বী জড়শিক্ষার প্রভাবে ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঈমানী মূল্যবোধকে বুড়ো আঙুল দেখাতে শুরু করেছেন, তারই ইঙ্গিত খুঁজে নিতে পারি আমরা আবহাওয়াবিদদের এ ধরনের শব্দ চয়নে। কিন্তু ঈমানদাররা বিশ্বাস করেন, বিজ্ঞান যে কারণ সন্ধান করে ব্যাখ্যা বা বক্তব্য দেয়, আল্লাহ তা‘আলা ওই কারণেরও স্রষ্টা। তিনি দৃশ্য-অদৃশ্য সব কিছুর কারিগর। তিনি চাইলে তাই কারণকেও অকারণ বানিয়ে দেন।

তুমি কি দেখ নি যে, আল্লাহ মেঘমালাকে পরিচালিত করেন, তারপর তিনি সেগুলোকে একত্রে জুড়ে দেন, তারপর সেগুলো স্তুপীকৃত করেন, তারপর তুমি দেখতে পাও তার মধ্য থেকে বৃষ্টির ফোঁটা বের হয়। আর তিনি আকাশে স্থিত মেঘমালার পাহাড় থেকে শিলা বর্ষণ করেন। তারপর তা দ্বারা যাকে ইচ্ছা আঘাত করেন। আর যার কাছ থেকে ইচ্ছা তা সরিয়ে দেন। এর বিদ্যুতের ঝলক দৃষ্টিশক্তি প্রায় কেড়ে নেয়।” [সূরা আন-নূর, আয়াত: ৪৩]

গত কয়েক বছর একাধিকবার এমন হয়েছে, গণমাধ্যমে বলা হলো আগামীকাল বা আগামী এ কয়দিন বৃষ্টি হবে কিংবা হবে না, অথচ পরদিন দেখা গেল প্রচারিত পূর্বাভাসকে মিথ্যা বানিয়ে বৃষ্টি হয়ে হলো কিংবা হলো না। তাই আর সব ভবিষ্যৎ বার্তার মতো আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও উচিত ‘ইনশাআল্লাহ’ তথা ‘আল্লাহ যদি চান’ এ জাতীয় শব্দ জুড়ে দেওয়া। কুরআনের সেই শিক্ষাটা যেন আমরা কোনো অবস্থাতেই ভুলে না যাই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আর কোনো কিছুর ব্যাপারে তুমি মোটেই বলবে না যে, ‘নিশ্চয় আমি তা আগামীকাল করব’, তবে (বলবে, আমি করব) ‘আল্লাহ যদি চান’।” [সূরা আল-কাহফ, আয়াত: ২৩-২৪]

বৃষ্টিপূর্ব বাতাস ও মেঘদৌড়:

বৃষ্টির আগমুহূর্তে আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা যায়। বিশেষত বর্ষার অব্যবহিত পরে আসা কাশফুলের অসাধারণ সৌন্দর্যের ঋতু শরতের পেঁজা মেঘের লুকোচুরি কাকে না মুগ্ধ করে। ঈষাণকোণে যখন মেঘের ঘনঘটা দেখা যায়, তখন প্রবাহিত হয় হৃদয় জুড়ানো শীতল বায়ু। তারপর বৃষ্টির ধারায় স্নাত হয়ে আমরা আনন্দিত হই। বৃষ্টির নির্মল পানিতে সিক্ত হয়ে আমাদের দেহ-মন হয় পবিত্র। এও আল্লাহর অকৃপণ দান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘‘আল্লাহ, যিনি বাতাস প্রেরণ করেন ফলে তা মেঘমালাকে ধাওয়া করে; অতঃপর তিনি মেঘমালাকে যেমন ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে খণ্ড-বিখণ্ড করে দেন, ফলে তুমি দেখতে পাও, তার মধ্য থেকে নির্গত হয় বারিধারা। অতঃপর যখন তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের উপর ইচ্ছা বারি বর্ষণ করেন, তখন তারা হয় আনন্দিত।” [সূরা আর-রূম, আয়াত: ৪৮]

আর তিনিই তাঁর রহমতের (বৃষ্টির) প্রাক্কালে সুসংবাদস্বরূপ বায়ু পাঠিয়েছেন এবং আমরা আকাশ থেকে পবিত্র পানি বর্ষণ করেছি।” [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৪৭]

তিনিই ভয় ও আশা সঞ্চার করার জন্য তোমাদেরকে বিজলী দেখান এবং তিনি ভারী মেঘমালা সৃষ্টি করেন।” [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ১২]

বৃষ্টির অনাকাঙ্ক্ষিত বিড়ম্বনা:

হ্যা, বর্ষা এলে কিছু বিড়ম্বনাও আমাদের পিছু নেয়। আমাদের অব্যবস্থাপনায় অতিবর্ষায় বন্যার আগমন ঘটে। অসংখ্য মানুষ ঘরদোর হারিয়ে অবর্ণনীয় কষ্টে ভোগে। পথঘাটের করুণ দশা হেতু বর্ষা যতই মুগ্ধ করুক, বৃষ্টির দিন ঘর থেকে বের হতে মন চায় না। কোনো দরকারী কাজে বাইরে থাকলে নিজেকে পানিবন্দি বলে মনে হয়। এর দায় সম্পূর্ণ আমাদের। আল্লাহ তা‘আলা সে কথা কুরআনে বলে দিয়েছেন: “মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে ফাসাদ প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদেরকে আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।” [সূরা আর-রূম, আয়াত: ৪১]

বাস্তবতাও তাই সাক্ষ্য দেয়। বাংলাদেশের দুই প্রধান নগরী ঢাকা ও চট্টগ্রামে বর্ষাকালে বিড়ম্বনার শেষ থাকে না। এ বছর বর্ষায় রাজধানীতে জলাবদ্ধতা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেয়। মাত্র দুদিনের ৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টিতে রাজধানীর বহু এলাকার অলিগলিতে তো বটেই, জলাবদ্ধতা দেখা দেয় প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কেও। দেশজুড়ে সমালোচনা হয় নবনির্বাচিত দুই নগরপিতার। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা রিপোর্টে ডেসকো, রাজউক, সিটি কর্পোরেশনসহ নগরের বিভিন্ন সরকারি বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেন। তাছাড়া নগরবিশেষজ্ঞরা বরাবরই বলে আসছেন, অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ, জলাধার বিলীন, অতিরিক্ত বর্জ্য, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা সংকট, খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। বলাবাহুল্য এর সবই মানবসৃষ্ট সমস্যা এবং মানুষেরই ব্যর্থতা। উন্নত দেশগুলোতে এসব ব্যবস্থাপনা উন্নত হওয়ায় তারা আল্লাহর দান বৃষ্টির নি‘আমত ভোগ করেন। তাদের জন্য বিড়ম্বনার কারণ খুব কমই হতে পারে।

বৃষ্টি মৌসুমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমল:

এই পৃথিবীর সৃজন, রাত-দিনের আবর্তন ও মৌসুমের পরিবর্তন মহান আল্লাহ তা‘আলার কুদরতের নিদর্শন। প্রত্যেক মৌসুমের পরিবর্তন দ্বারা উদ্দেশ্য কেবল বান্দাদের পরীক্ষা করা যে বান্দা সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহকে স্মরণ করে কি না এবং তাঁর নির্দেশিত পথে চলে কি না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে এরই দীক্ষা দিয়ে গিয়েছেন। তাই ঝড়-বৃষ্টির মৌসুমেও আমাদের প্রতি একই নির্দেশ আবর্তিত হবে। প্রত্যেক ঈমানদারের কর্তব্য জীবনের সব অনুষঙ্গে আল্লাহর রাসূলের আদর্শ তথা সুন্নতের অনুসরণ করা। আল্লাহর রাসূলের অনুসরণেই নিহিত রয়েছে মানবজাতির ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।” [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ২১]

পরিতাপের বিষয় ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যসমৃদ্ধ প্রকৃতির দেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমের বাংলাদেশে সুন্নতগুলো অবহেলিত রয়ে গেছে। খুব কম ব্যক্তিই আমলগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখেন।

বৃষ্টিকালের ৬ সুন্নত আমল:

(১) বৃষ্টির পানি স্পর্শ করা: বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা নামে রহমতের ধারা হয়ে। তাই সুন্নত হলো বৃষ্টির ছোঁয়া পেতে বস্ত্রাংশ মেলে ধরা। প্রখ্যাত সাহাবী আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: “আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে থাকাকালে একবার বৃষ্টি নামল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাঁর পরিধেয় প্রসারিত করলেন যাতে পানি তাঁকে স্পর্শ করতে পারে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কেন এমন করলেন? তিনি বললেন, কারণ তা তার মহান রবের কাছ থেকে মাত্রই এসেছে। [1]

(২) বৃষ্টির দোআ পড়া: আকাশ থেকে যখন বৃষ্টির ধারা নামে, একটি দো‘আ পড়া সুন্নত। মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বৃষ্টি হতে দেখলে বলতেন: “আল্লহুম্মা ছাইয়িবান নাফি‘আ। অর্থাৎ হে আল্লাহ, উপকারী বৃষ্টি আমাদের ওপর বর্ষণ করুন (যাতে ঢল, ধ্বস বা আযাবের মতো কোনো অমঙ্গল নিহিত নেই)। [2]

(৩) বৃষ্টি চলাকালে দো‘আ করা: বৃষ্টি চলাকালে দো‘আ কবুল হয় তাই এ সময় দো‘আর জন্য লুফে নেয়া সুন্নত। সাহল বিন সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “দুই সময়ের দো‘আ ফেরত দেওয়া হয় না কিংবা (তিনি বলেছেন,) খুব কমই ফেরত দেওয়া হয়: আযানের সময় দো‘আ এবং যুদ্ধক্ষেত্রের দো‘আ যখন একে অপরের মুখোমুখি হয়। অন্য বর্ণনা মতে, বৃষ্টির সময়ের দো‘আ।[3]

(৪) বৃষ্টি শেষে দো‘আ পড়া: বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর একটি দো‘আ পড়তে হয় যার মাধ্যমে ঈমানের পরিচয় দেয়া হয়। যায়েদ ইবন খালেদ জুহানী বলেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুদায়বিয়ায় রাতে বৃষ্টির পর আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। সালাত শেষে তিনি লোকজনের মুখোমুখি হলেন। তিনি বললেন, তোমরা কি জানো তোমাদের রব কী বলেছেন? তারা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেছেন, আমার বান্দাদের কেউ আমার প্রতি ঈমান নিয়ে আর কেউ কেউ আমাকে অস্বীকার করে প্রভাতে উপনীত হয়েছে। যে বলেছে, ‘মুতিরনা বিফাদলিল্লাহি ওয়ারাহমাতিহী’ তথা আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ায় আমরা বৃষ্টি প্রাপ্ত হয়েছি। ফলে সে আমার প্রতি ঈমান আর তারকার প্রতি কুফরী দেখিয়েছে। আর যে বলেছে, অমুক অমুক তারকার কারণে, সে আমার প্রতি অবিশ্বাসী আর তারকার প্রতি বিশ্বাসী।[4]

(৫) অতিবৃষ্টি বন্ধের জন্য দো‘আ পড়া: বৃষ্টি যেমন অনেক সুবিধে ডেকে আনে অতিবৃষ্টি তেমনি নানা অসুবিধের কারণ হয়। তাই অতিবৃষ্টি বন্ধেও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের আমল শিখিয়েছেন। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন: “জুমু‘আর দিন এক ব্যক্তি মিম্বরমুখী দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। লোকটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মুখে দণ্ডায়মান হয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! জীবজন্তু মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে, পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য বৃষ্টি প্রার্থনা করুন। তৎক্ষণাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু হাত সম্প্রসারিত করে দো‘আ করতে লাগলেন, হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করো! হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করো! হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করো! আনাস বলেন, আল্লাহর শপথ! তখন আকাশে আমরা কোনো জমাট বা বিচ্ছিন্ন আকারের মেঘ দেখিনি, (বৃষ্টির) অন্য কিছু (আলামতও) দেখি নি। আমাদের এবং সাল‘ পাহাড়ের মাঝে কোনো ঘর বা গৃহের আড়ালেও মেঘ ছিল না। তিনি বলেন, অতপর সাল‘ পাহাড়ের আড়াল থেকে পাখির পায়ের মতো মেঘের আবির্ভাব ঘটল। মেঘ যখন মধ্য গগণে এলো, ছড়িয়ে পড়ল। তারপর বৃষ্টি নামল। আনাস বলেন, আল্লাহর শপথ! পরবর্তী ছয় দিন যাবৎ আমরা সূর্য দেখি নি। সপ্তাহান্তে পরবর্তী জুমায় পুনরায় ওই ব্যক্তি যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবারত অবস্থায়, ওই ব্যক্তি আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ধন-সম্পদ সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পানিতে পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার প্রার্থনা করুন। আনাস বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই হাত উঁচিয়ে দো‘আ করলেন, ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা ‘আলাইনা’- অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাদের ওপর থেকে আশপাশের অঞ্চলে সরিয়ে দাও, পাহাড়-মরু, খাল-বিল ও বনাঞ্চলের দিকে সরিয়ে নাও! বর্ণনাকারী বলেন, তখনই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়, অতঃপর আমরা সালাত শেষে রোদের মধ্যে বের হই।[5]

(৬) ঝড়ের সময় দো‘আ: আল্লাহ তা‘আলা কখনো ঝড়-বজ্রপাত দান করেন। এর মাধ্যমে তিনি গাফেল বান্দাকে সতর্ক করেন, সচেতন বান্দাকে তাঁর প্রতি নিমগ্ন করেন। কখনো উদ্ধত জনপদবাসীকে এর মাধ্যমে শায়েস্তাও করেন। যেমন করেছিলেন পূর্বের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে। ঝড় এলে যেহেতু আমরা এর কারণ বুঝতে পারি না, তাই এ সময় আল্লাহর কাছে এর কল্যাণ কামনা করা এবং অকল্যাণ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা ঈমানদারের কর্তব্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয়তমা স্ত্রী আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “যখন প্রবল ঝড় বইতো রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে এ ঝড়ের কল্যাণ কামনা করছি। যে কল্যাণ রয়েছে এর মধ্যে এবং যে কল্যাণ পাঠানো হয়েছে এর সাথে। আর তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এ ঝড়ের অকল্যাণ হতে। যে অকল্যাণ এর মধ্যে রয়েছে এবং যে অকল্যাণ দিয়ে একে পাঠানো হয়েছে।’ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, ‘যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝড়ো বাতাস বইত; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেহারায় দুশ্চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এ অবস্থায় এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দো‘আ পড়তে থাকতেন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আঊজু বিকা মিন শার্রিহা-ওয়া শার্রি মা-ফিহা-ওয়া শার্রি মা-উরসিলাত বিহি।’ অতঃপর যখন বৃষ্টি হতো, তখন তিনি শান্ত হতেন।’ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা আরো বলেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলাম, লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে, আর আপনি এতে পেরেশান হয়ে থাকেন?’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে তা আমার উম্মতের ওপর আযাব হিসেবে পতিত হয় কি না, কেননা পূর্ববর্তী উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে আযাব পতিত হয়েছিল। যেমন কুরআনে এসেছে, “অতঃপর যখন তারা তাদের উপত্যকার দিকে মেঘমালা দেখল তখন তারা বলল, এ মেঘমালা আমাদেরকে বৃষ্টি দেবে।” [সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ২৪][6]

সমাপ্ত

[1] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৯৮
[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০৩২
[3] আবূ দাঊদ, হাদীস নং ২৫৪০। শাইখ আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। দেখুন: সিলসিলা সহীহা: ১৪৬৯
[4] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৪৬; মুসলিম, হাদীস নং ১৫
[5] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০১৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮৯৭
[6] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮০৯৯

উৎসঃ islamhouse.com/bn

Print Friendly, PDF & Email
Banner Ad


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

1 COMMENT

আপনার মন্তব্য লিখুন